ছোট ভাইদের হাঁটার রাস্তায় ঘর তুললেন বড়ভাই
ছোট ভাইদের বাড়িতে চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে ঘর তোলার অভিযোগ উঠেছে মনির সিদ্দিকী নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার দিঘলকান্দি ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কালিয়া গ্রামে ঘটনাটি ঘটে। দফায় দফায় বিষয়টি নিয়ে পারিবারিকভাবে মীমাংসার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছেন ছোট দুই ভাই। উল্টো বড় ভাইয়ের হুমকির শিকারও হয়েছেন তারা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঘাটাইল উপজেলার দিঘলকান্দি ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কালিয়া গ্রামের আলী জুলফিকার মিয়ার তিন ছেলে ও তিন মেয়ে। এর মধ্যে বড় ছেলে মনির সিদ্দিকী, মেজ ছেলে সৌদি প্রবাসী মোস্তাফিজুর রহমান সিদ্দিকী জোসেব আর ছোট ছেলে ফিরোজ সিদ্দিকী। পৈতৃক সূত্রে আর মৌখিক মালিকানায় জনপ্রতি বাড়ির জমি পেয়েছেন পাঁচ শতাংশ করে। এর মধ্যে বড় ভাই মনির সিদ্দিকী সামনের অংশ থেকে নিয়েছেন। মাঝের অংশ থেকে পেয়েছেন মেজ ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান সিদ্দিকী জোসেব আর ছোট ছেলে ফিরোজ সিদ্দিকী পেয়েছেন শেষ অংশ।
মোস্তাফিজুর রহমান সিদ্দিকী জোসেব বলেন, ‘মৌখিকভাবে আমরা বাড়ির জমি থেকে তিন ভাই পাঁচ শতাংশ করে জমি পেয়েছি। আমার অংশ মাঝখানে। জমি ভাগের সময় ছয় ফুট রাস্তা রাখার সিদ্ধান্ত হয়। রাস্তাটি দিয়ে সবাই চলাচল করলেও নির্মাণ কাজের দায়িত্ব নিয়েছিলাম আমি। আমরা ছোট দুইভাই কর্মস্থলে থাকার সুযোগ নিয়ে এক মাস আগে বড়ভাই মনির সিদ্দিকী রাস্তার অংশটুকু বন্ধ করে ঘরের অংশ বাড়িয়েছেন। এ কারণে সৌদি থেকে মোবাইলে বড়ভাইয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করাসহ বাড়িটি তার বলে দাবি করেছেন। রাস্তাটি বন্ধ করায় আমাদের চলাচলের চরম সমস্যা দেখা দিয়েছে।
সবাই একমত হয়ে রাস্তার জন্য ছাড়া জমির অংশে কেন অবৈধভাবে ঘর বাড়ানোর বিচার দাবি করেছেন জোসেব। রাস্তাটি উদ্ধারে ইউনিয়ন পরিষদসহ সব কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগ দেবেন তিনি।
ছোট বোন নাজু বলেন, ‘রাস্তার সমস্যা সমাধানে বাড়িতে এসেছি বলে বড়ভাই মনির সিদ্দিকী আমাকে সংসার ছাড়া করার হুমকি দিয়েছেন। আমরা পরিবারের শান্তি চাই। রাস্তা ছেড়ে ঘর করার যে সিদ্ধান্ত ছিল, সেটি বহাল রাখার দাবি জানাচ্ছি।’
পরিবারের অভিভাবক মাজহারুল হক রানা সিদ্দিকী বলেন, সম্পর্কে আমি ওদের চাচা। পাশের প্লটটিই আমাদের। রাস্তাটি সচল রাখার জন্য বারবার আমি বলে আসছিলাম। তবে মনির নানা অজুহাত দেখিয়ে ও কথা অমান্য করে রাস্তাটি বন্ধ করেছে।
অভিযুক্ত মনির সিদ্দিকী বলেন, ‘আমি রাস্তার জমি দখল করিনি। আমার ভাগে পাওয়া পৈতৃক সম্পত্তির অংশে ঘর বড় করেছি। এরপরও রাস্তার জন্য দুই হাত পরিমাণ ছেড়ে রেখেছি।
স্থানীয় ওয়ার্ড সদস্য রহিম মিয়া জাগো নিউজকে বলেন, রাস্তা বন্ধ করে ঘর নির্মাণের কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তবে দিঘলকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রেজাউল করিম মটু জাগো নিউজকে বলেন, রাস্তা বন্ধ করে ঘর নির্মাণের অভিযোগ পেয়েছি। সরেজমিন দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আরিফ উর রহমান টগর/এসজে/জেআইএম