মোখার তাণ্ডব
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে তিন হাজার শেল্টার ক্ষতিগ্রস্ত
ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাবে উখিয়া-টেকনাফে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের মাঝে প্রায় তিন হাজার শেল্টার, তিন শতাধিক স্কুল-মাদরাসা-মসজিদ, ওয়াশ রুম, সোলার প্যানেলসহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
রোববার (১৪ মে) দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বয়ে যাওয়া ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবে এ ক্ষতি হয় বলে জানিয়েছেন ক্যাম্প মাঝিরা।
এদিকে, মোখার তাণ্ডবের পর ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন ক্ষতিগ্রস্ত রোহিঙ্গারা। স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে ক্ষতিগ্রস্ত ঘর, রাস্তাঘাট মেরামত ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ শুরু করেছেন তারা। সোমবার (১৫ মে) সকাল থেকে শুরু হয়েছে কক্সবাজারে বিমান চলাচলও।
টেকনাফের লেদা রোহিঙ্গা ক্যাম্পে মাঝি নুরুল আমিন বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোখার তাণ্ডবে টেকনাফের লেদা, আলিখালী, শালবাগান, জাদিমুরা, রেজিস্ট্রার ক্যাম্প, চাকমারকুল ও উনচিপ্রাংয়ে ১২ শতাধিকের ওপরে রোহিঙ্গাদের শেল্টারসহ শতাধিক স্কুল-মাদরাসা ও মসজিদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বিভিন্ন আসবাবপত্র ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যও। সিআইসি অফিস এবং এনজিও সংস্থার পক্ষ থেকে আমাদের সহযোগিতার জন্য তালিকা নিয়েছে। বড় ধরনের কোনো দুর্ঘটনা এখানে হয়নি।
উখিয়ার বালুখালী ক্যাম্প মাঝি মো. সেলিম বলেন, কুতুপালং, বালুখালী ও শফিউল্লাহ কাটা ক্যাম্পে রোহিঙ্গাদের এক হাজারে অধিক শেল্টারসহ স্কুল-মাদরাসা ও মসজিদ মোখার আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেইসঙ্গে ক্যাম্পের শেল্টারে আমাদের লাগানো শাকসবজি ও সোলার প্যানেল নষ্ট হয়ে যায়।
১৬ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মো. হাসান বারী নুর বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোখার তাণ্ডবে ক্যাম্পে বড় ধরনের কোনো দুর্ঘটনা ঘটেনি। আমাদের সদস্যরা সবসময় তৎপর ছিল এবং যে শেল্টারগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আমাদের পক্ষ থেকে তাদের সহযোগিতা করা হয়েছে। তাদের শেল্টার মেরামত ও ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি নিয়ে ইউএনএইচসিআর, আইএমওসহ বিভিন্ন এনজিও সংস্থা কাজ করছে।
কক্সবাজার শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কার্যালয়ের অতিরিক্ত কমিশনার ডা. মোহাম্মদ সামছুদ্দৌজা বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোখার তাণ্ডবে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এতে ২৭৮টি শেল্টার, ৩২টি লার্নিং সেন্টার, একটি স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র, ২৯টি মসজিদ-মক্তব ও ১২০টি ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া ২ হাজার ৫৪৮টি শেল্টার আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এক হাজার ৬১১ জন রোহিঙ্গা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
ঘূর্ণিঝড় চলাকালে ৫ হাজার ৩৮৬ রোহিঙ্গাকে সরিয়ে নেওয়া সম্ভব হয় উল্লেখ করেন তিনি বলেন, সরকার এবং এনজিও সংস্থার পক্ষ থেকে তাদের শেল্টার মেরামত করে দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের খাদ্যসামগ্রী দেওয়া হচ্ছে।
সায়ীদ আলমগীর/এমআরআর/জিকেএস