পরিপক্ব হয়নি আম, ঘোষণার পরও চালু হয়নি ম্যাঙ্গো স্পেশাল ট্রেন
চাঁপাইনবাবগঞ্জের আম পরিবহনের জন্য শনিবার (২০ মে) থেকে ম্যাঙ্গো স্পেশাল ট্রেন চালুর কথা জানিয়েছিল রেলওয়ে বিভাগ। কিন্তু এখনো পরিপক্ব হয়নি চাঁপাইনবাবগঞ্জের বেশিরভাগ আম। ফলে আমের বেচাকেনা শুরু করতে পারেননি ব্যবসায়ীরা। তাই আগাম ঘোষণা দিয়েও চালু করা যায়নি ট্রেনটি।
আম সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের সুমিষ্ট আম এখনো বাজারে আসেনি। গোপালভোগ জাতের কিছু আম বাজারে এলেও পরিমাণে অনেক কম। তাই কর্তৃপক্ষ আম না পেয়ে ট্রেনটি চালু করতে পারছে না।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের রহনপুর রেলওয়ের স্টেশন মাস্টার শহিদুল ইসলাম মিঞা বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, এ বছর এখনো আমের বাজার চালু হয়নি। ২১ মে রহনপুর ও ২৫ মে সদর উপজেলার আমের বাজার চালু হবে। তাই কর্তৃপক্ষ আগামী ২৫ মে এর পর ম্যাঙ্গো স্পেশাল ট্রেনের সময়সূচি ঘোষণা করবে।
লোকসান বা ব্যবসায়ীদের আস্থার সংকট প্রসঙ্গে স্টেশন মাস্টার বলেন, এরই মধ্যে রেল কর্তৃপক্ষ ব্যাপক প্রচারণা চালিয়েছে। এছাড়া ট্রেনটির সময়সূচি চূড়ান্ত হলে স্থানীয়ভাবেও ব্যাপকহারে প্রচার-প্রচারণা করা হবে। যেহেতু গত দুবছর ধরে ১ টাকা ৩১ পয়সা কেজি দরে আম পরিবহন করছে ম্যাঙ্গো স্পেশাল ট্রেন, এবছরও ভাড়া অপরিবর্তিত থাকবে। বেশি ওয়াগন নিয়ে দুটি ট্রেন চালু হবে বলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। এ বছর আশা করা যায়, ম্যাঙ্গো স্পেশাল ট্রেন থেকে ভালো কিছু রাজস্ব আসবে।
রেল বিভাগ সূত্রে জানা যায়, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় প্রথম ২০২০ সালের ৫ জুন ম্যাঙ্গো স্পেশাল ট্রেন উদ্বোধন করা হয়। দ্বিতীয় বারের মতো ২০২১ সালের ২৭ মে ট্রেনটি চালু করা হয়। ট্রেনটি ১৬ জুলাই পর্যন্ত আম পরিবহন করে।
গতবছর আমের মৌসুমের শুরুতেই ট্রেনটি চালুর দাবি করা হলেও আম তিন দফা সময় পরিবর্তনের পর জেলার রহনপুর রেলস্টেশন থেকে ১৩ জুন ম্যাঙ্গো স্পেশাল ট্রেনটির উদ্বোধন করা হয়। এর আগে ১ জুন ও পরে ৮ জুন ট্রেনটি চালুর সম্ভাব্য সময়সূচি ঘোষণা করা হয়েছিল।
শিবগঞ্জ ম্যাংগো প্রোডিউসার কো-অপারেটিভ সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল খান শামীম বলেন, জেলায় সব থেকে বেশি আম উৎপাদন হয় শিবগঞ্জ উপজেলায়। এছাড়া ঐতিহ্যবাহী কানসাট আম বাজারও শিবগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত। কিন্তু এ উপজেলায় রেললাইন না থাকায় ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেনের সুবিধা পাচ্ছেন না এখানকার আম চাষি ও ব্যবসায়ীরা।
তিনি আরও বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের আম এখনো পরিপক্ব হয়নি। জুনের প্রথম সপ্তাহ থেকে বাজারে আসতে শুরু করবে এখানকার আম।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ চেম্বার অ্যান্ড কমার্সের পরিচালক মো. শহিদুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, এ বিশেষ ট্রেনে আম ছাড়াও লিচু, মৌসুমি ফলসহ সব ধরনের কৃষিপণ্যও কম খরচে ঢাকায় নেওয়া যায়। ম্যাঙ্গো স্পেশাল ট্রেনে চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ঢাকায় আম নিতে খরচ পড়ে ১ টাকা ৩১ টাকা। কুরিয়ার সার্ভিসে এক টন আম ঢাকায় নিতে খরচ পড়ে ২০ হাজার টাকা। অন্যদিকে, ম্যাঙ্গো স্পেশাল ট্রেনে খরচ পড়ে মাত্র এক হাজার ১১৭ টাকা। এরপরও ট্রেনটি জনপ্রিয় হতে না পারাটা দুঃখজনক।
সোহান মাহমুদ/এসজে/এমএস