ঘুন ধরছে বাঁশ গবেষণা কেন্দ্রে
জনবলের অভাবে থমকে আছে নীলফামারীর ডোমারের আঞ্চলিক বাঁশ গবেষণা ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের কার্যক্রম। গবেষণা কর্মকর্তাসহ কেন্দ্রে ২৬ জন থাকার কথা থাকলেও রয়েছে ১২ জন। এতে কাঙ্ক্ষিত গবেষণা হচ্ছে না বলে সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ।
সূত্র জানায়, ২০১৬ সালে ১৭ কোটি ২২ লাখ ৫১ হাজার টাকা ব্যয়ে নীলফামারীর ডোমারে দুই একর জমির ওপর নির্মিত হয় আঞ্চলিক বাঁশ গবেষণা ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। প্রতিষ্ঠার পর থেকে রংপুর বিভাগের আট জেলায় আধুনিক পদ্ধতিতে বাঁশ চাষের ওপর এক হাজার ৮০০ মানুষকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। সেজন্য ১০টি প্রদর্শনী প্লটের মধ্যে আটটি তৈরি হয়। ১৯ গবেষণা কার্যক্রমের মধ্যে ১৩টি সম্পন্ন হয়েছে বলে কর্তৃপক্ষের দাবি।
আরও পড়ুন: কাজে আসছে না আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব ও গবেষণা কেন্দ্র
সূত্র জানায়, কেন্দ্রে তিনজন গবেষণা কর্মকর্তা ও চারজন সহকারী গবেষণা কর্মকর্তা থাকার কথা থাকলেও বর্তমানে আছেন তিনজন গবেষক। সব মিলিয়ে ২৬ জন জনবল থাকার কথা থাকলেও বর্তমানে আছে মাত্র ১২ জন।
দীর্ঘদিন পড়ে থাকায় মাকড়সার জাল জমেছে আধুনিক বাঁশ প্রক্রিয়াজাত করার কোটি টাকার মেশিনে। কর্মব্যস্ত না থাকায় ব্যাহত হচ্ছে কেন্দ্রের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য।
কেন্দ্র থেকে বাঁশের চারা সংগ্রহ করে বাগান করেছেন নীলফামারীর পলাশবাড়ি সরকারি কলেজের শিক্ষক পঙ্কজ রায়। তবে বাঁশের আধুনিক ব্যবহার না থাকায় বাণিজ্যিকভাবে বাঁশ বিক্রি নিয়ে চিন্তিত তিনি।
পঙ্কজ রায় জাগো নিউজকে বলেন, এখানে যদি দক্ষ জনবল নিয়োগ দিয়ে মেশিনগুলো চালু করা যায় তাহলে আমরা যারা বাঁশ চাষ করেছি তারা উপকৃত হবো। আমাদের বাঁশগুলো প্রক্রিয়াকরণ হলে বাণিজ্যিকভাবে বাঁশের তৈরি জিনিসের চাহিদা বাড়বে।
হরিপ্রসাদ নামের আরেক বাঁশচাষি জানান, ৫০ শতক জমিতে বাঁশ চাষ করেছি। গবেষণা কেন্দ্র থেকে বলা হয়েছে পাঁচ বছর পর বিক্রি করা যাবে। কিন্তু তিন বছরের মাথায় বাঁশ মোটামুটি হয়েছে। কিন্তু বাঁশের ব্যবহার তো বাড়েনি।
আরও পড়ুন: রাজশাহী অঞ্চলের মৃত্তিকা গবেষণা কেন্দ্র
এদিকে গবেষণা কেন্দ্রে দুই বছর আগে মো. শাহাজান নামে একজন টেকনিশিয়ান নিয়োগ দেওয়া হলেও কাজ না থাকায় অলস সময় কাটাচ্ছেন তিনি। কথা হয় শাহাজানের সঙ্গে।
তিনি জানান, আমি আসলে এ কাজের জন্য এক্সপার্ট না। আমি অন্য কাজ করেছি বন বিভাগে। দুই বছর থেকে এখানে আছি। কোনো কাজ নেই।
কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা প্রকল্প পরিচালক আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, মেশিনগুলো বসানোর প্রকল্পের একেবারে শেষের দিকে অনুমোদন দেওয়া হয়। আশা করছি শিগগির আমরা গবেষণায় ফিরতে পারবো।
কেন্দ্রের উপ-পরিচালক ড. রফিকুল হায়দার বলেন, আমাদের তিন-চারজন টেকনিশিয়ান হলেই চলে। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই টেকনিশিয়ান পাবো। সব মিলিয়ে টেকনিশিয়ান নিয়োগ দিয়ে মেশিন চালুসহ দ্রুত সব সমস্যার সমাধান করা হবে।
রাজু আহম্মেদ/আরএইচ/এএইচ/এএসএম