ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

জয়পুরহাটে সাড়া ফেলেছে মাছের শিঙাড়া

জেলা প্রতিনিধি | জয়পুরহাট | প্রকাশিত: ০৪:৪৮ পিএম, ৩১ আগস্ট ২০২৩

শিঙাড়া পছন্দ করেন না এমন মানুষ খুব কমই পাওয়া যায়। সাধারণত রাস্তার পাশে বা হাট-বাজারের দোকানে আলু, বিভিন্ন সবজি বা খাসি-গরুর কলিজার শিঙাড়া পাওয়া যায়। তবে জয়পুরহাটে ব্যতিক্রমী এক দোকান খুলেছেন অনুকূল চন্দ্র সরকার নামের এক ব্যক্তি। তিনি তৈরি করছেন মাছের শিঙাড়া। এর পাশাপাশি তার দোকানে মাছ দিয়ে তৈরি হচ্ছে সুস্বাদু ‘ফিশবল’, যা ব্যাপকভাবে সাড়া ফেলেছে জেলাজুড়ে। প্রতিদিন তার দোকানে মাছের শিঙাড়া ও ফিশবল খেতে ভিড় করছেন ভোজনরসিক মানুষরা।

জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার রুকিন্দীপুর ইউনিয়নের জালালপুর গ্রামের বাসিন্দা অনুকূল চন্দ্র সরকার। তিনি স্থানীয় একটি কলেজে অফিস সহকারী পদে চাকরি করেন। পাশাপাশি সংসারের সচ্ছলতা ফেরাতে প্রায় দেড় দশক ধরে একই ইউনিয়নের বতটলী বাজারে একটি দোকানে চা ও পেঁয়াজু বিক্রি করতেন। ৫-৬ মাস আগে বেসরকারি সংস্থা ‘এসো’র পরামর্শে প্রশিক্ষণ নিয়ে শুরু করেন মাছের শিঙাড়া ও ফিশবল বিক্রি।

আরও পড়ুন: স্বাদে সেরা নওগাঁর প্যারা সন্দেশ

জয়পুরহাটে সাড়া ফেলেছে মাছের শিঙাড়া

প্রথম দিকে ৫০-৬০টি করে এগুলো তৈরি করতেন। ভোজনরসিকদের পছন্দ হওয়ায় মুখরোচক এ খাবারটির চাহিদা বেড়ে গেছে। এখন প্রতিদিন ৫০০-৭০০ পিস শিঙাড়া ও ৩০০ পিস ফিশবল বিক্রি হচ্ছে অনুকূল চন্দ্রের দোকানে। এসব খাবারে তার প্রতিদিন প্রয়োজন হয় ১০-১২ কেজি পাঙাশ, তেলাপিয়া, রুই ও সিলভার কার্পসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ।

সম্প্রতি দেখা যায়, শিঙাড়া তৈরির আগে থেকেই বিভিন্ন এলাকা থেকে এসে ভোজনরসিক মানুষ ভিড় করছেন অনুকূলের দোকানে। বাড়িতে তার স্ত্রী গোলাপী রানীসহ কয়েকজন মাছ সেদ্ধ করে কাঁটা বেছে প্রক্রিয়াজাত করেন। পরে সেগুলো দোকানে এনে তেলে ভেজে শিঙাড়া ও ফিশবল তৈরি করা হয়। স্ত্রীর পাশাপাশি তার এ কাজে সহযোগিতা করছেন দুই সন্তান। বিকেল ৪টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত চলে বেচাকেনা।

জয়পুরহাটে সাড়া ফেলেছে মাছের শিঙাড়া

আক্কেলপুর পৌর এলাকার হাজীপাড়া মহল্লার আব্দুর রহিম বাদল জাগো নিউজকে বলেন, ‘এক ছোট ভাইয়ের কাছ থেকে জানতে পারলাম বটতলী বাজারে মাছের শিঙাড়া ও ফিশবল পাওয়া যায়। আগে তো এমন খাবার খাওয়া হয়নি। তাই স্বাদ নিতে বিকেলের আগেই চলে এসেছি।’

আরও পড়ুন: শেরপুরের শত বছরের ঐতিহ্য ছানার পায়েস

জয়পুরহাটে সাড়া ফেলেছে মাছের শিঙাড়া

একই এলাকার উৎসব নামের একজন বলেন, ‘এর আগে আলুর শিঙাড়া, খাসির কলিজার শিঙাড়া খেয়েছি, কিন্তু মাছের শিঙাড়া খাইনি। তাই মাছ দিয়ে তৈরি শিঙাড়ার স্বাদ নিতে এলাম।’

নওগাঁর বদলগাছী থেকে আক্কেলপুরে এসেছিলেন মুরাদ হোসেন নামের এক ব্যক্তি। মাছের শিঙাড়ার নাম শুনে তিনিও এসেছেন অনুকূলের দোকানে। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘অনেক শিঙাড়া খেয়েছি, কিন্তু মাছের শিঙাড়া কোনোদিন খাইনি। ফেসবুকে এখানে মাছের তৈরি শিঙাড়া পাওয়া যায় দেখে খেতে এসেছি। প্রচুর ভিড়। ভাজার সঙ্গে সঙ্গেই শেষ হয়ে যাচ্ছে।’

জয়পুরহাটে সাড়া ফেলেছে মাছের শিঙাড়া

জয়পুরহাট সদরের তেঘর এলাকা থেকে এসেছেন দুই বন্ধু রিমন হোসেন ও সুরুজ আলী। রিমন জাগো নিউজকে বলেন, ‘প্রচুর ভিড় থাকার কারণে প্রায় এক ঘণ্টা অপেক্ষা করার পর শিঙাড়া পেলাম। অনেক স্বাদ, যা বলে বোঝাতে পারবো না।’

আরও পড়ুন: অতিথি আপ্যায়ন-উপহার সবকিছুতেই ক্ষীরপুরি

জয়পুরহাটে সাড়া ফেলেছে মাছের শিঙাড়া

কথা হয় দোকানি অনুকূল চন্দ্র সরকারের সঙ্গে। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘৫-৬ মাস আগে প্রশিক্ষণ নিয়ে এ ব্যবসা শুরু করি। তবে প্রথম দিকে তেমন বিক্রি হয়নি। এখন দূর-দূরান্তের মানুষ এগুলোর স্বাদ নিতে আসেন। বিক্রিও ভালো হচ্ছে।’

প্রতিপিস শিঙাড়া ১০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। একই দামে বিক্রি হচ্ছে ফিশবল। পাশাপাশি সাধারণ আলুর শিঙাড়া পাঁচ টাকা, ডিমের চপ পাঁচ টাকা, বেগুনি পাঁচ টাকা ও পেঁয়াজু দুই টাকা পিস বিক্রি করছেন অনকূল চন্দ্র।

জয়পুরহাটে সাড়া ফেলেছে মাছের শিঙাড়া

তিনি বলেন, ‘প্রতিদিন বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত ভিড় করছে মানুষ। চাহিদা অনুযায়ী দিতেই পারছি না। প্রশিক্ষণ নিয়ে ফিশ রোলসহ মাছের দিয়ে তৈরি আরও আইটেম বিক্রি শুরু করবো কিছুদিনের মধ্যে।’

আরও পড়ুন: ৮০ বছরেও কমেনি লক্ষ্মী নারায়ণের মিষ্টির খ্যাতি

এ বিষয়ে স্থানীয় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ‘এসো’র মৎস্য কর্মকর্তা নাজমুল হাসান জাগো নিউজকে বলেন, ‘বর্তমানে প্রক্রিয়াজাত মাছ বা রেডি টু ইট ফিশ প্রোডাক্ট আমাদের খাদ্য তালিকায় স্থান করে নিয়েছে। অনুকূলের দোকানে স্বাস্থ্যসম্মতভাবে মাছ থেকে বিভিন্ন খাবার তৈরিতে প্রশিক্ষণসহ কারিগরি সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে।

এসআর/জেআইএম