ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

ক্রেতা মেলেনি ১৮ লাখ টাকা দাম চাওয়া ‘ভাইজান’র

জেলা প্রতিনিধি | যশোর | প্রকাশিত: ০৯:২৪ পিএম, ০২ জুলাই ২০২৩

যশোরে কোরবানির হাটে সাড়া ফেলে দেওয়া বিশালfকৃতির দুই ষাঁড়ের একটি অর্ধেক দামে বিক্রি হলেও অন্যটির ক্রেতা মেলেনি। ১৫ লাখ টাকা দামের ৩০ মণ ওজনের ‘রাজাবাবু’ সাড়ে ছয় লাখে বিক্রি হয়েছে। তবে ৩৫ মণ ওজনের ‘ভাইজান’ অবিক্রিতই রয়ে গেছে। কোরবানির বাজারে বড় গরুর এমন হালে হতাশ গরুর মালিকরা। তারা গরু আর এতো বড় করবেন না বলেই ভাবছেন।

‘রাজাবাবু’র মালিক যশোরের কেশবপুর উপজেলার শ্রীরামপুর গ্রামে কৃষক রফিকুল ইসলাম। আর ‘ভাইজান’র মালিক সদর উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের সীতারামপুর উত্তরপাড়ার এলাকার মহিদুজ্জামান কাজল।

যশোর সদর উপজেলার খামারি মহিদুজ্জামান কাজল বেশ আদর-যত্নে ‘ভাইজান’কে প্রস্তুত করেছিলেন কোরবানির বাজার ধরতে। চার বছর ৬ মাস বয়সী ভাইজানের গায়ে সাদার ওপর কালো ছোপ ছোপ দাগ রয়েছে। ৩৫ মণের ওজন ভাইজানের প্রতিদিন প্রচুর কাঁচা ঘাস, গমের ভুসি, গমের আটা, সয়াবিনের খৈল, ভুট্টা ভাঙা, রাইস পলিশ আর অল্প পরিমাণ ধানের কুঁড়া খেতে দেওয়া হয়। তার পেছনে দিনে ৮০০ থেকে এক হাজার টাকা খরচ হয়। কোরবানির জন্য প্রস্তুত করা এই গরুটির দাম হাঁকানো হয়েছিল ১৮ লাখ টাকা।

jagonews24

বিশাল আকারের গরুটিকে নিজের খামারে রেখেই বিক্রির চেষ্টা করছিলেন। আকারে বিশাল ও তেজি এ গরুটির নিয়ন্ত্রণ করা সমস্যা হতে পারে এমন আশঙ্কায় হাটে তোলেননি। কিন্তু প্রত্যাশিত দাম না পাওয়ায় গরুটিকে বিক্রি করেননি তার মালিক মহিদুজ্জামান।

মহিদুজ্জামান বলেন, ‘তিনি ভাইজানের দাম চেয়েছিলেন ১৮ লাখ টাকা। ক্রেতারা সর্বোচ্চ ছয় লাখ টাকা পর্যন্ত বলেছেন। তবে কেউ ১০ থেকে ১২ লাখ টাকা বললে তিনি বিক্রি করে দিতেন। শেষ পর্যন্ত বিক্রি হয়নি ভাইজান।

তিনি আরও বলেন, ‘গরুটি অভার সাইজ (অতিরিক্ত বড়)। ক্রেতারা দেখেই ভয় পেতেন। বলতেন, এতো বড় গরু! কষ্ট করে গরুটা বড় করলেও যশোরের বাইরে থেকে তেমন কোনো বড় পার্টি আসেনি। প্রতিদিন হাজার টাকার ওপরে খাবার তাকে দিতে হচ্ছে। লস হলেও আমার করার কিছু নেই। আগামী কোরবানির জন্য নতুন করে প্রস্তুতি নিচ্ছি।’

ভাইজান ছাড়াও কোরবানির ঈদে বিক্রির জন্য খামারে আরও ছয়টি গরু প্রস্তুত করেছিলেন মহিদুজ্জামান। সেগুলো দেড় থেকে দুই লাখ টাকার মাঝারি আকারের হওয়ায় কোনো ধরনের ভোগান্তি ছাড়াই সবগুলো বিক্রি করতে পেরেছেন।

অন্যদিকে, কেশবপুরের কৃষক রফিকুল ইসলাম গত চার বছর ধরে লালন-পালন করেছেন ‘রাজাবাবু’কে। ৩০ মণ ওজনের রাজাবাবুকে প্রস্তুত করেছিলেন গত কোরবানির জন্য। শান্ত স্বভাবের রাজাবাবু প্রতিদিন ঘাস, বিচালি, ছোলা, ভুট্টা, ভুসি আর খৈল খেতো।

কৃষক রফিকুল ইসলামের ছেলে মাহাবুবুর রহমান বলেন, ‘৩০ মণের রাজাবাবুর দাম চাওয়া হয়েছিল ১৫ লাখ টাকা। তবে ১০ থেকে ১২ লাখে বিক্রির আশা করেছিলাম। পরে গাজীপুর থেকে আসা এক ক্রেতা সাড়ে ছয় লাখ টাকায় নিয়ে গেছেন।’

তিনি বলেন, ‘রাজাবাবুকে লালন-পালন করতে যে খরচ হয়েছে আর যে দামে সেটি বিক্রি হয়েছে তাতে লোকসান হয়েছে। এক গরুতে এতো বেশি লোকসানে তিনি হতাশ। আর বড় কোনো গরু প্রস্তুত করবেন না বলে জানান তিনি।

মিলন রহমান/এসআর/জিকেএস