ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

৮ বছরেও যুক্ত হয়নি বাদ পড়া শহীদের নাম

প্রকাশিত: ০২:৪৩ পিএম, ০৭ ডিসেম্বর ২০১৪

নানা বিতর্কের কারণে গত ৮ বছর ধরে পরিত্যক্ত রয়েছে কক্সবাজারের কেন্দ্রিয় শহীদ মিনারের পাশে নির্মিত শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিস্তম্ভ। ১০ জন শহীদের নাম নিয়ে এ স্মৃতিস্তম্ভটি দাঁড়িয়ে থাকলেও বাদ পড়া শহীদের নাম অর্ন্তভুক্ত হয়নি এ ৮ বছরেও। হয়নি এটার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনও। এ কারণে অবহেলায় শহীদ মিনারের পাশে রয়েছে এ স্মৃতিস্তম্ভটি। বিজয়ের মাস ডিসেম্বরে এসে আবারো বাদ পড়া শহীদের নাম অর্ন্তভুক্তির দাবি জানিয়েছেন প্রগতিশীল রাজনৈতিক ব্যক্তি ও সংগঠকরা।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, ২০০৬ সালে প্রায় ১১ লাখ টাকা ব্যয়ে কক্সবাজারের কেন্দ্রিয় শহীদ মিনারে তৈরি করা হয় শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিস্তম্ভটি। কক্সবাজার জেলা পরিষদের অধিনে এর নিমার্ণ কাজ বাস্তবায়ন করে সরকারের গণপূর্ত বিভাগ। এতে রয়েছে ১০ জন শহীদ মুক্তিযোদ্ধার নাম। এরা হলেন, শহীদ আবদুল হামিদ, গোলাম কাদের, গোলাম সাত্তার, ক্যাপ্টেন মকবুল আহমদ, সিদ্দিক আহমদ, হাবিলদার আবুল কালাম, ইজিহার মিয়া, সিপাহী লাল মোহাম্মদ, শামসুল আলম, এস এম জাহাঙ্গীর।

নিমার্ণের পর পর শুরু হয় এ নিয়ে বির্তক। কারণ এতে স্থান পায়নি কক্সবাজারের প্রথম শহীদ মোহাম্মদ শরীফ চেয়াম্যান, শহীদ বুদ্ধিজীবী শহীদ সাবের, ঢাবির ইকবাল হলের শহীদ এটিএম জাফর আলম চৌধুরী, চট্টগ্রাম বন্দরের অস্ত্র খালাসের প্রতিবাদকালী বাঙালি সৈনিক শহীদ সিপাহী আকতার হোসাইন, এনামুল হক, শহীদ আমির হামজা, শহীদ সুভাষ, ফরহাদ, ইলিয়াছ মাস্টার, হাবিলদার রহিম বখশ, মেছের আহমদ, জোনাব আলী, ভট্ট মহাজন, সিপাহী আবুল হোসেন, মাস্টার শাহ আলম, মাস্টার আহমদ বশির, কবির আহমদ, অজিত পাল, নির্মল ধর, মোহাম্মদ আলী, পিয়ারী মহাজন, স্বপন ভট্টাচার্য, মনিন্দ্র নাথ দে, নুরুচ্ছফা চৌধুরী, জানেন্দ্র লাল চৌধুরী, সতীশ মহাজন দে, মোহাম্মদ শামসুল ইসলাম, আবদুস সাত্তার, অনিল কান্তি দাশ, শশাংক বড়ুয়াসহ অনেক শহীদ মুক্তিযোদ্ধার নাম।

২০০৬ সালে এটি নিমার্ণ শেষ হওয়ার পর পর শুরু হয় বির্তক। এ নিয়ে আন্দোলন শুরু করে ছাত্র ইউনিয়নসহ অন্যান্য প্রগতিশীল রাজনৈতিক নেতারা। তৎকালিন সময়ের ছাত্র ইউনিয়ন সভাপতি শংকর বড়ুয়া রুমি জানান, ওখানে শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের নাম বাদ পড়ায় তারা হরতালসহ নানা আন্দোলন করেন।

এমনটি জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন দফতরে বাদ পড়া শহীদের নামের তালিকাও জমা দিয়েছিলেন। তখন তাদের আশ্বাস দেয়া হয়েছিল এটি সংশোধন করা হবে। কিন্তু ৮ বছরেও তা হয়নি। আর ব্যয় বহুল স্মৃতিস্তম্ভটিও রয়েছে পরিত্যক্ত।

ওই সময়ের ছাত্র ইউনিয়ন সাধারণ সম্পাদক রিদুয়ান আলী জানান, প্রজন্মকে শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের চিহ্নিত করতে সহায়তা করবে এ স্তম্ভটি। এতে কারো নাম থাকবে কারো নাম থাকবে না তা হলে প্রজন্ম বিভ্রান্ত হবে। দ্রুত সময়ের মধ্যে এটিতে বাদ পড়া শহীদের নাম অর্ন্তভুক্ত করা জরুরি।

ছাত্র ইউনিয়নের বর্তমান সভাপতি শহিদুল্লাহ শহীদ জানান, নির্মাণ পরবর্তী স্মৃতিস্তম্ভটি দেখভালের দায়িত্ব অর্পণ করা হয় কক্সবাজার জেলা পরিষদের কাছে। নির্মাণের পরবর্তী ২০০৬ সালের ৬ এপ্রিল বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন কক্সবাজার জেলা সংসদের আন্দোলন শুরু করে। এ আন্দোলনের অংশ হিসেবে হরতালও পালন করা হয়। কিন্তু তবু সংযোগ হয়নি বাদ পড়াদের নাম। এটা প্রজন্মের সাথে প্রতারণা হচ্ছে।

মুক্তিযুদ্ধে সংগঠক ও জেলার বিশিষ্ট রাজনৈতিক নজরুল ইসলাম চৌধুরী জানান, শহীদ স্মৃতিস্তম্ভটি কারো নাম থাকবে কারো নাম থাকবে না। এটা হলে ইতিহাস কখনো আমাদের ক্ষমা করবে না। অনেক শহীদের নাম নেই তাতে। বর্তমানে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সরকার এটি আন্তরিকতা সাথে দেখবেন এটা প্রত্যাশা করা যায়।

কক্সবাজার বিজয় মেলা উদযাপন পরিষদ ২০১৪ এর চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান জানান, স্মৃতিস্তম্ভটি বাদ পড়া শহীদের নাম অর্ন্তভুক্তি বিষয় এবার বিজয় মেলা পরিষদের পক্ষে সরকারকে জানানো হবে। আশা করা যায় সরকার এটা সংশোধনের জন্য উদ্যোগ নেবেন। তবে ৮ বছর ধরে পরিত্যক্ত এ শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিস্তম্ভটি নিমার্ণ হয়েছিল কক্সবাজার জেলা পরিষদের অধিনে। যা বাস্তবায়ন করে সরকারের গণপূর্ত বিভাগ। কিন্তু এ দুই বিভাগে গিয়ে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিস্তম্ভ নিয়ে কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। তারা বলেছেন এ ফাইলটি মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ে রয়েছে।