ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

এক হাতে ভর করে বিবিএ পাস: চাকরি চান প্রতিবন্ধী কামরুল

জেলা প্রতিনিধি | মৌলভীবাজার | প্রকাশিত: ০২:১০ পিএম, ২৮ মার্চ ২০২৩

আছে শুধু বাম হাত। ওই এক হাত দিয়েই উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হয়েছেন কামরুল হাসান। স্বপ্নবাজ কামরুলের জীবনের গল্প অবাক করার মতো। দুই পা নেই তার। তবুও নিজের পায়ে দাঁড়ানোর প্রবল ইচ্ছা তার।

জীবনযুদ্ধে অদম্য কামরুল হাসান মৌলভীবাজার জেলার রাজনগর উপজেলার দূরবর্তী চেলারচক গ্রামের বাহার আলীর ছেলে।

এলাকায় গেলে দেখা হয় কামরুলের সঙ্গে। টিলার ওপর কামরুলদের ঘর। প্রতিদিন প্রয়োজনের তাগিদে কামরুলকে কষ্ট করে ওঠানামা করতে হয়।

কথা হলে কামরুল জাগো নিউজকে বলেন, ইচ্ছা শক্তি আমাকে অনেক দূর এগিয়েছে। প্রতিবন্ধকতা আমাকে দমিয়ে রাখতে পারেনি। আমি সবকিছু স্বাভাবিক মনে করে চলাফেরা করি। মা-বাবার বড় ছেলে আমি। পঙ্গুত্বের অভিশাপ দমাতে না পারলেও বেকারত্বের অভিশাপ বয়ে বেড়ানো বড়ই কষ্টের। তাই প্রতিবন্ধী হিসেবে সমাজকল্যাণ অধিদপ্তরে আমার যোগ্যতা অনুযায়ী একটা চাকরি চাই।

ইচ্ছাশক্তির জোরেই সিলেটের মদন মোহন কলেজ থেকে ২০২০ সালে কামরুল বিবিএ পাস করেন। এর আগে এসএসসি ও এইচএসসিতেও সফলতার স্বাক্ষর রাখেন তিনি। চলতি শিক্ষাবর্ষে ওই একই কলেজ থেকে কামরুল মাস্টার্স পরীক্ষার রেজিস্ট্রেশন করেছেন।

কামরুলের মা রছনা বেগম জাগো নিউজকে বলেন, আমার ছেলে জন্ম থেকে প্রতিবন্ধী। ছোটবেলা থেকেই লেখাপড়ায় আগ্রহী ছিল সে। সেই আগ্রহ থেকে এখন উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হয়েছে। একটা চাকরি হলেই ছেলের ও আমার কষ্ট সফল হবে। আমার ৩ ছেলে ও ২ মেয়ে। কামরুল সবার বড়। সংসারের দায়িত্ব এখন তার ওপর।

এক হাতে ভর করে বিবিএ পাস: চাকরি চান প্রতিবন্ধী কামরুল

হার না মানা কামরুল নিজেকে স্বাভাবিক মানুষই মনে করেন। শক্ত মনোবল নিয়েই চলাফেরা করেন তিনি। খেলেন ব্যাডমিন্টন, ক্যারাম ও ক্রিকেটসহ বিভিন্ন খেলা।

কামরুলের বন্ধু সৌরভ জাগো নিউজকে বলেন, কামরুল এক হাত দিয়ে বল করতে পারে, ব্যাটিংয়েও কম নয়। ক্যারাম ও ব্যাডমিন্টনসহ অন্যান্য খেলাও খেলতে পারে সে।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধি রকিব আলী জাগো নিউজকে বলেন, প্রতিবন্ধীদের মাঝে এমন উদ্যোম খুব কমই দেখা যায়। কামরুল আমার এলাকার অন্যরকম এক উদাহরণ। ছেলেটা অনেক ভালো। সে পারতো ভিক্ষাবৃত্তি করতে। কিন্তু তা না করে সে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে। তার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট বিভাগকে এগিয়ে আসার প্রত্যাশা করছি।

রাজনগর উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা আজাদুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, চাকরির ব্যাপারে স্থানীয়ভাবে আমাদের কিছু করার নেই। তবে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হলে সে যেন পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে।

আব্দুল আজিজ/এফএ/জেআইএম