ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

‘ডিমও নাগালের মধ্যে থাকলো না’

ছামির মাহমুদ | সিলেট | প্রকাশিত: ০৪:৪০ পিএম, ১৪ আগস্ট ২০২৩

সিলেটে পেঁয়াজ, রসুন, ডিম, টমেটো, আলু, কাঁচামরিচ ও মাছ দিন দিন ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে। প্রতি সপ্তাহে বাড়ছে নিত্যপণ্যের দর। মাত্রাতিরিক্ত দর বাড়ার কারণে নিত্যপণ্যের বাজারে গিয়ে নিম্ন ও মধ্যআয়ের মানুষের ত্রাহি অবস্থা। আয়-ব্যয়ের হিসাব মেলাতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন তারা।

জেলায় গত সপ্তাহের তুলনায় সবধরনের মাছের দাম কেজিতে বেড়েছে ৫০-৬০ টাকা। শাক-সবজির দাম বেড়েছে ১০-২০ টাকা পর্যন্ত। পেঁয়াজ, রসুন, ডিম, টমেটো, আলু, কাঁচামরিচ ও মাছ ডিম রের্কড দামে বিক্রি হলেও দাম কমেছে ব্রয়লার মুরগি, আদা, চিনি ও সয়াবিন তেলের দাম। গত সপ্তাহের তুলনায় চলতি সপ্তাহে ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে কমেছে ২০ টাকা। গত সপ্তাহে ২০০ টাকায় বিক্রি হলেও এ সপ্তাহে ১৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতিকেজি ভারতীয় আদার দাম কমেছে ৫০ টাকা। আর চিনি ও সয়াবিন তেলের দাম কেজিতে পাঁচ টাকা করে কমেছে।

আরও পড়ুন: ডিমের দাম সাড়ে ১২ টাকার বেশি আমরাও চাই না: ব্রিডার্স অ্যাসোসিয়েশন

তবে এক হালি ফার্মের মুরগির ডিম কিনতে লাগছে ৬০ টাকা। এছাড়া মাছের এ ভরা মৌসুমেও বাজার চড়া। এক কেজি রুই বিক্রি হচ্ছে রেকর্ড ৪৫০ টাকা কেজি দরে। যা গত সপ্তাহেও ৩৭০-৩৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। গরুর মাংস ৭৫০-৭৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া খাসির মাংস ৯৫০-১০০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

প্রতিকেজি বড় চিংড়ি মাছ বিক্রি হচ্ছে ৮০০ টাকা দরে। এছাড়া ছোট সাইজের চিংড়ি ৭০০-৭৫০ এবং দেশি ট্যাংরা ৬০০-৬৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

সিলেটের বাজারে প্রতিকেজি আদা বিক্রি হচ্ছে ১৫০-১৯০ টাকায়। পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫৫-৬০ টাকা কেজি। তবে ২৫০-৩০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে কাঁচা মরিচ। অথচ পাইকারি বাজারে কাঁচা মরিচের কেজি ১২০-১৩০ টাকা। আর আলু বিক্রি হচ্ছে ৪৫ টাকা কেজি দরে।

চলতি বছর এর আগে এত দাম ওঠেনি আলু, মাছ ও ডিমের। ফলে প্রোটিন ও পুষ্টি জোগানকারী ডিম ও আলু খাদ্যতালিকা থেকে বাদ দিতে হচ্ছে নিম্ন ও মধ্য আয়ের লোকজনকে। এর সঙ্গে এখন যোগ হচ্ছে মাছও।

আরও পড়ুন: বাজারের আগুন নেভাবে কে?

রসুনের দাম কেজিতে বেড়েছে ৫০-৬০ টাকা। গত সপ্তাহে রসুন (বড় সাইজ) প্রতিকেজি ১৯০ টাকায় বিক্রি হলেও চলতি সপ্তাহে ২৫০ থেকে ২৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

শাকসবজির বাজারও যেন পাগলা ঘোড়াতো। মাছ বিক্রেতারা বলছেন, অন্য বছর এ সময় হাওরের মাছে ভরপুর থাকতো বাজার। তবে সিলেটে এবার বন্যা বা সময়মতো তেমন পানি না হওয়ায় মাছের প্রজনন তেমন বাড়েনি। তাই চাষের মাছ দিয়েই চলছে বাজার। যে কারণে মাছের দাম কিছুটা বেড়েছে।

নগরের কাজিরবাজারে মাছ কিনতে আসা আল মদিনা ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক তালেব হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, ‘আগামীকাল বাসায় মেহমান আসবে। তাই মাছ কিনতে এসেছি। তবে বাজারে এসে বাজেট অতিক্রম করেছে। কারণ গত সপ্তাহেও যে রুই মাছ কেজি ৩৭০ টাকায় বিক্রি হয়েছে, তার দাম বেড়ে এখন ৪৩০-৪৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এক থেকে দেড় কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১৮০০-২০০০ টাকা কেজি দরে।’

আরও পড়ুন: দাম নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনে ডিম আমদানি: বাণিজ্যমন্ত্রী

তালেব বলেন, ‘ডিমের বাজারও চড়া। ডিম আমাদের নাগালের মধ্যে থাকলো না। গরু ও খাসির মাংসের দামতো অনেক আগে থেকেই নাগালের বাইরে চলে গেছে। এখন ডিমও নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে।’

নগরের অন্যতম কাঁচাবাজার মদিনা মার্কেট এলাকায় নিত্যপণ্য ও শাকসবজি কিনতে এসেছেন মুদি ব্যবসায়ী মির্জা সাজ্জাদ। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘প্রতিদিনইতো কোনো না কোনো নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বাড়ছে। আমরা মধ্যআয়ের মানুষেরা বিপাকে আছি।’

রোববার (১৩ আগস্ট) নগরের ঘাসিটুলা, রিকাবীবাজার, আম্বরখানা, মদিনা মার্কেট এবং ওসমানী মেডিকেল রোডসহ বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখা যায়, দোকানগুলোতে শাকসবজির তেমন সরবরাহ নেই। দামটাও একটু বেশি। প্রতিকেজি আলু ৪৫ টাকা, কাঁচা মরিচ ২৭০-৩০০, ধনিয়া পাতা ২৪০, টমেটো ২০০, ঢ্যাঁড়শ ৫০-৬০, করলা ৬০, ফুলকপি ৯০, গাজর ১৮০, বরবটি ৬০, চিচিঙ্গা ৬০, ঝিঙে ৬০-৬৫, বেগুন ৭০-৮০ টাকা এবং পেঁপে ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

আরও পড়ুন: হাত বদলেই এক ডিমে বাড়ছে ৩ টাকা

প্রতিপিস মিডিয়াম সাইজের লাউ ১০০ টাকা, মিষ্টি লাউ আকারভেদে ১৩০-১৭০ টাকা, প্রতি হালি কাঁচকলা ৪০-৫০ টাকা, প্রতি আঁটি লাল ও পালং শাক ২০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে।

মেডিকেল রোড এলাকার সবজিবিক্রেতা সজিব আহমদ জাগো নিউজকে জানান, টানা বৃষ্টির কারণে শাকসবজির সরবরাহ কিছুটা কমেছে। টানা বৃষ্টির প্রভাব সবজির বাজারেও কিছুটা পড়েছে। গত সপ্তাহের তুলনায় এ সপ্তাহে সবধরনের শাকসবজির দাম দাম একটু বেড়েছে।

নবাব রোডের ফাতেমা স্টোরের মালিক আব্দুল করিম বলেন, আলু, পেঁয়াজ, রসুন ও ডিমের দাম বেড়েছে। প্রায় প্রতিদিনই নিত্যপণ্যের দাম ৪-৫ টাকা করে বাড়ছে। তবে চিনি ও সয়াবিন তেলের দাম কিছুটা কমেছে।

এসআর/এএসএম