ভুয়া পরিচয়ে মেহেরপুরে বিয়ে, মামাশ্বশুরের বাইক নিয়ে পালান আরাভ
আপন জুয়েলার্সের মালিকের ছেলে পরিচয়ে মেহেরপুরের এক তরুণীর সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন দুবাইয়ের আলোচিত স্বর্ণ ব্যবসায়ী আরাভ খান। নিজেকে ‘আপন’ নামে পরিচয় দিয়ে ওই তরুণীকে প্রেমের ফাঁদে ফেলেছিলেন তিনি। শেষ পর্যন্ত তরুণীর সঙ্গে তার বিচ্ছেদ হয়েছিল। তবে পুলিশ পরিদর্শক হত্যা মামলার আসামি হতে হয়েছে ওই তরুণীকে।
ভুক্তভোগী তরুণীর নাম সুরাইয়া আক্তার কেয়া। তার বাড়ি মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার গাড়াডোব গ্রামে। তরুণীর মামা কামরুজ্জামান খান জাগো নিউজকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আরও পড়ুন: দুবাই পালানোর আগে আরাভ খান থাকতেন কলকাতার বস্তিতে!
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০১৩ সালে এসএসসি পাস করেন কেয়া। তখন তিনি মায়ের সঙ্গে ঢাকায় থাকতেন। ভর্তি হন ঢাকার একটি ম্যাটস কলেজের প্যাথলজি বিভাগে। কলেজে পড়াকালীন প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে আপন ওরফে আরাভের সঙ্গে। ২০১৪ সালে কেয়া গ্রামে বেড়াতে আসেন। এর একদিন পর আপন ওরফে আরাভ তার এক বন্ধুকে নিয়ে কেয়াদের বাড়িতে যান। পরদিন কেয়ার মামার একটি ডিসকভার ১৫০ সিসি মোটরসাইকেল ও কেয়াকে নিয়ে পালিয়ে যান আরাভ খান। পালিয়ে বিয়ে করে তারা ঢাকায় বসবাস শুরু করেন। মোটরসাইকেল আর মেয়ে নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় কেয়ার পরিবারের সঙ্গে তাদের সুসম্পর্ক ছিল না।
সুরাইয়া আক্তার কেয়ার মামা কামরুজ্জামান খান জাগো নিউজকে বলেন, ‘পুলিশ পরিদর্শক হত্যা মামলার আসামি হিসেবে গ্রেফতার হয়েছিল কেয়া। জামিনে মুক্ত হয়ে সে আরাভকে ডিভোর্স দেয়। পরে দ্বিতীয় বিয়ে করে কেয়া পাড়ি জমায় মালয়েশিয়ায়।’
আপন ওরফে আরাভ কেয়ার জীবন তছনছ করে দিয়েছেন বলে মন্তব্য করেন তিনি।
আরও পড়ুন: ক্যামেরা চুরির মামলার আসামি আরাভ খান, করেছেন একাধিক বিয়ে
কথা হয় কেয়ার বাবা আবুল কালাম আজাদের সঙ্গে। তিনি জানান, কেয়ার মা তার খালাতো বোন। তার নাম মনোয়ারা বেগম। ১৯৯৬ সালে মনোয়ারার সঙ্গে তার বিয়ে হয়। এরপর থেকেই তাদের সংসার জীবন ভালোই চলছিল। ২০০০ সালে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে একটি মামলায় জেল হয় আবুল কালাম আজাদের। তখন কেয়ার বয়স মাত্র তিন বছর। মাঝে মধ্যে মেয়েকে নিয়ে তাকে দেখতে যেতেন তার স্ত্রী। কিন্তু দীর্ঘদিন জেলে থাকার কারণে তাদের সংসারে ফাটল ধরে। এরই মধ্যে বড় হতে থাকেন কেয়া।
২০১১ সালে জেল থেকে বের হয়ে আসেন আবুল কালাম। এসে শোনের তার স্ত্রী তাকে তালাক দিয়েছেন। কিন্তু কোনো কাগজপত্র ছাড়ায়। পরে মেয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করতে চাইলেও পারেননি। স্ত্রী মনোয়ারা খাতুন বিয়ে করেন উজলপুর গ্রামের একজনের সঙ্গে। পরে তারা ঢাকায় চলে যান।
আসিফ ইকবাল/এসআর/এমএস