পাবনায় বট-পাকুড়ের বিয়ে, ছিল ভূরিভোজ
বর ধর্ম বৃক্ষ কল্যাণীয় (পাকুড়), বাবা পুলক কুমার চাকি। কনে কল্যাণীয়া বটেশ্বরী দেবী (বট), বাবা সাগর কুমার পাল। পাকুড় গাছকে মুখোশ, ধূতি, পাঞ্জাবি পরিয়ে বর সাজানো হয় আর পাশের বটগাছকে মুখোশ ও শাড়ি পরিয়ে কনে সাজানো হয়। বর-কনের জন্য সাজানো হয় বিয়ের আসরও। অতিথিদের জন্য টাঙানো হয় বিশাল প্যান্ডেল।
এভাবেই বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) রাতে পাবনার ভাঙ্গুড়া কেন্দ্রীয় মহাশ্মশানে ঘটা করে বট-পাকড়ের বিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিয়ে শেষে ছিল ভূরিভোজের আয়োজন।
স্থানীয়রা জানান, দুটি গাছ পাশাপাশি জায়গায়। একটি বট অন্যটি পাকুড়। দুটি গাছেরই বয়স প্রায় ১৮ বছর। গাছে এবার ফলও ধরেছে। আয়োজকদের ইচ্ছে ছিল ফল ধরার সময় দুই গাছের বিয়ে দেওয়ার। সে পরিকল্পনা অনুযায়ী বেশ ঘটা করে তাদের বিয়ের আয়োজন করা হয়।
বর-কনের আসরে একদিকে কনে পক্ষের যজ্ঞ ও পূজা অর্চনা অপর দিকে চলে বরপক্ষের যজ্ঞ ও পূজা অর্চনা। সঙ্গে বাদ্যযন্ত্রের বাজনা। বিয়ের প্রস্তুতি হিসেবে ছিল কলার ছড়া, শাড়ি, ধূতি, লুঙ্গি, গামছা, লাল সালু কাপড়, পান-সুপারি, সিঁদুর-আবির, পৈতা- মালা, কনের জন্য প্রসাধন সামগ্রী, মিষ্টি, হলুদ, নারিকেল, ছাতা, বর-কনের পাদুকা, মাটির হাড়ি-পাতিলসহ আসবাবপত্র।
আয়োজনে কোনো কিছুরই কমতি ছিল না। বর-কনের পক্ষে আগত বর-কন্যা যাত্রীদের দেওয়া হয় বিভিন্ন রকম উপঢৌকন। বট-পাকুড়ের বিয়ে দেখতে কয়েকশ অতিথিও আসেন। এলাকাজুড়ে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করে। দিনভর আনুষ্ঠানিকতা শেষে রাতে বর-পাকুড়ের বিয়ে হয়।
বট-পাকুড়ের বিয়ের পুরোহিত প্রদীপ কুমার গোস্বামী বলেন, সব জীবের মঙ্গল কামনায় এ আয়োজন করা হয়।
আয়োজক পুলক কুমার চাকী ও সাগর কুমার পাল জানান, বৃক্ষ এ পৃথিবীকে ভালো রাখে এবং বৃক্ষের মাধ্যমে সৃষ্টিকর্তা সব জীবের আহার দেন। আমার পূর্ব পুরুষরাও এ যজ্ঞ করতেন। বংশ পরম্পরায় আমরা করছি। স্থানীয়দের কাছে এটা বট-পাকুড়ের বিয়ে হিসেবেই পরিচিত।
আমিন ইসলাম জুয়েল/এসজে/জিকেএস