সিফাত হত্যা মামলায় চিকিৎসকসহ চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী ওয়াহিদা সিফাত হত্যা মামলার অভিযোগপত্র গঠন করা হয়েছে। এতে ময়নাতদন্তকারী প্রথম চিকিৎকসহ চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয়া হয়েছে।
অভিযুক্তরা হলেন, নিহত সিফাতের স্বামী মো. আসিফ পিসলি, সিফাতের শ্বশুর হোসেন মোহাম্মদ রমজান, শাশুড়ি নাজমুন নাহার নজলী এবং প্রথম ময়নাতদন্তারী চিকিৎসক জোবাইদুর রহমান।
মামলায় চিকিৎসকের নাম উল্লেখ না থাকলেও আসামীদের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে ওই চিকিৎসক ময়নাতদন্তে আত্মহত্যার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু দ্বিতীয় ময়না তদন্তে সিফাতকে হত্যা করা হয়েছে এই প্রতিবেদন দেয়া হয়। এই হত্যাকাণ্ডে সঠিক প্রতিবেদন না দিয়ে আসামিদের পক্ষ নেয়ায় প্রথম ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসককে অভিযোগপত্রে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
বুধবার দুপুরে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডির সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আহম্মেদ আলী চারজনের বিরুদ্ধে দীর্ঘ ১১ মাস পর মহানগর মূখ্য আদালতে এ অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডির সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আহম্মেদ আলী জানান, দীর্ঘদিন তদন্ত শেষে প্রমাণ মিলেছে সিফাত আত্মহত্যা করেনি। তাকে হত্যা করা হয়েছে। আঘাত জনিত কারণে সিফাতের মৃত্যু হয়েছে।
তিনি আরো জানান, সিফাতের মরদেহের প্রথম ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক আত্মহত্যার ভুল প্রতিবেদন দিয়েছিলেন, তাই অভিযোগপত্রে ওই চিকিৎসকের নামও উল্লেখ করা হয়েছে।
চতুর্থ দফা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পরিবর্তন হয়ে এ অভিযোগপত্র দেয়া হয়েছে। প্রথম দফায় মামলার তদন্ত পুলিশ, দ্বিতীয় দফা গোয়েন্দা পুলিশ ছিল। গোয়েন্দা পুলিশের কোনো অগ্রগতি না পাওয়ায় শেষ পর্যন্ত গত ১৭ আগস্ট মামলা তদন্তভার গড়ায় সিআইডিতে।
মামলায় ত্রুটিপূর্ণ তদন্ত এবং আসামিদের সঙ্গে যোগসাজস থাকায় রাজশাহী সিআইডির তদন্তকারী কর্মকর্তা এনামুল হককে শোকজ করে পুলিশ হেড কোয়ার্টার। এনামুলকে বদলী করা হয় পঞ্চগড়ে।
মামলার তদন্তভার থেকে সিআইডি কর্মকর্তা এনামুল হককে সরিয়ে তদন্তভার দেয়া হয় বর্তমান তদন্ত কর্মকর্তা আহমেদ আলীকে।
এর আগে ২০১৫ সালের ২৯ মার্চ সন্ধ্যায় রাজশাহী মহানগরীর মহিষবাথান এলাকায় অ্যাডভোকেট হোসেন মোহাম্মদ রমজানের বাড়িতে রহস্যজনক মৃত্যু হয় গৃহবধূ ওয়াহিদা সিফাতের। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন ছিল। প্রথমে সিফাত আত্মহত্যা করেছে বলে তার শশুরবাড়ির লোকজন দাবি করলেও পরে ২য় দফার ময়নাতদন্তে হত্যাকাণ্ড প্রমাণিত হয়।
এ ঘটনায় গত বছরের ২ এপ্রিল মহানগরীর রাজপাড়া থানায় সিফাতের চাচা মিজানুর রহমান খন্দকার স্বামী, শ্বশুর ও শাশুড়ির নাম উল্লেখ করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধনী/০৩) এর ১১(ক)/৩০ ধারায় যৌতুকের দাবিতে হত্যা ও সহায়তা করার অপরাধে একটি মামলা দায়ের করা হয়।
শাহরিয়ার অনতু/এফএ/আরআইপি