এক দোকানে ৫৩ রকমের চা
চা-কে অনন্য এক শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গেছেন মো. রুবেল তারেক। ফেনী শহরে তার এক দোকানেই মিলছে ৫৩ রকমের চা। নানা স্বাদের বাহারি আয়োজনের চায়ের সঙ্গে মিল রেখে দোকানের নাম দেওয়া হয়েছে ‘চায়ের গ্রাম’।
শহরের মিজান রোডের আলিয়া মাদরাসা মার্কেটের তৃতীয় তলায় এই দোকানে সারাদিনই ভিড় দেখা যায় চাপ্রেমীদের। ফেনীর সন্তান মো. রুবেল তারেক ২০২০ সালে এ দোকানের যাত্রা শুরু করেন।
উদ্যোক্তা হওয়ার গল্প তুলে ধরে মো. রুবেল তারেক বলেন, ২০২০ সালের আগস্টে ছোট পরিসরে ২০০ স্কয়ার ফিটের একটি জায়গায় এই দোকানের যাত্রা শুরু। তার আগে আমি একটি চাকরিতে ছিলাম। অল্পকিছু মূলধন আর বন্ধুদের সহযোগিতা নিয়ে এ কাজ শুরু করি। প্রায় এক বছর অতিক্রম করার পর আমাদের প্রতি ফেনীর মানুষের আগ্রহ দেখে সামনে অগ্রসর হই।
পরবর্তীতে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ১১০০ স্কয়ার ফিট জায়গা নিয়ে নতুন পরিসরে আবার চায়ের গ্রামের কার্যক্রম শুরু করি। ঢাকা-চট্টগ্রামে হরেক রকম চায়ের দেখা মিললেও ফেনীতে আগে তেমন কিছুই ছিল না। যা সর্বপ্রথম আমরাই শুরু করি। এই যাত্রায় ফেনীর চাপ্রেমীদের অভূতপূর্ব সাড়া পেয়েছি।
শুরুর পথ মসৃণ ছিল না উল্লেখ করে এ উদ্যোক্তা বলেন, শুরুর সময় নানা ধরনের চা নিয়ে মানুষের তেমন আগ্রহ ছিল না। তবে ধীরে ধীরে অভ্যস্ত হয়েছে।
নিজ এলাকায় কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে পেরে মো. রুবেল তারেক বলেন, বর্তমানে তার প্রতিষ্ঠানে ছয়জন কাজ করছেন। এ তরুণদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে পেরে নিজেকেও গর্বিত মনে করছি।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা জানিয়ে তিনি বলেন, আগামীতে উপজেলা এবং পার্শ্ববর্তী জেলা শহরে চায়ের গ্রামের শাখা দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। এখানে বেশিরভাগ শিক্ষার্থী, মধ্যবয়সী এবং বিভিন্ন কাজে আলোচনা করতে বসার সুবিধার্থে লোকজন আসেন। তবে স্কুল চলাকালীন শিক্ষার্থীদের বসার অনুমতি দিই না।
মো. রুবেল তারেক ২০০৩ সালে ফেনী সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক ও ফেনী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে ২০০৭ সালে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং শেষ করেন। পরে ঢাকার একটি আইটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন।
চাপ্রেমী দিলদার হোসেন বলেন, বিভিন্ন ফ্লেভারের এই চা মানুষকে আকৃষ্ট করছে। আমরা নিয়মিত এখানে চা পান করতে আসি। ভিন্ন স্বাদের চা পানে আশপাশের জেলা ও উপজেলা থেকেও অনেকে আসছেন।
ফেনী শহরের ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পারভেজুল ইসলাম হাজারী বলেন, ফেনীর এক দোকানে ৫৩ রকমের চা তৈরির বিষয়টি একটি ব্যতিক্রমী উদ্যোগ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ উদ্যোগের কথা ছড়িয়ে পড়লে ধীরে ধীরে এখানে চাপ্রেমীদের ভিড় বাড়তে থাকে। তরুণ উদ্যোক্তা হাসান তারেকের সফলতা কামনা করি।
আবদুল্লাহ আল-মামুন/এফএ/এমএস