হাওরের নতুন ধান আসছে ভৈরবে, দাম নিয়ে হতাশা
হাওরে এখন ধান কাটার ধুম চলছে। এরই মধ্যে আগাম জাতের মোটা ধান বিক্রির জন্য ট্রলারে ট্রলারে ভৈরবের মোকামে আনছেন কৃষক ও ব্যাপারীরা। হাজার হাজার মণ ধান নৌকা থেকে তুলে মেঘনা নদীর পাড়ে স্তূপ করে রাখছেন। বাজারে ক্রেতা কম থাকায় হতাশ তারা।
মঙ্গলবার সকালে কিশোরগঞ্জের ভৈরব ধানের মোকামে গিয়ে দেখা যায়, সকাল থেকেই কয়েকশ শ্রমিক নৌকা থেকে মাথায় করে ধানের বস্তা নদীর পাড়ে স্তূপ করছেন। কেউ কেউ নৌকা থেকে সরাসরি ট্রাকে তুলে দিচ্ছেন। এদিকে ভৈরবের মোকামের মালিকসহ কর্মচারীরা ব্যস্ত সময় পার করছেন।
হবিগঞ্জের আজমেরিগঞ্জ থেকে নৌকা ভর্তি ২০০ মণ মোটা ধান বিক্রি করতে ভৈরব বাজারে আসেন ব্যাপারী আক্তার মিয়া। তিনি বলেন, এ বছর প্রথম ধানের চালান নিয়ে এসেছি। প্রথমদিকে ধানের দাম বেশি ছিল। এখন ঈদের ছুটিতে মিল বন্ধ থাকায় নতুন ধানের দাম কিছুটা কমে গেছে। বাজারে ক্রেতা খুবই কম। আশা করছি সপ্তাহ খানেক পর বাজারে ক্রেতার সংখ্যা বাড়লে ধানের দরও বাড়বে।
ভৈরব বাজারের গঙ্গা যমুনা শস্য ভান্ডারে কর্মচারী নান্টু সাহা বলেন, বৈশাখের শুরুর এ সময়ে হাওর অঞ্চলের ইটনা, মিঠামইন, অষ্ট্রগ্রাম, হবিগঞ্জের আজমেরিগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকার নতুন ধান ভৈরবের মোকামে আসে। এখন শুধু হাওর এলাকা থেকে আগাম জাতের মোটা ধান বিক্রির জন্য আনছে। শুরুর দিকে বাজারে ভেজা ধান প্রতি মণ ৭৬০-৭৭০ টাকা দরে বিক্রি হতো। কিন্তু ঈদ উপলক্ষে মিল কারখানা বন্ধ থাকায় ধানের দাম কিছুটা কমে গেছে। এ সপ্তাহের বাজারে মোটা ধান প্রতি মণ ৭১০ -৭২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
মোকামের আড়ত মালিক আলী হোসেন বলেন, বৈশাখের শুরুতে কৃষকরা কাঁচা ধান কেটে বিক্রির জন্য এখানে আসেন। বাজারে ক্রেতা কম থাকায় ধানের দাম কম।
আশুগঞ্জ রাইস মিল মালিক খোরশেদ মিয়া বলেন, দুমাস রাইস মিল বন্ধ ছিল। এখন চালু করলেও কাঁচা ধান কিনে শুকাতে হবে। এতে ওজন কমে যাবে। নতুন ধান আমদানি হলে চালের বাজার দর কমে যায়। ফলে ধানের দাম কমে গেছে। শুকনো ধান আমদানি হলেই দাম বাড়বে। এতে চিন্তার কোনো কারণ নেই।
ভৈরব চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি মো. হুমায়ূন কবির জাগো নিউজকে বলেন, নৌকাযোগে ভৈরব বাজারে হাওর এলাকা থেকে প্রতিদিন হাজার হাজার মণ ধান আসছে। ঈদ উপলক্ষে মিল বন্ধ থাকায় বাজারে ক্রেতা নেই। ফলে নদীর পাড়ে ধানের স্তূপ করে রাখছেন ব্যবসায়ীরা। ক্রেতা কম বলেই ধানের দাম কমে গেছে।
এ বিষয়ে ভৈরব উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আকলিমা বেগম জাগো নিউজকে বলেন, প্রতি বছর বৈশাখের শুরুতে ধানের দাম কমে যায়। এতে হতাশ হওয়ার কিছু নেই। তিনি বলেন কাঁচা ধানের দাম কমই থাকে। ৭০০ টাকা মণ দরে বিক্রি করলে শুকাতে ৯০০ টাকা দর পড়ে। তাই কৃষকরা লোকসানে ধান বিক্রি করছে কথাটি সঠিক নয়।
ভৈরব খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. সালাউদ্দিন ভূইঁয়া জাগো নিউজকে বলেন, সরকার খাদ্য গুদামে ধান চাল কেনা এখনো শুরু করেনি। তবে এ বছর সরকারিভাবে প্রতি কেজি চালের দাম নির্ধারণ হরেছে ৪৪ টাকা এবং ধান ৩০ টাকা। সরকার ধান চাল ক্রয় শুরু করলে দাম বাড়বে। এতে হতাশ হওয়ার কিছু নেই।
এসজে/জেআইএম