ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

গাজীপুর সিটি নির্বাচন

ভোটের মাঠে কদর বাড়ছে পোশাকশ্রমিকদের

আমিনুল ইসলাম | গাজীপুর | প্রকাশিত: ১১:৫১ এএম, ১৭ মে ২০২৩

গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে ভোটারদের কদর ততই বেড়ে চলেছে। বিশেষ করে গাজীপুর মহানগরী শিল্পাঞ্চল সমৃদ্ধ হওয়ায় ভোটের মাঠে পোশাকশ্রমিকরা ক্রমেই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছেন।

গাজীপুর সিটি করপোরেশন এলাকায় প্রায় দুই সহস্রাধিক পোশাক কারখানা আছে। এছাড়া টঙ্গী এবং কোনাবাড়ি এলাকায় বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনের (বিসিক) দুটি শিল্পনগরী আছে। এর বাইরে টঙ্গী, বোর্ড বাজার, ভোগড়া, কোনাবাড়ি, কাশিমপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় পানীয়, টেক্সটাইল, কম্পোজিট, জুতা, যন্ত্রাংশসহ বিভিন্ন ধরনের ভারী শিল্পকারখানা আছে। শ্রমিকদের বেশিরভাগের বাড়ি উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন উপজেলায়। তবে অনেকে গাজীপুরে ভোটার হয়েছেন।

গাজীপুর সিটিতে মোট ভোটার ১১ লাখ ৭৯ হাজার ৪৭৬ জন। এর মধ্যে বিপুল সংখ্যক ভোটার বিভিন্ন গার্মেন্টস ও কারখানার শ্রমিক। তাই শ্রমিকরা নির্বাচনে জয়-পরাজয়ে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে বলে মনে করছেন প্রার্থীরা। এসব ভোটারদের ভোট কেন্দ্রে টানতে চেষ্টা করে যাচ্ছেন তারা।

আরও পড়ুন: মেয়র প্রার্থীদের নজর বিএনপির ভোট ব্যাংকে

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নির্বাচনে মেয়র পদে জয়-পরাজয় নির্ধারণে শ্রমিকদের ভোট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গাজীপুর সিটি নির্বাচনে মোট ভোটারের মধ্যে ৪০ শতাংশ স্থানীয় ভোটার থাকলেও ভাসমান ভোটার আছে প্রায় ৪৫-৫০ শতাংশ। ভাসমান ভোটারদের অধিকাংশই বিভিন্ন পেশাজীবী। এর মধ্যে গার্মেন্টস ও শিল্প কারখানার শ্রমিকদের সংখ্যাই বেশি। কাজ-কর্মের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আগত এসব মানুষ এখানেই বসতি গড়ে তোলার ফলে এদের সংখ্যা একটু বেশি। তবে নির্বাচনে শ্রমিকদের ভোট যার বাক্সে বেশি পড়বে তিনিই মেয়র নির্বাচিত হবেন।

একতা গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি মো. মমতাজ উদ্দিন ভূঁইয়া জাগো নিউজকে বলেন, গাজীপুরে স্থানীয়দের চেয়ে ভাসমান পেশাজীবী ভোটারের সংখ্যা অনেক বেশি। প্রায় ৫ লাখের মতো ভাসমান ও শ্রমিক ভোটার আছেন। এরমধ্যে প্রায় চার লাখ গার্মেন্টস শ্রমিক। সিটি নির্বাচনে শ্রমিকদের এ ভোট খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ ভোট যেদিকে যাবে সেদিকের পাল্লাই ভারী হবে। ফলে ভোটের মাঠে কারখানার শ্রমিকরা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে।

তিনি আরও বলেন, গাজীপুর বর্তমানে শ্রমিক অধ্যুষিত একটি এলাকা। নির্বাচনের জয়-পরাজয়ে শ্রমিকদের ভোট একটি বড় ফ্যাক্টর। তবে শ্রমিকরা তো ভাসমান তাই চাকরির সুবাদে তারা অন্যত্র চলে গেছে এমন কিছু ভোটও আছে। তাদের ফিরিয়ে আনতে পারলে আরও কিছু ভোট বাড়বে।

আরও পড়ুন: তিনটিতে শঙ্কা, দুটিতে নির্ভার আওয়ামী লীগ

সিটি করপোরেশনের ২৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী মাওলানা মনজুর হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, অনেক শ্রমিক ভোটার আছে যাদের খুঁজে পাওয়া যায় না। কারণ তারা কর্মস্থলে যাতায়াতের সুবিধার্থে কাছাকাছি এলাকায় ভাড়া থাকেন। কর্মস্থল বদলে গেলে তাদের বসবাসের এলাকাও বদলে যায়। এসব ভোটারদের খুঁজে পাওয়া মুশকিল।

তিনি আরও বলেন, গাজীপুরে স্থানীয় ভোটার আছে। তবে নির্বাচনে মেয়র প্রার্থীর জয় অনেকটাই নির্ভর করছে শ্রমিকদের ভোটের ওপর।

গাজীপুর সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমতউল্লা খান জাগো নিউজকে বলেন, বর্তমান সরকার শ্রমিকবান্ধব। বর্তমান সরকার পোশাক শ্রমিকসহ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতনভাতা বাড়িয়েছে। নতুন করে শ্রমিকদের বেতনভাতা বাড়ানোর বিষয়টিও বিবেচনায় আছে। সরকার শ্রমিকদের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধাসহ তাদের ন্যায্য পারিশ্রমিক নিশ্চিতের বিষয়ে আশ্বাস দিয়েছেন। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সব সময় শ্রমিকদের বিপদে আপদে পাশে থাকেন। তাই শ্রমিকদের ভোট আমি প্রত্যাশা করতেই পারি।

টেবিল ঘড়ি প্রতীকের প্রার্থী জায়েদা খাতুনের প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট মো. জাহাঙ্গীর আলম জাগো নিউজকে বলেন, আমি মেয়র থাকা অবস্থায় এবং আগে পরে সব সময় শ্রমিকদের পাশে থেকেছি। কোনো কারখানার মালিক বেতন দিতে না পারলে আমি শ্রমিক ও মালিকদের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের সমস্যার সমাধান করতে চেষ্টা করেছি। শ্রমিকদের অধিকার আদায়ে সব সময় তাদের পাশে ছিলাম ও আছি। তাই আমি শ্রমিক ভাই-বোনদের কাছে আমার মায়ের জন্য ভোট প্রত্যাশা করছি।

আরও পড়ুন: বাংলাদেশের নির্বাচনের দিকে সারাবিশ্ব তাকিয়ে আছে: সিইসি

২৫ মে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ সিটিতে মোট ভোটারসংখ্যা ১১ লাখ ৭৯ হাজার ৪৭৬। এদের মধ্যে পুরুষ ৫ লাখ ৯২ হাজার ৭৬২ জন ও নারী ৫ লাখ ৮৬ হাজার ৬৯৬ জন এবং তৃতীয় লিঙ্গর ১৮জন ভোটার আছেন।

নির্বাচনে মেয়র পদে আটজন, সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ৭৮ জন এবং সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২৪৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। নির্বাচনে ৫৭টি ওয়ার্ডে ৪৮০টি ভোটকেন্দ্রে ৩ হাজার ৪৯৭টি ভোটকক্ষ থাকবে। এবারই প্রথম এ সিটিতে প্রতিটি কেন্দ্রে ভোট হবে ইভিএমে। প্রতিটি কেন্দ্রে স্থাপন করা হবে সিসি ক্যামেরা। এর আগে ২০১৮ সালে জেলা শহরের ছয়টি কেন্দ্রে ইভিএমে ভোটগ্রহণ হয়েছিল।

এসজে/জেআইএম