ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

অভাব ঘোচাতে সৌদি গিয়ে লাশ হয়ে ফিরলেন সুফিয়া

জেলা প্রতিনিধি | হবিগঞ্জ | প্রকাশিত: ০৫:৩০ পিএম, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩

সংসারের অভাব ঘোচাতে সৌদি আরবে গিয়েছিলেন হবিগঞ্জের মাধবপুরের মেয়ে সুফিয়া খাতুন (৪৫)। আশা ছিল সুখের মুখ দেখবেন। তবে সেইদিন আর এলো না সুফিয়ার।

বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সুফিয়ার কফিনবন্দি মরদেহ উপজেলা সদরের পূর্ব মাধবপুর এলাকায় গ্রামের বাড়িতে পৌঁছে। এসময় সেখানে হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়।

সুফিয়া খাতুন ওই এলাকার মৃত জামাল মিয়ার স্ত্রী। মাকে হারিয়ে অসহায় হয়ে পড়েছেন তার পাঁচ সন্তান।

স্থানীয় ও পরিবার সূত্র জানায়, পূর্ব মাধবপুর এলাকার তিতন আলী সরদারের বাড়িতে দীর্ঘ দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে সুফিয়া খাতুন ও তার স্বামী জামাল মিয়া বসবাস করতেন। তাদের সংসারে পাঁচ ছেলেমেয়ে রয়েছে। প্রায় ছয় বছর আগে মারা যান জামাল মিয়া। এ অবস্থায় সন্তানদের নিয়ে অথৈ সাগরে পড়েন সুফিয়া। সংসারে সচ্ছলতা আনতে গৃহকর্মী হিসেবে সৌদি আরবে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। অবশেষে বসতঘর বিক্রি করে গত রমজানে সৌদি যান। কিন্তু সংসারে অভাব ঘোচানো তো দূরের কথা, নিজেই লাশ হয়ে ফিরে এলেন সন্তানদের কাছে।

সোফিয়া খাতুনের বড় ছেলে জাকির হোসেন জানান, বাবা মারা যাওয়ার পর তারা পাঁচ ভাইবোনকে নিয়ে অনেকটা বেকায়দায় পড়ে যান তাদের মা। সংসারে অভাব-অনটন মারাত্মকভাবে দেখা দেয়। পরিবারে সচ্ছলতা আনতে তার মা সৌদি আরবে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। উপজেলার সুন্দাদিল গ্রামের দালাল ফিরোজ মিয়া ও মালু মিয়ার মাধ্যমে গত রমজানে সৌদি আরব যান। সেখানে যাওয়ার পর সুফিয়ার ওপর বিভিন্নভাবে নির্যাতন শুরু করেন তার গৃহকর্তা। মৃত্যুর আগে তাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে মোবাইলফোনে অনেক আকুতি জানান তিনি।

জাকির হোসেন বলেন, ‘চার মাস আগে আমরা শুনতে পাই মা সৌদি আরবে মারা গেছেন। পরে মরদেহ দেশে ফিরিয়ে আনতে দালালের সঙ্গে আমরা যোগাযোগ করি। কিন্তু দালাল চক্র আমাদের কোনো সহযোগিতা করেনি। বৃহস্পতিবার সকালে মায়ের মরদেহ দেশে পৌঁছায়।’

এ বিষয়ে যোগাযোগের চেষ্টা করেও দালাল ফিরোজ মিয়া ও মালু মিয়ার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

মাধবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রকিবুল ইসলাম খান বলেন, সুফিয়ার মরদেহ দেশে আসার ঘটনাটি তার ছেলে জানিয়েছেন।

এ বিষয়ে মাধবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মনজুর আহসান বলেন, পরিবারটি যাতে আর্থিক অনুদান ও ক্ষতিপূরণ পায় সেজন্য সরকারিভাবে সবধরনের সহযোগিতা করা হবে।

সৈয়দ এখলছুর রহমান খোকন/এসআর/এএসএম