বাজেট
গো-খাদ্যের দাম কমলেও বেড়েছে মাংসের
বাজেটে গো-খাদ্যের দাম কমানোর ঘোষণার পর থেকেই পাবনার ঈশ্বরদীতে কমতে শুরু করেছে সব ধরনের গো-খাদ্যের দাম। কিন্তু বিপরীত চিত্র দেখা গেছে মাংসের দোকানে। বাজেটে মাংসের দাম কমার ঘোষণা দেওয়া হলেও এখানে বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে। ঈশ্বরদী বাজারে প্রতি কেজি গরুর মাংস ৭২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অথচ এক সপ্তাহ আগেও ৬৮০ টাকা কেজি দরে মাংস বিক্রি হয়েছে।
সরকার মিষ্টিজাতীয় পণ্যের মূল্য কমানোর ঘোষণা দিলেও এজাতীয় কোনো পণ্যের দাম কমেনি ঈশ্বরদীতে। তবে টিস্যুর দাম বাড়ার ঘোষণার পরপরই বাজারে টিস্যুর সংকট দেখা দিয়েছে। টিস্যুও গায়ে লেখা নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দাম হাঁকছেন দোকানিরা। শুধু তাই নয়, বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে কলম।
আরও পড়ুন: কলমের দাম বাড়ছে
প্রতি ব্যাগ সিমেন্টের দাম ২০ টাকা বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। দু-চারদিনের মধ্যেই নতুন দামে সিমেন্ট বাজারে আসবে। কোম্পানির প্রতিনিধিরা ব্যবসায়ীদের সিমেন্টের নতুন মূল্য সম্পর্কে জানিয়ে দিয়েছেন। নতুন সিমেন্ট বাজারে না আসা পর্যন্ত আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে সিমেন্ট।
বেনসন সিগারেটের দাম বাজেট ঘোষণার দিন থেকেই বেড়েছে। প্যাকেটে মূল্য ২৮৪ টাকা লেখা থাকলেও বিক্রি হচ্ছে ৩১০ টাকায়। ২২২ টাকা মূল্যের গোল্ডলিফ বিক্রি হচ্ছে ২৩৬ টাকায়। বেনসন ও গোল্ডলিফের মতো প্রতিটি সিগারেটের দাম বেড়েছে।
ঈশ্বরদী বাজারের গো-খাদ্য বিক্রেতা ইন্তাজ অ্যান্ড ব্রাদার্সের স্বত্বাধিকারী ইন্তাজ আলী জানান, এলএলসি ভুসি বাজেট ঘোষণার আগে ১ হাজার ৯০০ টাকা বস্তা ছিল। কয়েকদিনের ব্যবধানে এখন কমে ১ হাজার ৫৫০ থেকে ১ হাজার ৬০০ টাকায় নেমেছে। দেশি গমের ভুসি (লোকাল) ২ হাজার ৫০ টাকা থেকে কমে এখন ১ হাজার ৮৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ব্র্যান্ড কোম্পানির ভুসি ২ হাজার ২৫০ টাকা থেকে কমে এখন ২ হাজার ৫০ টাকা, ক্যাটল ফিড ২৫ কেজির দাম ৯৭০ টাকা থেকে কমে এখন ৯৫৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
আরও পড়ুন: সিগারেটের দাম বাড়বে
তিনি আরও জানান, ভুসি কেজিতে দাম কমেছে প্রায় ৫০ পয়সা, ধানের গুঁড়া ৫০ কেজির বস্তা ৯০০ টাকা থেকে কমে ৭২৫ টাকা, খৈলের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। ৭০ কেজির খৈলের বস্তা ২ হাজার ৮৫০ টাকা থেকে বেড়ে ২ হাজার ৯০০ টাকা, ৫০ কেজির খুদের বস্তা ১ হাজার ৮০০ টাকা থেকে কমে ১ হাজার ৫৫০ টাকা এবং ৪০ কেজির ভুট্টার আটা ১ হাজার ৭০০ টাকা থেকে কমে ১ হাজার ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
ঈশ্বরদী বাজারের মাংস ব্যবসায়ী সিজু বলেন, ‘আমরা শুনেছি বাজেটে গরুর মাংসের দাম কমানোর ঘোষণা দিয়েছে। আমরা তো গরু কম দামে কিনতে পারছি না। কম দামে গরু কিনতে না পারলে মাংসের দাম কীভাবে কমবে? আগে ৬৮০ টাকা কেজি দরে মাংস বিক্রি করেছি। কয়েকদিন ধরে ৭২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছি। বিশেষ ক্ষেত্রে ৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।’
আরও পড়ুন: দাম বাড়বে যেসব পণ্যের
ঈশ্বরদী বাজারের বিভিন্ন কলম কোম্পানির ডিলার শহিদুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, ‘কলমের সংকট নেই। দোকানদারদের চাহিদা অনুযায়ী কলম সরবরাহ করার চেষ্টা করছি। দোকানদারদের সব অভিযোগ সত্য নয়।’
বাজারের টিস্যু বিক্রেতা আমজাদ হোসেন বলেন, ‘টিস্যুর দাম বাড়ার ঘোষণার পর থেকে কোম্পানির প্রতিনিধিরা দোকানে সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছেন। চাহিদা অনুযায়ী টিস্যু পাওয়া যাচ্ছে না। প্যাকেটে বর্ধিত মূল্য সংযোজনের পর হয়তো বাজারে টিস্যুর সরবরাহ স্বাভাবিক হতে পারে। এরই মধ্যে কিছু দোকানদার টিস্যুর দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। তবে আমরা প্যাকেটে লেখা দামেই বিক্রি করছি।’
আরও পড়ুন: দাম কমবে যেসব পণ্যের
শহরের কলেজ রোডের সিমেন্ট ব্যবসায়ী মেঘলা এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মজিদুল ইসলাম বলেন, ‘সিমেন্টের মূল্যবৃদ্ধির ঘোষণার পরও এখনো ঈশ্বরদীতে সিমেন্টের দাম বাড়েনি। কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, দু-চারদিনের মধ্যেই বর্ধিত মূল্য লেখা নতুন সিমেন্ট বাজারে আসবে। তখন বর্ধিত মূল্যে সিমেন্ট বিক্রি করা হবে।’
বাজারে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, বাজেটে এলইডি বাল্ব, ফ্রিজ-রেফ্রিজারেটর, বিদেশি পোশাকের দাম কমার ঘোষণা দেওয়া হলেও এখন পর্যন্ত আগের দামেই এসব পণ্য বিক্রি হচ্ছে। বাজারে দাম কমার কোনো প্রভাব পড়েনি।
অন্যদিকে ঘোষণার পরপরই কাজুবাদাম কেজিতে ২০ টাকা, বাসমতি চাল কেজিতে ৫ টাকা বেড়েছে। এলপি গ্যাস সিলিন্ডার, মাইক্রোওভেন ও চশমার মতো পণ্যগুলোর দাম বাড়ানোর ঘোষণা দিলেও এসব পণ্যের দাম এখনো বাড়েনি। তবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, আগে কেনা যেসব পণ্য রয়েছে সেগুলো আগের দামেই বিক্রি করা হচ্ছে। নতুন পণ্য বাজারে এলেই দাম বেড়ে যাবে।
এসআর/এএসএম