দ্রুত কিডনি প্রতিস্থাপন না করালে বাঁচানো যাবে না জাকিরকে
দুটি কিডনিই নষ্ট হয়ে গেছে জাকির হোসেনের (২৭)। সপ্তাহে দু’বার ডায়ালাইসিস করতে হচ্ছে তাকে। এদিকে জাকির হোসেনকে বাঁচাতে দ্রুত কিডনি প্রতিস্থাপনের পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসক। এজন্য প্রয়োজন ৩০ লাখ টাকা। কিন্তু এত টাকা দরিদ্র পরিবারের পক্ষে যোগাড় করা অসম্ভব। তাই নিজের জীবন বাঁচাতে বিত্তবানদের সহযোগিতা কামনা করেছেন অসহায় এই যুবক।
জাকির হোসেন জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার পোগলদিঘা ইউনিয়নের পোগলদিঘা গ্রামের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কৃষক জুরান শেখ ও জামফুল বেগমের বড় ছেলে। ২০১৯ সালে তার কিডনি রোগ দেখা দেয়। পরে চিকিৎসকরা জানান তার দুটি কিডনিই নষ্ট হয়ে গেছে। বর্তমানে কিডনি ডায়ালাইসিস করে বেঁচে আছেন তিনি, যা অত্যন্ত ব্যয়বহুল। খুব দ্রুতই কিডনি প্রতিস্থাপনের পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসক।
জাকির হোসেন জানান, এক সময় তিনি স্থানীয় একটি বাজারে ইলেক্ট্রিক মিস্ত্রি হিসেবে কাজ করতেন। ওই সময় বাবার পাশাপাশি সংসারের হাল ধরলেও এখন কিছুই করতে পারেন না তিনি। এদিকে তার সংসারেও দেড় বছরের একটি মেয়ে রয়েছে। তাদের ভরণপোষণসহ কোনোরকম সংসার চালিয়ে নিচ্ছেন বাবা জুরান শেখ। কিডনি ডায়ালাইসিস অত্যন্ত ব্যয়বহুল। সপ্তাহে আট হাজার টাকা লাগে। প্রায় ৮ মাস ধরে চলছে এই চিকিৎসা। এতদিন চিকিৎসা খরচ চালিয়ে আজ তারা নিঃস্ব।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে জাকিরের মা জামফুল বেগম জাগো নিউজকে বলেন, ছেলের জীবন বাঁচাতে নিজের একটি কিডনি দিতে চেয়েছিলেন তিনি। ডাক্তাররা বলেছেন তার কিডনির অবস্থা ভালো না। তাই অন্য একজন ডোনার খুঁজতে বলেছেন। নতুবা ২৫-৩০ লাখ টাকা যোগাড় করতে বলেছেন চিকিৎসকরা। কিন্তু এতো টাকা কোথায় পাবেন তারা। যা ছিল তা এ কয়েকমাসে ডায়ালাইসিস করেই শেষ হয়ে গেছে। ডাক্তার বলেছেন যত দ্রুত সম্ভব কিডনি প্রতিস্থাপন করা না গেলে ছেলেকে বাঁচানো যাবে না। তাই সমাজের বিত্তবানদের প্রতি সহযোগিতার আহ্বান জানান তিনিও।
জাকিরের স্ত্রী রুপা বলেন, এক সময় স্বামী-সন্তান নিয়ে ভালোই ছিলাম। কিন্তু এখন প্রতি মুহূর্তেই শঙ্কা নিয়ে বেঁচে আছি। ডাক্তার বলেছেন কিডনি প্রতিস্থাপন করা না গেলে স্বামীকে বাঁচানো সম্ভব না। এতে প্রায় ৩০ লাখ টাকা খরচ হবে। যা তাদের পরিবারের পক্ষে যোগাড় করা সম্ভব নয়।
পোগলদিঘা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আশরাফুল আলম মানিক বলেন, বিষয়টি তিনি জানেন। কিছুদিন আগে তাকে সহযোগিতা করা হয়েছে। জাকির সমাজসেবা অধিদপ্তরে আবেদন করেছেন। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তাকে আরও সহযোগিতা করা হবে।
সরিষাবাড়ী উপজেলা সমাজসেবা অফিসার আরিফুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, বিষয়টি তার জানা নেই। তবে তিনি আবেদন করে থাকলে যাচাই বাছাই করে তারপর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উপমা ফারিসা মুঠোফোনে জাগো নিউজকে বলেন, সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে এসব রোগীদের সহযোগিতা করা হয়ে থাকে। যদি জাকির পাওয়ার যোগ্য হন তাহলে তাকে অবশ্যই সহযোগিতা করা হবে।
জামালপুর সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপপরিচালক রাজু আহমেদ বলেন, এ ধরনের রোগীদের কিছুদিনের মধ্যে অনুদান দেওয়া হবে। যদি তিনি আবেদন করে থাকেন তাহলে যাচাই বাছাই করে দেখা হবে।
এফএ/জেআইএম