ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

সাগরে লঘুচাপ

‘৯ লাখ টাকার বাজার নিয়ে ছয় ট্রলারে পেয়েছি আড়াই লাখ টাকার মাছ’

আসাদুজ্জামান মিরাজ | প্রকাশিত: ০১:৪৭ পিএম, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩

উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে। তাই নিরাপদ আশ্রয়ে তীরে ফিরছে মাছ ধরার কয়েকশ ট্রলার। সাগরে যেতে না যেতেই সাগর উত্তাল হওয়ায় অল্প মাছ নিয়েই ফিরতে হচ্ছে জেলেদের। তাই লোকসানের মুখে পড়ছেন তারা।

পটুয়াখালীর সহকারী আবহাওয়া পর্যবেক্ষক কাজী কেরামত হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, লঘুচাপের কারণে সমুদ্র উত্তাল। সোমবার বেলা ১২টা থেকে মঙ্গলবার সকাল ১২টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় পটুয়াখালীতে ৫০.৫ মিলিমিটার এবং কলাপাড়ায় ১৪১ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। লঘুচাপটি দেশের দক্ষিণাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত আছে। মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর মোটামুটি সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরের অন্যত্র মাঝারি অবস্থায় আছে। জেলার কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টি হতে পারে।

তিনি আরও বলেন, পটুয়াখালীর বিভিন্ন অঞ্চলের ওপর দিয়ে দক্ষিণ বা দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দরগুলোকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। তাই পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এলাকায় অবস্থানরত সকল মাছ ধরার ট্রলার ও নৌযানকে সাবধানে থেকে চলাচল করতে বলা হয়েছে।

‘৯ লাখ টাকার বাজার নিয়ে ছয় ট্রলারে পেয়েছি আড়াই লাখ টাকার মাছ’

মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) পটুয়াখালীর বড় দুটি মৎস্য বন্দর আলীপুর ও মহিপুর ঘাটে ঘুরে দেখা যায়, দেশের বিভিন্ন স্থানের জেলেরা আশ্রয় নিচ্ছে এখানে। জেলেদের পদচারণায় মুখর থাকলেও কমেছে মাছ বিক্রির হাঁকডাক।

জেলেদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, চারদিন আগেও সমুদ্র উত্তাল ছিল। সোমবার থেকে আবারো আবহাওয়া খারাপ হতে থাকে। এর আগে ২৩ জুলাই ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা কাটানোর পর এ পর্যন্ত ৮-১০ বার আবহাওয়া খারাপ হয়। ফলে অল্প মাছ নিয়েই ফিরতে হচ্ছে জেলেদের। খরচ বাড়ায় একদিকে লোকসানের মুখে পড়ছেন তারা অন্যদিকে হুমকির মুখে পড়ছে মৎস্য পেশা।

‘৯ লাখ টাকার বাজার নিয়ে ছয় ট্রলারে পেয়েছি আড়াই লাখ টাকার মাছ’

এফভি আব্দুল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহমত জাগো নিউজকে বলেন, তিন দিন আগে আমরা বরগুনার পাথরঘাটা থেকে মাছ ধরতে যাই। সোমবার থেকে আবহাওয়া খারাপ হওয়ায় সকালে আলিপুর বন্দরে এসে পৌঁছাই। আড়াই লাখ টাকার বাজার নিয়ে সমুদ্রে যাই। কিন্তু দেড় লাখ টাকার মাছ ধরেই ফিরতে হয়েছে। পুরো বছরে আমরা ১০ বার সমুদ্রে গেলে একবার লাভ করতে পারি। বাকি ৯ বার আমাদের লস হচ্ছে।

এফভি মোবারক ট্রলারের মাঝি আ. খালেক হাওলাদার জাগো নিউজকে বলেন, আমরা যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সমুদ্র উত্তাল হয়। অনেক চেষ্টা করেও আমরা থাকতে পারিনি। তীরে চলে আসতে হয়েছে। মাছ তেমন পাইনি। সরকারের কাছে বিনা সুদে ঋণের আবেদন করছি। না হয় আমাদের বেঁচে থাকা কষ্টকর।

‘৯ লাখ টাকার বাজার নিয়ে ছয় ট্রলারে পেয়েছি আড়াই লাখ টাকার মাছ’

আলিপুর মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ভাই ভাই ফিসের পরিচালক মো. মিজানুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, চারদিন আগে আমাদের ছয়টি ট্রলার ৯ লাখ টাকার বাজার নিয়ে সমুদ্রে গেছে। সোমবার থেকে সবাই ফিরছে। তবে ছয়টি ট্রলারে যে মাছ পেয়েছি তার দাম হবে সর্বোচ্চ আড়াই লাখ টাকা। প্রতি সপ্তাহে এভাবে আবহাওয়া খারাপ হচ্ছে আর আমাদের লোকসান গুনতে হচ্ছে।

কুয়াকাটা-আলীপুর মৎস্য আড়ত মালিক সমিতির সভাপতি আনসার উদ্দিন মোল্লা জাগো নিউজকে বলেন, সমুদ্র উত্তাল হওয়ায় পটুয়াখালীসহ বিভিন্ন স্থানের জেলেরা এই বন্দরে আশ্রয় নিচ্ছে। বছরে বেশ কয়েকবার বৈরী আবহাওয়ার কারণে আমরা মৎস্য পেশা নিয়ে হুমকিতে। তাই জেলেদের সহযোগিতায় সরকারের কাছে ক্ষুদ্র ঋণ প্রকল্পের দাবি জানাচ্ছি।

এসজে/জেআইএম