রাজশাহীতে দু’দিনের ব্যবধানে ফের বাড়লো পেঁয়াজের দাম
রাজশাহী বাজারে কমেছে মাছ-মাংস ও সবজির দাম। তবে দুদিনের ব্যবধানে কেজিতে ভারতীয় পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ২০ টাকা আর দেশি পেঁয়াজ ১০ টাকা। এছাড়া দাম কমেছে ডিমের।
ব্যবসায়ী বলছেন, পেঁয়াজের আমদানি হলেও এখনো দাম তেমনটা কমেনি। আর ক্রেতারা বলছেন, পাইকারি আড়তদারদের কারসাজিতেই পেঁয়াজের দাম আবার বেড়েছে।
মঙ্গলবার রাজশাহীর বাজারগুলোতে ভারতীয় পেঁয়াজ খুচরা ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছিল। কিন্তু শুক্রবার বিক্রি হয়েছে ৬০ টাকা কেজিতে। এছাড়া দেশি পেঁয়াজও ১০ টাকা বেড়ে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সাহেববাজারের খুচরা ব্যবসায়ী আলাল উদ্দিন বলেন, আড়তদাররা পাইকারিতে বেশি রাখছে তাই বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।
রাজশাহী সাহেব বাজারের পেঁয়াজ কিনতে আসা মৌসুমি ইসলাম বলেন, আমি ভেবেছিলাম পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়েছে দাম কিছুটা কমবে। শুনেছিলামও দাম কমেছে। তাই বেশি করে পেঁয়াজ কিনতে এসে দেখি দাম বাড়তি। এখনতো দাম বাড়ার কথা নয়। আড়তদারদের কারসাজিতেই দাম বাড়ছে। এগুলো মনিটরিং করা দরকার।
মাস্টারপাড়ার আড়তদার মো. জনি ইসলাম বলেন, ভারত থেকে আমদানির পর পাইকারি প্রতিকেজি ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৩০-৩৫ টাকা কেজিতে। ভারত থেকে আমদানি হচ্ছে ২০-২৫ টাকা কেজি।
তিনি আরও বলেন, মূল আমদানিকারকদের হাত থেকে পাইকারি বাজার হয়ে খুচরা বাজারে যায়। এখানেই দামটা বেড়ে যাচ্ছে। আমদানিকারক ও খুচরা বিক্রেতাদের মাঝখানে পেঁয়াজের দামটা ওঠানামা করছে। এতে আমাদের কোনো দোষ নেই।
শুক্রবার রাজশাহীর সাহেববাজার, হড়গ্রাম বাজার, শালবাগান বাজার ও তালামারী বাজার ঘুরে দেখা গেছে, মুরগির ডিম বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা হালিতে। গত সপ্তাহে ছিল ৪৬ টাকা হালি। এছাড়া সাদা ডিম বিক্রি হচ্ছে ৩৬-৩৮ টাকা হালিতে। এছাড়া দেশি মুরগি ও হাঁসের ডিম পাওয়া যাচ্ছে ৫৪ টাকা হালিতে। কমেছে মুরগির দামও। গত সপ্তাহে ২০০ টাকা কেজি বয়লার মুরগি এ সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ১৯০ টাকায়। সোনালী মুরগি দাম কমে ২৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। দেশি মুরগি পাওয়া যাচ্ছে ৪৮০ টাকা কেজিতে। যা গত সপ্তাহে ছিল ৫২০ টাকা কেজি।
এদিকে অপরিবর্তিত আছে গরু ও খাসির মাংসের দাম। গত সপ্তাহের মতো এ সপ্তাহেও গরুর মাংস প্রতিকেজি ৭২০ ও খাসি ১ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বড় ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১৬০০ টাকা কেজিতে, বাগদা চিংড়ি ৮০০ টাকা, গলদা চিংড়ি ১০০০ টাকা, চিংড়ি মাঝারি ১৩০০ টাকা, পাবদা ৫৫০ টাকা, টেংরা ৬০০ টাকা, শিং মাছ ৬০০ টাকা, বোয়াল মাছ ৬৫০ টাকা, পাঙাশ ১৮০ টাকা, চাষের কৈ ৫৫০ টাকা, দেশি কৈ ৬০০ টাকা, বড় তেলাপিয়া ২৫০ টাকা, ছোট তেলাপিয়া ১৫০ টাকা, রুই ২৫০ টাকা, কাতল ৩৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
এ সপ্তাহে সবজিতে ব্যাপক দরপতন হয়েছে। আলু বিক্রি হচ্ছে ৩৫ টাকা কেজি, দেশি আলু বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা কেজি। দেশি আদা বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকা ও ভারতীয় আদা ১৬০ টাকা। রসুনও বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা কেজিতে। পটল ৫০ টাকা কেজি, লাউ ৩০ টাকা, কচু ৬০ টাকা, কাঁচা পেঁপে ৫০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৪০ টাকা, ঢ্যাঁড়স ৪০ টাকা, করলা ৪০ টাকা, শসা ৫০ টাকা, বরবটি ৫০ টাকা, ঝিঙে ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহে প্রায় প্রতিটি সবজিই বিক্রি হয়েছে ১০০ টাকার কাছাকাছি দরে।
রাজশাহী জেলা বাজার মনিটরিং কর্মকর্তা মনোয়ার হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, ভারত থেকে কয়েক প্রজাতির পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে। এরমধ্যে নাশিক নামের একটি উন্নত জাত আছে। সেটির দাম ৬০ টাকা রাখা হচ্ছে। এর বাইরে এলসির পেঁয়াজের দাম কম রাখা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, যেহেতু আপনাদের কাছ থেকে অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। তাই আজ থেকেই এলসি পেঁয়াজের দাম মনিটরিং করা হবে।
সাখাওয়াত হোসেন/এসজে/এএসএম