ভারত থেকে পালিয়ে এলো নীলগাই
দিনাজপুরের বিরল উপজেলার ধর্মপুর শালবনে আবারও ভারতের কাঁটাতারের বেড়া ডিঙিয়ে একটি নীলগাই চলে এসেছে। নীলগাইটি দেখার জন্য শালবনে ভিড় করছে এলাকাবাসী।
ধর্মপুর বিট কর্মকর্তা মহসিন আলী ভারত থেকে নীলগাই আসার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে কিংবা শুক্রবার সকালে কোনোভাবে ভারতের কাঁটাতারের বেড়া ডিঙিয়ে একটি নীলগাই বাংলাদেশের অভ্যন্তরে শালবনে প্রবেশ করে। সকালে বিরল উপজেলার ৮ নম্বর ধর্মপুর ইউনিয়নের ধর্মপুর শালবনে শুকনা পাতা সংগ্রহ করতে গিয়ে এলাকার লোকজন সেটিকে দেখতে পায়। পরে তারা বন প্রহরীদের বিষয়টি জানায়। প্রহরীদের মাধ্যমে খবর পেয়ে শালবনে গিয়ে নীলগাইটিকে দেখতে পাই।
আরও পড়ুন: নীলগাই ধরে জবাই করলো এলাকাবাসী
মহসিন আলী বলেন, নীলগাইটিকে ধরার জন্য এলাকার লোকজন বনের বিভিন্ন স্থানে ঘোরাঘুরি শুরু করে। পরে প্রাণীটিকে কেউ যেন না ধরে এবং আঘাত বা বিরক্ত না করে সেজন্য এলাকার প্রতিটি মসজিদের মাইকে মাইকিং করা হয় এবং জুমার নামাজের আগে বলে দেওয়া হয়। এ খবর শনিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে উৎসুক লোকজনের ভিড় বেড়ে যায়। বিভিন্ন জায়গা থেকে তারা নীলগাই দেখার জন্য ভিড় জমায়। এতে করে প্রাণিটি আতঙ্কিত হয়ে ছুটে বেড়াচ্ছে। শনিবার নীল গাইটিকে ধর্মপুর শালবনসহ আশপাশের ধানক্ষেতে ঘুরে বেড়াতে দেখা গেছ।
এদিকে, স্থানীয় সাংবাদিক এম এ কুদ্দুস তার ফেসবুক ওয়ালে নীলগাইয়ের ছবি দিয়ে লিখেছেন, দিনাজপুরের বিরল ধর্মপুর শালবনে আবারও ভারত থেকে একটি নীলগাই প্রবেশ করেছে। নীলগাইটি বর্তমানে শালবনে অবস্থান করছে।
আরও পড়ুন: রামসাগরে জুটি বাঁধছে বিলুপ্ত নীলগাই
তিনি আরও লিখেছেন, নীলগাইটির প্রতি যে অত্যাচার চলছে এটাও যেন শেষ মুহূর্তে মরে না যায়। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি দেওয়া প্রয়োজন।
এ বিষয়ে শনিবার (১১ মার্চ) বিকেলে কথা হয় বিট কর্মকর্তা মহসিন আলীর সঙ্গে। তিনি বলেন, নীলগাইটি এখনো ধর্মপুর শালবনে রয়েছে। নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বন প্রহরীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে এবং সার্বক্ষণিক পাহারা দেওয়া হচ্ছে।
আরও পড়ুন: ছুটে গিয়ে জবাই থেকে রক্ষা পেল দুই নীলগাই
এর আগে ২০২২ সালের ১৭ মার্চ সকালে বিরল উপজেলার ধর্মপুর ইউনিয়নের কামদেবপুর সীমান্ত এলাকায় ভারতের কাঁটাতারের বেড়া ডিঙিয়ে একটি নীলগাই বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে। স্থানীয়রা দীর্ঘসময় ধরে নীলগাইটিকে ধরার জন্য ধাওয়া করলে বিকেলে সেটি অসুস্থ হয়ে পড়ে। খবর পেয়ে ধর্মজইন বিজিবি ক্যাম্পের জোয়ানরা অসুস্থ নীলগাইটিকে ক্যাম্পে নিয়ে গেলে সেখানেই মারা যায়। পরে বন বিভাগ ও প্রাণিসম্পদের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে নীলগাইটির ময়নাতদন্ত শেষে মাটি চাপা দেওয়া হয়।
এমদাদুল হক মিলন/এমআরআর/জেআইএম