ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

নামজারিতে ঘুস কত নিতে হবে নির্ধারণ করে দিলেন এসিল্যান্ড

জেলা প্রতিনিধি | পিরোজপুর | প্রকাশিত: ০৭:১৯ পিএম, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩

নামজারিতে ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তারা কত টাকা ঘুস নেবেন তা নির্ধারণ করে দিচ্ছেন সহকারী কমিশনার (ভূমি)। সম্প্রতি এ-সংক্রান্ত একটি অডিও ফাঁস হয়েছে। এমনই ঘটনা ঘটেছে পিরোজপুরের নাজিরপুরে।

নাজিরপুরের এসিল্যান্ড মাসুদুর রহমানের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় তদন্ত চলমান বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক জাহেদুর রহমান।

নাজিরপুর উপজেলার ইউনিয়ন পর্যায়ের ভূমি সহকারী কর্মকর্তাদের নিয়ে গত জুলাইয়ে বৈঠক করেন এসিল্যান্ড মাসুদুর রহমান। ওই বৈঠকে কথোপকথনের অডিওটি ফাঁস হয়েছে।

অডিওতে ভূমি সহকারী কর্মকর্তাদের উদ্দেশে এসিল্যান্ড মাসুদুর রহমানকে বলতে শোনা যায়, ‘এখন আমাকে পরিষ্কার করে একটি বিষয় আপনাদের অবগত করতে হবে, আমি ইউএনও স্যারের চাপে আছি। ধরেন, আমার অফিস থেকে নামজারিতে অতিরিক্ত আদায় বন্ধ করা হলো। আপনারা পার কেসে যে ডিল করেন, এটা আপনারা নিশ্চিত করবেন কীভাবে যে আপনারা টাকা নিচ্ছেন না? আপনাদের মতামত শুনি। আপনারা কী চান? কত করে নেওয়া হোক? খোলামেলা আলোচনা করেন, মতামত দেন, সবাই এখানে উপস্থিত আছেন। যদি বলেন স্যার, আপনি যদি না করে দেন তাহলে নিশ্চিত করবো আমরা কোনো টাকা-পয়সার লেনদেন করবো না। কিন্তু বাস্তবে এটা কখনো হবে না। আপনারা মাঠপর্যায়ে কাজ করেন। কাজ করতে গেলে স্বাভাবিকভাবেই...মানে খরচা আছে এবং বিভিন্ন ধরনের বিষয় আছে। যেটার কারণে এটা নিতে হচ্ছে বা নিচ্ছেন। এটা কমবেশি সবাই নিচ্ছে। কিন্তু এটা যে এই অফিসে দেওয়া হইতেছে বিধায় আপনারা এটাকে বড় আকারে একটা কিছু করবেন। এই ধরনের অভিযোগ আসলে আমার জন্য বিব্রতকর। আমার প্রস্তাব হচ্ছে পার নামজারিতে আমার অফিসে চার হাজার করে দেবেন। আপনারা অফিসে দেড় হাজার করে রাখবেন।’

এ বিষয়ে এসিল্যান্ড মাসুদুর রহমান বলেন, ‘কোনো একটি চক্রান্তের শিকার হয়েছি আমি। খাসজমি উদ্ধারসহ কিছু কার্যক্রম বন্ধ ছিল। সেই কার্যক্রমগুলো শুরু করতে গিয়েই বিভিন্ন ধরনের রোষানলের শিকার হচ্ছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘ওপর মহল থেকে নির্দেশনা যেভাবে আসে আমি আসলে সেভাবে কাজ করি। কিন্তু কখনো কোনো আর্থিক বিষয় নিয়ে আমার সঙ্গে কারও কথা হয়নি। অডিওতে এখানে বিভিন্ন ধরনের কথাবার্তা আছে। এটা কোন জায়গায়, কোন প্রেক্ষিতে করা হয়েছে, এটাও আমি পুরোপুরি বুঝতে পারছি না।’

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জমি খারিজ বা নামজারি করতে সরকার নির্ধারিত খরচ এক হাজার ১৭০ টাকা। নামজারির আবেদনের জন্য কোর্ট ফি ২০ টাকা, নোটিশ জারি ফি ৫০ টাকা, রেকর্ড সংশোধন বা হালকরণ ফি এক হাজার টাকা ও প্রতি কপি মিউটেশন খতিয়ান সরবরাহ বাবদ ১০০ টাকার বাইরে আর কোনো খরচ নেই। অথচ ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, নাজিরপুরের বিভিন্ন ইউনিয়ন ভূমি অফিসে দলিলভেদে নেওয়া হয় ৫-১৮ হাজার টাকা।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ডা. সঞ্জীব দাস বলেন, বিষয়টি আমরা জেনেছি। অভিযোগটি খুব গুরুত্ব সহকারে নেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসক একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। তদন্তে যদি ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায় তাহলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পিরোজপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহেদুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। তদন্তের পরে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এসআর/এমএস