নীলফামারী
বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত সেতুতে সাঁকো, দুর্ভোগ চরমে
নীলফামারীতে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া প্রায় ১০টি সেতু সংস্কার বা পুনর্নির্মাণ না হওয়ায় দুর্ভোগে পড়েছে দুই লাখ মানুষ। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ বিভিন্নস্থানে নতুন সেতু নির্মাণ করলেও নজর নেই ভাঙা সেতুগুলোর দিকে। বাধ্য হয়ে ঝুঁকিপূর্ণ এসব সেতুতেই চলাচল করছে হচ্ছে এলাকাবাসীর।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পাঁচ বছর আগে বন্যার পানির তোড়ে ভেঙে গেছে জেলার ডিমলা উপজেলায় পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়নের তিনটি সেতু। পাঁচ বছর ধরে স্থানীয়দের উদ্যোগে ভাঙা সেতুতে বাঁশের সাঁকো তৈরি করেই জেলা-উপজেলা সদরসহ বিভিন্ন জায়গায় চলাচল করছে প্রায় ৩০ হাজার মানুষ। কৃষিপণ্য পরিবহন, অসুস্থ রোগীদের জন্য অ্যাম্বুলেন্স সেবা ও শিক্ষার্থীদের চলাচলে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়তে হয় এই এলাকার মানুষের।
এছাড়া ডিমলার রূপাহারা এলাকায় একটি সেতু ভেঙে পড়ে আছে এক যুগ থেকে আর একই উপজেলার শিংপাড়া এলাকার সেতু ভেঙ্গেছে তিনবছর আগে। ডেমার উপজেলার হংরাজ এলাকার একটি বক্সকালর্ভাট ভেঙেছে পাঁচ বছর হলো। আর নির্মাণের ৩ মাসেই ভেঙেছে জলঢাকার ডাউয়াবাড়ী এলাকার একটি কালভার্ট। সেতুগুলো ভেঙে পড়ে থাকায় দুর্ভোগের শেষ নেই এসব এলাকাবাসীর। তাদের দাবি দ্রুত সংস্কার করা হোক ভাঙা সেতুগুলো ।
আরও পড়ুন: খসে পড়েছে সেতুর পাটাতনের পলেস্তারা, বড় দুর্ঘটনার আশঙ্কা
ডিমলা পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ খান জানান, আমাদের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের একটি ভাঙা সেতু দিয়ে তিন ওয়ার্ডের প্রায় ১০ হাজার মানুষ চলাচল করে। এই অঞ্চলের মানুষগুলো দুর্বিষহ জীবনযাপন করে। কয়েকটি স্কুল আছে সেখানকার ছাত্রছাত্রীরা স্কুলে যেতে পারে না। আবাদ করেও কৃষকরা ন্যায্যমূল্য পায় না। সেতুটি নির্মাণের জোর দাবি জানাই।
রুপাহার এলাকার বাসিন্দা সাগর মিয়া বলেন, প্রায় ১০ বছর আগে আমাদের রুপাহারের এই সেতুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সেতুর জন্য আমাদের যাতায়াতে খুব কষ্ট হয়। গাড়ি ঘোড়া চলে না, ভ্যানও যায় না। অল্প একটু রাস্তার জন্য প্রায় দুই কিলোমিটার ঘুরে যেতে হয়। আমাদের দাবি সেতুটা যত দ্রুত সম্ভব সংস্কার করা হোক।
জলঢাকার ডাউয়াবাড়ি এলাকার বাসিন্দা মোকছেদুর রহমান বলেন, তিন বছর আগে আমাদের এলাকার সেতুটা ভেঙে গেছে। এতে আমাদের ৫-৭টি গ্রামের মানুষ দুর্ভোগে আছে। এক প্রকার অবহেলিত হয়ে গেছি আমরা। এ সেতুর জন্য কৃষি পণ্য আনা-নেওয়া ও বেচা-কেনার অসুবিধা হয়ে যায়। বাচ্চারা স্কুলে যায় তাতেও সমস্যা। আর মানুষ অসুস্থ হলে তো অবস্থা খারাপ হয়ে যায়। বিশেষ করে ডেলিভারি সমস্যায় খুব কষ্ট পোহাতে হয়।
আরও পড়ুন: ৫ বছর পর ফের ভাঙলো বেইলি ব্রিজ, বালুভর্তি ট্রাক পানিতে
এ বিষয়ে নীলফামারী স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ফিরোজ হাসান জাগো নিউজকে বলেন, সেতুগুলোর বিষয়ে আমরা অনেক আগেই সদর দপ্তরে তথ্য পাঠিয়েছি। সেখানে এগুলোর তথ্য আছে। বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে যতটুকু পারি আমরা করতেছি। এগুলো তো একটা ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। কিছু কিছু প্রকল্প নেওয়া হয়েছে, কিছু কিছু প্রক্রিয়াধীন। একটু সময় লাগবে, আমরা ধারাবাহিকভাবেই ব্যবস্থা নিচ্ছি।
রাজু আহম্মেদ/জেএস/এমএস