ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী
বন্যা নিয়ন্ত্রণে চকরিয়া-পেকুয়ায় নদী ড্রেজিং-বাঁধ নির্মাণ হবে
কক্সবাজারের চকরিয়া-পেকুয়ায় ভবিষ্যতে বন্যা প্রতিরোধে মাতামুহুরি নদী ড্রেজিং ও দুই পাড়ে টেকসই বাঁধ নির্মাণ করা হবে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ড. মো. এনামুর রহমান।
শুক্রবার (১১ আগস্ট) দুপুরে কক্সবাজারের বন্যাকবলিত চকরিয়ার কাকারা এলাকা পরিদর্শন ও ত্রাণ বিতরণকালে মন্ত্রী একথা বলেন।
কক্সবাজারের বন্যাকবলিত এলাকা ঘুরে ফসলি জমি, মাছের ঘেরের ক্ষয়ক্ষতি ও মানুষের খাদ্যাভাবের চিত্র দেখেছেন উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, পূর্ণাঙ্গ ক্ষয়ক্ষতির চিত্র পাওয়ার পর আন্তঃমন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির বৈঠক করে কক্সবাজার জেলার জন্য বরাদ্দ আরও বাড়ানো হবে।
এর আগে চকরিয়ার কাকারায় আড়াইশ পরিবারের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ করেন প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান। এসময় তার সঙ্গে ছিলেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মিজানুর রহমান, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য তাজুল ইসলাম, স্থানীয় সংসদ সদস্য জাফর আলম, আশেক উল্লাহ রফিক, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে অতিরিক্ত সচিব কেএম আবদুল ওয়াদুদ, জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান প্রমুখ।
প্রতিমন্ত্রী পরে চকরিয়া ও পেকুয়ার বন্যাকবলিত হয়ে ক্ষতিগ্রস্ত অন্যান্য এলাকা পরিদর্শন এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ করেন।
গত সপ্তাহজুড়ে ভারী বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলে কক্সবাজারের মিঠাপানির তিন নদী মাতামুহুরি, বাঁকখালী ও ঈদগাঁও ফুলেশ্বরীর বাঁধের একাধিক স্থান ভেঙে গিয়ে জেলার ৬০ ইউনিয়নে চার লাখ ৭৯ হাজার ৫০৩ মানুষ বন্যার কবলে পড়েন। বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) থেকে বৃষ্টিপাত বন্ধ হওয়ার পর কমে গেছে বৃষ্টি ও বানের জল।
পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে ভেসে উঠছে মহাসড়ক, উপসড়ক, কাঁচা রাস্তা ও বাঁধের ক্ষতচিহ্ন। কালভার্ট ভেঙে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে অনেক এলাকা। ঢল আর জোয়ারের পানিতে তলিয়ে যাওয়া গ্রামীণ জনপদে নষ্ট হয়েছে কৃষকের বীজতলা, ফসলের মাঠ, মাছের ঘের ও বেড়িবাঁধ। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অনেক ঘরবাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। ক্ষতির মুখে পড়েছে রেললাইন।
বৃষ্টিতে পাহাড়ধস, সেপটিক ট্যাংক পরিষ্কার করতে গিয়ে, সাপের দংশন আর পানিতে ডুবে মৃত্যু হয়েছে শিশুসহ ১৫ জনের। পানি নামলেও মানুষ খাবার ও বিশুদ্ধ পানি সংকটে পড়েছে। তবে চারদিন পর কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানচলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।
জেলা প্রশাসন বলছে, দুর্গত মানুষের জন্য বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের পাশাপাশি ৩৮ হাজার পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট সরবরাহ করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৫৯ কিলোমিটার সড়ক-উপসড়ক। এখনো বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে পেকুয়ার ছয়টি এবং চকরিয়ার ১৩টি ইউনিয়ন। প্রাথমিক ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ দেড় কোটি টাকা। এসব চিত্র দেখতেই শুক্রবার সকালে কক্সবাজার আসেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান। চকরিয়া-পেকুয়া পরিদর্শন শেষে বন্যায় চট্টগ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা দেখতে যান প্রতিমন্ত্রী।
সায়ীদ আলমগীর/এসআর/এএসএম