সিলেটে সড়ক দুর্ঘটনা
নিহতদের মধ্যে ১২ জনই সুনামগঞ্জের
বাড়িতে বাড়িতে লাশের খাটিয়া। কেটে রাখা হয়েছে বাঁশ। সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত স্বজনদের আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠেছে পরিবেশ। প্রিয়জনকে হারানোর শোকে কেউ বিলাপ করছেন, কেউ বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন। এ দৃশ্য দেখে কাঁদছেন প্রতিবেশীরাও।
বুধবার (৭ জুন) সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার ভাটিপাড়া গ্রামে এমনই হৃদয়বিদারক দৃশ্য দেখা গেল।
সিলেটের দক্ষিণ সুরমা উপজেলায় ট্রাকের সঙ্গে পিকআপের মুখোমুখি সংঘর্ষে নারীসহ ১৪ শ্রমিক নিহত হয়েছেন। এসময় আহত হয়েছেন আরও অন্তত ১৬ জন। বুধবার ভোর সাড়ে ৫টায় সিলেট-ঢাকা মহাসড়কের নাজিরবাজার এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতদের মধ্যে ১২ জনই সুনামগঞ্জের। এদের মধ্যে দিরাই উপজেলার ভাটিপাড়া গ্রামের আটজন রয়েছেন। নিহতরা সবাই সিলেটে রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন।
আরও পড়ুন: সিলেটে ট্রাক-পিকআপ সংঘর্ষে ১৪ শ্রমিক নিহত
নিহতরা হলেন সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলার বাবনগাঁও গ্রামের মৃত ওয়াহাব মিয়ার ছেলে শাহিন মিয়া (৫০), একই উপজেলার মুরাদপুর গ্রামের হারুন মিয়ার ছেলে দুলাল মিয়া (২৬), তলেরবন্দ গ্রামের মৃত আমান উল্লাহর ছেলে আউলাদ তালুকদার (৫০), সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার আলীনগর গ্রামের মৃত শিশু মিয়ার ছেলে হারিস মিয়া (৫০), একই উপজেলার ভাটিপাড়া গ্রামের সিরাজ মিয়ার ছেলে সৌরভ মিয়া (২৬), একই গ্রামের শাহজাহান মিয়ার ছেলে বাদশা মিয়া (১৯), মৃত সজিব আলীর ছেলে রশিদ মিয়া (৫০), মৃত মফিজ মিয়ার ছেলে সায়েদ নুর (৬০), সাগর আহমদ (১৮), উপজেলার মধুপুর গ্রামের মৃত সোনাই মিয়ার ছেলে সাধু মিয়া (৪০), গছিয়া গ্রামের মৃত বারিক উল্লাহর ছেলে সিজিল মিয়া (৩৫) ও কাইমা গ্রামের মৃত ছলিম উদ্দিনের ছেলে একলিম মিয়া (৫৫)।
গ্রামবাসীরা বলছেন, একসঙ্গে এত মরদেহ তারা আগে কখনো দাফন করেননি। স্থানীয় বাসিন্দা মুবিনা বেগম জাগো নিউজকে বলেন, পুরো গ্রামে শোকের মাতম চলছে। সবাই কাঁদছে।
জামাল মিয়া নামের আরেকজন বলেন, ‘গ্রামের মানুষ হততম্ভ হয়ে গেছে। সবাই কাঁদছে। আমার ৬০ বছর বয়সে এমন ঘটনা দেখিনি।’
স্থানীয় বাসিন্দা নুর আলী জাগো নিউজকে বলেন, ‘জীবিকার তাগিদে তারা গ্রাম ছেড়ে সিলেটে গিয়েছিলেন। আজ সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন। এ গ্রামের অসহায় পরিবারের দিকে সরকারের নজর দেওয়া উচিত।’
দিরাই উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদুর রহমান মামুন জাগো নিউজকে বলেন, দুর্ঘটনায় যারা নিহত হয়েছেন তাদের মরদেহ রাতে গ্রামে আসবে। তখন আমি সেখানে যাবো। প্রশাসন থেকে তাদের আর্থিক সহায়তা করা হবে।
লিপসন আহমেদ/এসআর/জিকেএস