ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

দিশেহারা কৃষক

গো-খাদ্যের পর খাঁড়ার ঘা হয়ে এলো লাম্পি স্কিন

আব্দুল আজিজ | মৌলভীবাজার | প্রকাশিত: ০৪:২৪ পিএম, ২১ জুন ২০২৩

প্রতিবছর কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে গরু লালন-পালন করে থাকেন ক্ষুদ্র ও বড় খামারিরা। তাদের টার্গেট একটাই, পশু বিক্রি করে বছরে বড় আয় করা। কিন্তু চলতি বছর লাম্পি স্কিনে আক্রান্ত পশু নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন খামারিরা। এছাড়া গো-খাদ্যের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন জেলার খামারি ও কৃষকরা। পশুপালনে খরচ বেশি হওয়ায় বাজারে পশুর ভালো দাম পাওয়া নিয়ে শঙ্কায় আছেন তারা।

জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে মৌলভীবাজারে ৬২ হাজার ৫২টি পশু প্রস্তুত করা হয়েছে। এরমধ্যে গরু ৪৩ হাজার ৬১৮, মহিষ ২ হাজার ৪২২ ও ছাগল-ভেড়া ১৫ হাজার ৯২২টি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, খামারি ও পারিবারিকভাবে এসব পশু প্রস্তুত করা হয়েছে। বাড়তি লাভের আশায় পশুর বাড়তি যত্নে ব্যস্ত খামারি ও পরিবারগুলো। তবে গো-খাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন জেলার খামারি ও কৃষকরা। পশুপালনে খরচ বেশি হয়েছে তাদের। এবার বাজারে পশুর ভালো দাম পাওয়া নিয়ে শঙ্কায় আছেন তারা।

কৃষক ও খামারিরা জানান, কেউ বাড়ির গোয়ালে আবার কেউ পারিবারিক খামারে এসব পশু মোটাতাজা করছেন। প্রাকৃতিকভাবে বেড়ে ওঠা সবুজ ঘাস খাইয়ে পশু মোটাতাজা করছেন তারা। জেলার ছোট-বড় ও পারিবারিক খামারে অনেক মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। আসন্ন কোরবানির ঈদে এসব পশু বিক্রি করে বাড়তি আয়ের আশা করছেন তারা।

পশু চাষিরা জানান, পশুপালনে খরচ বেড়ে যাওয়ায় বাণিজ্যিকভাবে কেউ খামার করতে আগ্রহী হচ্ছেন না। বাজারে গো-খাদ্যের দাম বেশি হওয়ায় খরচ অনেক বেড়ে গেছে। পশুর হাটে বেচাকেনা ভালো না হলে তাদেরকে লোকসান গুনতে হবে।

অপরদিকে জেলার বিভিন্ন উপজেলায় কোরবানির আগে লাম্পি স্কিন ডিজিজ (এলএসডি) বা চর্মরোগে কয়েকশো গরু আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এতে কৃষক ও খামারিদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।

জানা গেছে, জেলার কুলাউড়া উপজেলার পৃথিমপাশা ও কর্মধা ইউনিয়নে গরু লাম্পি স্কিনে বেশি আক্রান্ত হয়েছে।

ওই এলাকার পৃথিমপাশা গ্রামের আলা উদ্দিন জাগো নিউজকে জানান, কোরবানির ঈদের জন্য গরু পালন করছেন। এখন গরুর গায়ে চর্মরোগ দেখা দেওয়ায় বিক্রি নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। ক্রেতারা কী অসুস্থ জেনে পশু ক্রয় করবে?

একই এলাকার টাট্রিউড়ি গ্রামের ক্ষুদ্র খামারি কৃষক শাহিন মিয়া জাগো নিউজকে বলেন, কয়েকদিন আগে তার গরুর লাম্পি স্কিন রোগ দেখা দেয়। সারা গায়ে প্রচুর দাগ হয়েছে। নিয়মিত চিকিৎসা দেওয়া হলেও রোগ সারেনি।

জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর বলছে, লাম্পি স্কিন এক ধরনের চর্মরোগ। এলএসডি বা লাম্পি স্কিন হলে গরুর মৃত্যুঝুঁকি বেড়ে যায়। এ রোগে আক্রান্ত হলে গরু বা বাছুর প্রথমে জ্বরে আক্রান্ত হয়। পরে খাওয়া বন্ধ করে দেয়। জ্বরের সঙ্গে মুখ ও নাক দিয়ে লালা বের হয় এবং পা ফুলে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

মৌলভীবাজার জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আব্দুস ছামাদ বলেন, জেলায় কোরবানির চাহিদার তুলনায় বেশি পশু প্রস্তুত রয়েছে। প্রাণিসম্পদ অফিসের তত্ত্বাবধানে অনলাইনেও পশু বিক্রি করা হবে। কৃষকরা যাতে ভালো দাম পান, সে বিষয়ে তাদের সর্বাত্মক চেষ্টা থাকবে। সেইসঙ্গে পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য জেলার সব উপজেলায় মেডিকেল টিম প্রস্তুত থাকবে। লাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত গরুর চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

তিনি বলেন, ৬২ হাজার ৫২টি পশুর মধ্যে খামারে ৩৯ হাজার ৪৮৯টি ও পারিবারিকভাবে ২২ হাজার ৫৬৫টি পশু প্রস্তুত করা হয়েছে।

এফএ/জিকেএস