ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অবাধে বিক্রি হচ্ছে ব্যথানাশক-অ্যানেস্থেসিয়ার ওষুধ
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অনুমোদন না থাকার পরও ফার্মেসিগুলোতে প্রকাশ্যেই বিক্রি হচ্ছে ব্যথানাথক ও অ্যানেস্থেসিয়ার (অজ্ঞান করার) ওষুধ। এসব ওষুধ বিক্রি করতে সারা জেলায় মাত্র চারটি ফার্মেসির মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অনুমোদন রয়েছে। অথচ জেলা ঔষধ তত্ত্বাবধায়কের তথ্য অনুযায়ী, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নিবন্ধিত ফার্মেসির সংখ্যা দুই হাজার ৮০০টি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ৯টি উপজেলায় গড়ে উঠেছে অসংখ্য হাসপাতাল। এসব হাসপাতালে অস্ত্রোপচারে ব্যবহার করা হয় ব্যথানাশক ও অ্যানেস্থেসিয়ার ইনজেকশন। অথচ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অনুমোদন না নিয়েই হাসপাতালের আশপাশে গড়ে ওঠা অসংখ্য ফার্মেসি অবাধে বিক্রি করছে নির্দিষ্ট ব্যথানাশক ওষুধ (পেথিডিন, মরফিন, ও-মরফেন ইত্যাদি) ও অ্যানেস্থেসিয়ার ইনজেকশন।
জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, অস্ত্রোপচারে ব্যবহার করা হয় এমন ব্যথানাশক ওষুধ এবং অ্যানেস্থেসিয়ার ইনজেকশন বিক্রি করতে হলে অনুমোদন নিতে হয়। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলাজুড়ে দুই হাজার ৮০০টি ফার্মেসি রয়েছে। এরমধ্যে মাত্র চারটি ফার্মেসি এসব ওষুধ বিক্রির জন্য মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অনুমোদন নিয়েছে। অনুমোদন পাওয়া চারটি ফার্মেসিই ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে। বাকি ফার্মেসিগুলোর অনুমোদন নেই। অথচ অবাধে এসব ব্যথানাশক ওষুধ এবং ইনজেকশন বিক্রি করে যাচ্ছেন তারা।
'
ব্রাহ্মণবাড়িয়া মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মিজানুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অনুমোদনের জন্যে নির্দিষ্ট ফরমে আবেদন করতে হয়। আবেদনের পর আমরা সরেজমিনে তদন্ত করি। তাদের সবকিছু ঠিক থাকলে হেড অফিসে আমরা রিপোর্ট পাঠাই। এরপরই তাদের অনুমোদন দেওয়া হয়।
তিনি বলেন, ফার্মেসিতে প্যাথেডিন, মরফিন, ও-মরফেন জাতীয় ওষুধসহ অস্ত্রোপচারের জন্য ব্যবহার করা সব অ্যানেস্থেসিয়ার ইনজেকশন বিক্রি করতে হলে অবশ্যই মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অনুমোদন নিতে হবে। জেলায় মাত্র চারটি ফার্মেসির এ অনুমোদন রয়েছে। এ চারটি ফার্মেসির অবস্থান জেলা শহরে। বাকিগুলোর বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। অনুমোদন ছাড়া কেউ এসব ওষুধ বিক্রি বা মজুত করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতির ব্রাহ্মণবাড়িয়া শাখার সাধারণ সম্পাদক আবু কাউসার জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমরা শুধু জানি প্যাথেডিন, মরফিনজাতীয় ওষুধ বিক্রি করতে হলে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অনুমোদন নিতে হয়। অ্যানেস্থেসিয়ার ওষুধ বিক্রির জন্য অনুমোদন নিতে হয় কি না, তা আমার জানা নেই। এ বিষয়ে আমরা কোনো চিঠিও পাইনি।’
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঔষধ তত্ত্বাবধায়ক শাহজালাল ভূইয়া জাগো নিউজকে বলেন, আমরা ফার্মেসি পরিচালনার জন্য নিবন্ধন দিই। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের আওতাধীন যেসব ওষুধ বিক্রি করতে অনুমোদন নিতে তা তারাই দেখবেন।
আবুল হাসনাত মো. রাফি/এসআর/জিকেএস