এডিসি হারুন কলিগ মাত্র, তার সঙ্গে সানজিদার বিয়ে হয়নি: বড় বোন
পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) হারুন অর রশীদের সঙ্গে ডিএমপির অপরাধ বিভাগের এডিসি সানজিদা আফরিন নিপার বিয়ের কথা অস্বীকার করেছেন সানজিদার বড় বোন হোসনে আরা কামনা।
শুক্রবার (১৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে তিনি জাগো নিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
হোসনে আরা বলেন, ‘চলতি বছরের শুরুর দিকে সানজিদা ঢাকায় বদলি হয়। সাম্প্রতিক ঘটনায় এডিসি হারুনের সঙ্গে সানজিদার আগে বিয়ে হয়েছিল, পরে তাদের মধ্যে ছাড়াছাড়ি হয়ে গেছে এমন গুঞ্জন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভেসে বেড়াচ্ছে। বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। সানজিদার বিয়ে হয়েছে রাষ্ট্রপতির সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) আজিজুল হক মামুনের সঙ্গে। এডিসি হারুন তার কলিগ মাত্র। তার সঙ্গে সানজিদার বিয়ে হয়নি। বিয়ে না হলে তো ছাড়াছাড়ির প্রশ্নও নেই।’
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এ অপপ্রচারে তারা বিব্রতবোধ করছেন বলেও জানান হোসনে আরা।
আরও পড়ুন: হারুনের পর এডিসি সানজিদাকে রংপুরে বদলির খবর গুজব
সানজিদার পারিবারিক সূত্র জানায়, টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার নগদা শিমলা ইউনিয়নের বিলডগা গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা মৃত এম হোসেন আলীর মেয়ে সানজিদা আফরিন নিপা। তার বাবা প্রাথমিক বিদ্যালয় ও পরবর্তী সময়ে উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেছেন। পাশাপাশি তিনি উপজেলার নগদা শিমলা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাতবারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান ছিলেন।
মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক হোসেন আলী দীর্ঘদিন গোপালপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বও পালন করেছেন। তার চার মেয়ের মধ্যে সানজিদা আফরিন নিপা তৃতীয়। বড় মেয়ে হোসনে আরা কামনা সূতী ভি এম সরকারি পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। দ্বিতীয় মেয়ে তানজিনা আফরিন স্মৃতি একজন চিকিৎসক। ছোট মেয়ে সাদিয়া আফরিন বন্যা বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী পরিচালক।
সানজিদা ৩৩তম বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে পুলিশ বাহিনীতে যোগ দেন। ২০১৬ সালের ৫ মে থেকে ২০২১ সালের ৭ জানুয়ারি পর্যন্ত পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চে ছিলেন তিনি। এরপর ২০২১ সালের ৬ মে থেকে ২০২২ সালের ৭ নভেম্বর পর্যন্ত গাজীপুর সদর সার্কেলে এএসপি হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ২০২২ সালের ১৩ নভেম্বর ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশে (ডিএমপি) যোগদান করেন সানজিদা।
আরও পড়ুন: আমার স্বামীই এডিসি হারুন স্যারকে আগে মারধর করেন: সানজিদা
আজিজুল হক মামুন আর সানজিদার বিয়ের বিষয়ে নগদা শিমলা ইউনিয়নের নিকাহ রেজিস্ট্রার (বিয়ের কাজি) শামছুল হক বলেন, ২০১৭ সালের ১০ মার্চ পারিবারিকভাবে অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তাদের বিয়ে হয়।
শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) রাতে শাহবাগ থানায় ছাত্রলীগ নেতাদের নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে এডিসি হারুনের বিরুদ্ধে। এর জেরে ওইদিন রাতেই শাহবাগ থানার সামনে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ভিড় করেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও পুলিশের কর্মকর্তারা থানায় গিয়ে মধ্যরাতে মীমাংসা করেন। তবে ঘটনাটি আলোচনার জন্ম দেয়।
পরের দিন (১০ সেপ্টেম্বর) এডিসি হারুনকে সাময়িক বরখাস্ত করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের পুলিশ-১ শাখা থেকে।
এ অবস্থায় ১২ সেপ্টেম্বর বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেন সানজিদা। তিনি দাবি করেন, রাষ্ট্রপতির সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) আজিজুল হক মামুনই এডিসি হারুনকে আগে মারধর করেছেন।
আরিফ উর রহমান টগর/এসআর/এএসএম