ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

পাহাড়ের কারখানা থেকে অস্ত্র সরবরাহ হতো রোহিঙ্গা ক্যাম্পে

জেলা প্রতিনিধি | কক্সবাজার | প্রকাশিত: ০৯:০৭ পিএম, ১৯ আগস্ট ২০২৩

কক্সবাজারের টেকনাফের দুর্গম পাহাড়ে গড়ে তোলা হয়েছিল অস্ত্রের কারখানা ও ডাকাত দলের আস্তানা। সেখান থেকে পরিচালনা করা হতো নানা সন্ত্রাসী কার্যক্রম। শুক্রবার (১৮ আগস্ট) টেকনাফের রঙ্গীখালী পাহাড়ে অভিযান চালিয়ে অস্ত্র তৈরির কারখানা থেকে ফয়সাল বাহিনীর প্রধান ফয়সাল ও তার পাঁচ সহযোগীকে আটক করেছে র‌্যাব।

এসময় দুটি একনলা বড় বন্দুক, চারটি এলজি, ৭ রাউন্ড শর্টগানের কার্তুজ, ১০ রাউন্ড রাইফেলের কার্তুজ, একটি ড্রিল মেশিন, অস্ত্র তৈরির নানাসহ সরঞ্জামসহ তিনটি স্মার্টফোন উদ্ধার করা হয়।

আটকরা হলেন, টেকনাফের রঙ্গীখালীর গুরা মিয়ার ছেলে ফয়সাল উদ্দিন ওরফে ডাকাত ফয়সাল (৪০), পশ্চিম সাতঘরিয়াপাড়ার নজির আহমদের ছেলে বদি আলম ওরফে বদাইয়া (৩৫), বাছা মিয়ার ছেলে সৈয়দ হোসেন (৩২), দক্ষিণ আলীখালীর জানে আলমের ছেলে কবির আহাম্মদ (৪৩), পূর্ব সাতঘরিয়াপাড়ার মৃত বনি আমিনের দেলোয়ার হোসন (৩৫) ও উলুছামারি কুনারপাড়ার জাহিদ হোসেনের ছেলে মিজানুর রহমান (২৬)।

শনিবার (১৯ আগস্ট) দুপুর ২টার দিকে র‌্যাব-১৫ এর কার‌্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য জানান র‌্যাব-১৫ এর ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মেজর সৈয়দ সাদিকুল হক।

তিনি বলেন, সম্প্রতি গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ক্যাম্প সংলগ্ন পাহাড়ে অস্ত্র তৈরির কারখানার সন্ধান পাওয়ার পর নজরদারি বাড়ানো হয়। অবশেষে র‌্যাবের একটি দল সেখানে অভিযান চালায়। এই কারখানায় যে অস্ত্র তৈরি হতো সেগুলো তারা যেমন ব্যবহার করতো, তেমনি টাকার বিনিময়ে ক্যাম্পে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী বাহিনীর কাছেও সরবরাহ করতো।

RAB

র‌্যাবের এ কর্মকর্তা বলেন, চক্রটি টেকনাফের দুর্গম পাহাড়ে অবস্থান করে ফয়সাল উদ্দিন ওরফে ফয়সাল ডাকাতের সরাসরি নেতৃত্বে ডাকাতি, অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায়, ধর্ষণ, মাদক ও অস্ত্র ব্যবসা এবং হত্যাসহ নানা অপরাধ কার্যক্রম পরিচালনা করছিল। এছাড়া দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় গড়ে তোলা হয় অস্ত্র তৈরির কারখানা। ফয়সাল বিভিন্ন সময়ে তার সহযোগীদের মাধ্যমে অন্য সন্ত্রাসী চক্রের কাছে অস্ত্র সরবরাহসহ নিজেদের তৈরি আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে অপরাধ কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতো।

মেজর সাদিকুল হক বলেন, নানা অপরাধের পাশাপাশি ডাকাত দলটি টেকনাফের বিভিন্ন স্থান থেকে অপহরণ করে রঙ্গীখালীর গহীন পাহাড়ে অপহৃতদের নিয়ে তাদের আস্তানায় বন্দি করে রাখতো এবং তাদের পরিবারের কাছে মোটা অঙ্কের মুক্তিপণ দাবি করতো। মুক্তিপণের টাকা আদায় করতে অপহৃতদের ওপর চালানো হত পৈশাচিক নির‌্যাতন। মুক্তিপণের বিনিময়ে অপহৃতদের ছেড়ে দেওয়া হতো। চাহিদা মতে মুক্তিপণ না পেয়ে কয়েকজনকে হত্যা পর্যন্ত করেছে বলে অপরাধীরা জানায়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিতে সন্ত্রাসী কার্যক্রম শেষে তারা পুনরায় গহীন পাহাড়ের আস্তানায় আত্মগোপনে চলে যেত। ডাকাত চক্রটির বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপরে সশস্ত্র হামলার তথ্য পাওয়া গেছে।

তিনি আরও বলেন, আটক ফয়সাল উদ্দিন অস্ত্রধারী ডাকাত দলের মূলহোতা। তার বিরুদ্ধে হত্যা, ধর্ষণ ও অন্য অপরাধে কক্সবাজারের টেকনাফ থানায় তিনটির অধিক মামলা রয়েছে। এছাড়া আটক বদি আলম ওরফে বদাইয়ার বিরুদ্ধে হত্যা, মাদক, অস্ত্র, ডাকাতি ও অন্য অপরাধে টেকনাফ থানায় ১৪টি, কবির আহাম্মদের বিরুদ্ধে দুটি, সৈয়দ হোসেনের বিরুদ্ধে তিনটি, দেলোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে তিনটি এবং মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে একটি মামলা রয়েছে। আটকদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

সায়ীদ আলমগীর/এমআরআর/এমএস