দুই মাসের জন্য বন্ধ কিন ব্রিজ, ফিরবে নতুন রূপে
সিলেটের ঐতিহ্যবাহী কিন ব্রিজ সংস্কারের জন্য দুই মাস বন্ধ থাকবে। সেতু বন্ধের ঘোষণা দিয়ে ব্রিজের দুই পাশে নোটিশ সাঁটানো হয়েছে। বুধবার (১৬ আগস্ট) বিকেলে ব্রিজটির উভয় প্রবেশমুখে ব্যারিকেড দিয়ে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয় সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ।
সওজ সূত্রে জানা গেছে, কিন ব্রিজ সংস্কারের জন্য ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে দুই কোটি ১৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। ওই বছরেরই জুনে বরাদ্দের টাকা রেলওয়ের সেতু বিভাগকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়। সেতুটি সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের নিয়ন্ত্রণাধীন হলেও এটি সংস্কার করবে রেলওয়ের সেতু বিভাগ। আর সেতুটি দেখভাল করে সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রকৌশল বিভাগ।
এর আগে বাংলাদেশ রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের সেতু প্রকৌশলী জিষান দত্ত সই করা এক চিঠিতে জানানো হয়, ২৫ জুলাই থেকে ২৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কিন ব্রিজ দিয়ে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ থাকবে। তাই এ ব্যাপারে সিলেট মহানগর পুলিশের সহায়তা চায় প্রতিষ্ঠানটি। তবে ওই তারিখ অনুযায়ী বন্ধ হয়নি যানবাহন চলাচল। কয়েক দফা পিছিয়ে বুধবার থেকে সম্পূর্ণ বন্ধ করে ব্রিজের কাজ শুরু করে দিয়েছে রেলওয়ে।
আরও পড়ুন: কাঁচা রাস্তার বেহাল দশা, হেঁটে চলাও দায়
সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোস্তাফিজুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, বুধবার থেকে কিন ব্রিজে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। দুই মাস সংস্কার কাজ চলবে। সংস্কার শেষে আবারও জনসাধারণের জন্য এটি খুলে দেওয়া হবে। রেলওয়ের সেতু বিভাগকে দুই মাসের আগে কাজ শেষ করার জন্য বলা হয়েছে। সংস্কারে পরে কিন ব্রিজ দিয়ে আর বড় ধরনের যানবাহন চলাচল করতে দেওয়া হবে না।
রেলওয়ে সেতু বিভাগের পূর্বাঞ্চলের প্রকৌশলী জিষান দত্ত জানান, বুধবার থেকে ব্রিজটির xপর ও নিচে একযোগে কাজ শুরু হয়েছে। মেয়াদ দুই মাস থাকলেও আশা করছি দুই মাসের আগেই কাজ শেষ করতে পারবো।
বছর চার আগে সিটি করপোরেশন ব্রিজটির কার্পেটিংসহ সোডিয়াম বাতি লাগালেও মূল কাঠামোতে তেমন সংস্কার হয়নি। এরপর ২০১৯ সালের ১ সেপ্টেম্বর ঝুঁকিপূর্ণ সেতুটির দুই দিকে লোহার বেষ্টনী দিয়ে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ করে সিটি করপোরেশন। তবে নাগরিকদের প্রতিবাদের মুখে বন্দের কিছুদিন পরেই যান চলাচলের জন্য সেতুটি খুলে দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: ২০ মাসের কাজ শেষ হয়নি ৪ বছরেও, দুর্ভোগ চরমে
ব্রিটিশ আমলে তৈরি লোহার কাঠামোর দৃষ্টিনন্দন ‘কিন ব্রিজ’ নির্মাণ করেছিল রেলওয়ে বিভাগ। টানা দুই বছর নির্মাণকাজ শেষে ১৯৩৬ সালে সেতুটি চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছিল। তৎকালীন অসম (বর্তমান আসাম) প্রদেশের ব্রিটিশ গভর্নর মাইকেল কিনের নামে এই সেতুর নামকরণ করা হয় ‘কিন ব্রিজ’। এর দৈর্ঘ্য ১ হাজার ১৫০ ফুট এবং প্রস্ত ১৮ ফুট। নির্মাণের পরে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় ক্ষতিগ্রস্ত হয় সেতুটি। পরে ১৯৭৭ সালে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ প্রথম দফা সংস্কার করেছিল।
ছামির মাহমুদ/জেএস/জিকেএস