ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের ‘সময়ক্ষেপণ’, প্রাণ গেলো মা ও নবজাতকের

জেলা প্রতিনিধি | পঞ্চগড় | প্রকাশিত: ০৫:৫২ পিএম, ০২ এপ্রিল ২০২৩

পঞ্চগড়ের বোদায় সুরমা জেনারেল হাসপাতাল নামের একটি ক্লিনিকে চিকিৎসকের অবহেলায় প্রসূতি ও নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় প্রসূতির স্বজনরা শনিবার (১ এপ্রিল) রাতে ক্লিনিকের সামনে বিক্ষোভ করেন।

অবস্থা বেগতিক দেখে অভিযুক্ত চিকিৎসকরা পালিয়ে যান। পরে বোদা থানাপুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে এ ঘটনায় থানায় কোনো অভিযোগ করা হয়নি।

প্রসূতির স্বজন ও স্থানীয়রা জানান, ঠাকুরগাঁওয়ের রাজাগাঁও চাপাতি এলাকার কমল চন্দ্র রায় তার প্রসূতি স্ত্রী সাবিত্রী রানীকে (২২) শনিবার বিকেলে বোদার সুরমা জেনারেল হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভর্তি করেন। প্রসূতির শারীরিক অবস্থা জানিয়ে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনাও করেন তিনি। ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ প্রসূতিকে ভর্তি করে চিকিৎসক না থাকায় সময়ক্ষেপণ করতে থাকে। সন্ধ্যার পর অস্ত্রোপচার কক্ষে নেওয়া হয়। সেখানে বোদা মাতৃমঙ্গল কেন্দ্রের গাইনি সার্জারি চিকিৎসক রহমতউল্লাহসহ দুজন চিকিৎসক ছিলেন।

এর কিছুক্ষণের মধ্যে প্রসূতির শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে কাউকে কিছু না বলে চিকিৎসকরা চলে যান। ঘণ্টাখানেক পরে প্রসূতির স্বজনদের ডেকে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ প্রসূতিকে অন্যত্র নিয়ে যেতে বলে। একপর্যায়ে কাউকে কিছু না জানিয়ে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষই অ্যাম্বুলেন্স ডেকে বোদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠায়। তবে এর আগেই নবজাতকসহ ওই প্রসূতি মারা যান। এসময় চিকিৎসকের অবহেলায় মৃত্যুর অভিযোগে স্বজন ও স্থানীয়রা বিক্ষোভ করেন।

স্থানীয়রা জানান, বোদা উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা অফিসের ইউনিয়ন পরিবার কল্যাণ সহকারী সুরমা বেগম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পাশেই ‘সুরমা জেনারেল হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার’ নামে ক্লিনিকটি স্থাপন করেন। অনুমোদন না পেলেও স্থানীয় প্রভাব খাটিয়ে তিনি ক্লিনিকের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। শনিবার রাতের ঘটনায় থানায় কোনো অভিযোগ করা হয়নি। প্রভাব ও অর্থের বিনিময়ে সংশ্লিষ্টরা ঘটনাটির সমঝোতা করেছেন বলে জানা গেছে।

এ বিষয়ে বোদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক আনন আফসান বলেন, গর্ভবতী ওই নারীকে রাত ৮টার পর হাসপাতালে আনা হয়। এর আগেই তার মৃত্যু হয়েছিল। পরে পরীক্ষা করে দেখা যায়, নবজাতকও মারা গেছে।

ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের ‘সময়ক্ষেপণ’, প্রাণ গেলো মা ও নবজাতকের

বোদা মাতৃমঙ্গল কেন্দ্রের গাইনি সার্জারি চিকিৎসক রহমতউল্লাহ বলেন, ‘আমরা ক্লিনিকে গিয়ে প্রসূতির অবস্থা ভালো নয় বুঝতে পারি। পরে সঙ্গে সঙ্গে তাকে ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতাল নেওয়ার জন্য স্বজনদের পরামর্শ দেই।’

এ বিষয়ে সুরমা জেনারেল হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের পরিচালক সুরমা বেগম বলেন, ‘আমরা রোগীর গায়ে হাতও দেইনি। ডাক্তাররা তাকে দেখার সঙ্গে সঙ্গে অন্যত্র রেফার করে দেন। প্রসূতির স্বজনরা আমাদের কথা শোনেননি।’

বোদা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুজয় কুমার রায় বলেন, প্রসূতির পরিবার অভিযোগ করলে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জানতে চাইলে বোদা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এসআইএম রাজিউল করিম বলেন, যথাযথ কাগজপত্র না থাকায় ক্লিনিকটি একসময় বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। পরে তারা রেজিস্ট্রেশনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দেয়। এজন্য সেখানে আবারও চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু করে।

সফিকুল আলম/এসআর/জেআইএম