ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

চারদিকে খোঁড়াখুঁড়ি, ভোগান্তিতে নগরবাসী

আলমগীর হান্নান | খুলনা | প্রকাশিত: ০৪:৩৫ পিএম, ১০ জুলাই ২০২৩

দেশের তৃতীয় বৃহত্তম বিভাগীয় শহর খুলনা। এ শহরজুড়ে চলছে একাধিক সংস্থার উন্নয়ন কার্যক্রম। অত্যন্ত ধীর গতির এই উন্নয়ন কাজের জন্য নগরবাসীকে পোহাতে হচ্ছে চরম ভোগান্তি। সড়ক আর ড্রেনের উন্নয়ন কাজের জন্য মাসের পর মাস ধরে চলছে খোঁড়াখুঁড়ির কাজ। কোথাও অর্ধেক আবার কোথাও সিকিভাগ করে রেখে দেওয়া হয়েছে কাজগুলো। এতে একদিকে চলাচলে চরম বিঘ্ন ঘটছে, অন্যদিকে যাতায়াতের বাহনগুলোর ভাড়াও বেশি গুনতে হচ্ছে নগরবাসীকে।

নাগরিক নেতারা বলছেন, উন্নয়ন সংস্থাগুলোর সমন্বয়হীনতার কারণেই এই জনদুর্ভোগ চলছে। কোনো জবাবদিহিতা না থাকায় আগামীতে আরও দুর্ভোগের মুখে পড়তে হবে নগরবাসীকে।

jagonews24

অপরদিকে সংস্থাগুলোর কর্মকর্তারা বলছেন, বৃষ্টির কারণে কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না। বৃষ্টি একটু কমলেই কাজ শুরু হবে।

খুলনা সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, নগরীর প্রধান সড়ক খান জাহান আলী সড়কের রূপসা ফেরিঘাট থেকে ডাকবাংলো ফেরিঘাট পর্যন্ত চলমান রয়েছে ২৫ কোটি টাকা ব্যয়ে সড়ক প্রসস্তকরণের কাজ। সড়কবাতির পিলার রেখেই সড়ক প্রসস্তকরণের এই কাজ এরইমধ্যে সমালোচনার মুখে পড়েছে। তারওপর এই কাজের জন্য সড়কের উভয়পাশ খুঁড়ে রাখা হয়েছে দীর্ঘদিন। এরইমধ্যে শুরু হয়েছে বর্ষা। খুঁড়ে রাখা সড়কে বর্ষার পানি জমে কাঁদা-পানিতে একাকার হয়ে যাচ্ছে সবকিছু।

এই সড়কের দুই পাশেই চলছে ড্রেন উন্নয়নের কাজ। ফলে বৃষ্টির পানি দ্রুত সরে যেতে না পারায় সামান্য বৃষ্টিতে খানজাহান আলী সড়ক তলিয়ে থাকছে দীর্ঘ সময়।

jagonews24

নগরীর প্রধান সড়ক হওয়ায় এমনিতেই এই সড়কে ভারী যানবাহনের পাশাপাশি ছোট ছোট যানবাহনের চলাচল অত্যাধিক। এতে সড়কের খুঁড়ে রাখা পাথর সরে গিয়ে তৈরি হয়েছে গর্তের। প্রায় এক কিলোমিটার খুড়ে রাখা সড়কে চলতে চাচ্ছে না ছোট ছোট যানবাহন। ঘুরপথে গন্তব্যে যাওয়ার জন্য চালকরা নিচ্ছেন অতিরিক্ত ভাড়া।

নগরীর কলেজিয়েট গার্লস স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থী সেজুতি জানান, ইকবাল নগর এলাকা থেকে আগে প্রতিদিন স্কুলে যাতায়াতের জন্য ৬০ টাকা হলেই হতো। এখন যাতায়াতে আরও ২০ টাকা বেশি লাগছে। কারণ হিসেবে রাস্তা খারাপ, অনেক পথ ঘুরে যেতে হবে। তাই ভাড়া বেশি না নেওয়া ছাড়া উপায় নেই বলে দাবি করছেন চালকরা।

তবে বৃষ্টি না কমলে সড়ক মেরামতের কাজ সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন সড়ক ও জনপথ খুলনার প্রধান প্রকৌশলী মো. আনিসুজ্জামান মাসুদ। তিনি বলেন, আমরা চেষ্টা করেছি দ্রুত কাজ শেষ করার জন্য। কিন্তু সম্ভব হয়নি। এখন বৃষ্টি একটু কমলেই আবার কাজ শুরু করবো।

শুধু খানজাহান আলী সড়কই নয়, খুঁড়ে রাখা হয়েছে নগরীর শামসুর রহমান রোড, সাউথ সেন্ট্রাল রোড, আহসান আহমেদ রোডসহ ছোটবড় বেশ কিছু সড়ক। এই সড়কগুলোতে খুলনা ওয়াসার অধীনে সুয়ারেজ ব্যবস্থার কাজ শেষ হয়েছে। কিন্তু দীর্ঘ কয়েক মাস খুঁড়ে রাখা হলেও তা মেরামত করার কোনো উদ্যোগ চোখে পড়ছে না।

খুলনা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী মো. আব্দুল্লাহ বলেন, নগরজুড়ে সুয়ারেজ প্রকল্পের কাজ চলবে। এটা শেষ হতে সময় লাগবে ২০২৫ সাল পর্যন্ত।

খুলনার উন্নয়নে যেসব সংস্থা কাজ করে তাদের মধ্যে সমন্বয় নেই দাবি করে বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির সভাপতি শেখ আশরাফ উজ জামান বলেন, নগরজুড়ে দীর্ঘদিন ধরে চলছে খোঁড়াখুঁড়ি। কিন্তু কোনো কাজেরই শেষ হচ্ছে না। এতে করে নগরবাসীকে মাসের পর মাস ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।

তিনি বলেন, সংস্থাগুলো যদি সমন্বয় করে কাজ করতো তাহলে অনেক আগেই কাজ শেষ হয়ে যেতো। তিনি দ্রুততার সঙ্গে কাজগুলো শেষ করার জন্য সংস্থাগুলোর প্রতি আহ্বান জানান।

jagonews24

এদিকে খুলনা সিটি করপোরেশনের অধীনে চলমান ড্রেন উন্নয়ন কাজ চলছে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে। করোনা মহামারির আগে থেকে শুরু হওয়া এই কাজ কবে শেষ হবে তা বলতে পারছে না কেউ।

সিটি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক বলেন, ৮০০ কোটি টাকার ড্রেনেজ প্রকল্পের কাজ নগরীতে চলমান রয়েছে।

তবে কেসিসির কর্মকর্তারা জানান, ২০২৫ সালের আগে এই কাজ শেষ হওয়ার সম্ভাবনা নেই। কারণ একইসঙ্গে চলছে ওয়াসার সুয়ারেজ প্রকল্প। যা শেষ না হলে সড়ক ও ড্রেন মেরামতের কাজ শেষ করা কঠিন হয়ে যাচ্ছে। ফলে ওয়াসার কাজও সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল।

এফএ/জিকেএস