সময় পেরোলেও শেষ হয়নি কাজ, নদীতে ধসে পড়ছে সড়ক
নির্ধারিত সময় পার হলেও শেষ হয়নি সড়ক ও নদীতীর রক্ষার সীমানাপ্রাচীর নির্মাণ কাজ। মাঝপথে কাজ বন্ধ রেখে যেন উধাও ঠিকাদার। এমন পরিস্থিতিতে মুন্সিগঞ্জ সদরের জনগুরুত্বপূর্ণ ধলেশ্বরী নদী তীরবর্তী মুক্তারপুর-বিনোদপুর সড়কের বিভিন্ন স্থানে দেখা দিয়েছে ভাঙন। ক্রমাগত ধসে নদীতে বিলীন হচ্ছে সড়কের বিশাল অংশ। রীতিমত পরিণত হয়েছে মরণফাঁদে। যেকোনো সময় পুরো সড়ক নদীতে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
সরেজমিনে দেখা যায়, ধসে পড়েছে সড়কের কয়েকশ মিটার অংশ, তৈরি হয়েছে গভীর খাদ। এ অবস্থাতেই ঝুঁকি নিয়েই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও হাসপাতালসহ দৈনন্দিন বিভিন্ন প্রয়োজনে যাতায়াত করছে মানুষ।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) তথ্যমতে গতবছরের জানুয়ারিতে কার্যাদেশ দেওয়া হয় ১ হাজার ৩০০ মিটার দৈর্ঘ্যের সড়ক নির্মাণে। কাজ পায় আবিদ মনসুর কনস্ট্রাকশন নামের একটি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। ৬০০ মিটার পিচ ঢালাই, ৭০০ মিটার আরসিসি এবং নদীতীর রক্ষার সীমানাপ্রাচীরসহ সড়কটি নির্মাণ প্রকল্পের ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছিল ২কোটি ৮৩ লাখ টাকা।
চলতি বছরের ২৫ জুন কাজ শেষ করার কথা ছিল। তবে সময়ের দুমাস অতিক্রম হলেও শেষ হয়নি কাজ।
স্থানীয়দের অভিযোগ, সড়কটি সংস্কার কাজ শুরু হয় ২০২২ সালে। সড়কের ফিরিঙ্গিবাজার এলাকাটিতে নদী ভাঙন প্রতিরক্ষায় ব্লকের সীমানাপ্রাচীর থাকলেও ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান কাজের জন্য তা সরিয়ে ফেলে। এরপরই দেখা দিয়েছে এমন ভাঙন। বর্তমানে সড়ক সংস্কার দূরে থাক ভাঙন প্রতিরক্ষাও উদ্যোগ নেই কারো। দেখা মিলছে না ঠিকাদারের।
স্থানীয় প্রবীণ ব্যক্তি মো. ইব্রাহিম জানান, গতবছর কাজটা শুরু হলেও ঠিকাদার এখনো শেষ করেনি। মানুষজন, যানবাহন ও শতশত স্কুল শিক্ষার্থীরা এ রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করে। শুনছি রাস্তা ঠিক করবো। ঠিক তো করে না। এখন নদীর পানি বাড়ছে আর ভাঙনও বাড়ছে।
গাড়ি চালক জামাল হোসেন বলেন, একটু বেশকম হলে গাড়ি উল্টে নদীতে পড়বে। ঝুঁকি নিয়ে আমাদের চলাচল করতে হচ্ছে। স্কুলছাত্ররা গাড়িতে ওঠে, সাইকেলে যায়। কখন কে পড়ে কী হয় বলা যায় না। দ্রুত সড়কটি সংস্কার দাবি জানাচ্ছি।
স্থানীয় এক নারী বলেন, রাস্তার পাশেই আমাদের বাড়ি। রাতে নদীতে বড় ঢেউ থাকে। কোনো সময় রাস্তা ভাইঙা যায়। আমাগো ঘরবাড়িও নদীতে ভাঙে। এ আতঙ্কে ঘুম আসে না। দ্রুত রাস্তা সংস্কারের দাবি জানাই।
এ বিষয়ে যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের কাউকে।
মুন্সিগঞ্জ এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোনায়েম সরকার জাগো নিউজকে বলেন, কার্যাদেশ বুঝে পাওয়ার পর কাজ শেষ করার দায়িত্ব থাকে ঠিকাদারের। তাদের সঙ্গে বার বার যোগাযোগ করা হয়েছে। ঠিকাদার বিভিন্ন কারণ দেখাচ্ছে। মূলত তাদের অবহেলার কারণেই এমন অবস্থা। তবে দ্রুত সড়কটি বাস্তবায়নে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, ঠিকাদার কাজের সময় বাড়ানোর আবেদন করেছে। রবি-সোমবার সড়কটি রক্ষায় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আশা করছি আগামী দুমাসের মধ্যে কাজ বাস্তবায়ন হবে।
এসজে/এএসএম