ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

ধু ধু বালুচরে কুমড়া বিপ্লব

জেলা প্রতিনিধি | লালমনিরহাট | প্রকাশিত: ০৯:৪৫ পিএম, ০৯ মার্চ ২০২৩

তিস্তার রুপালি বালুচর ঢেকে গেছে সবুজ পাতায়। কয়েক দফার বন্যা ও ভয়াবহ ভাঙনে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে তিস্তায় জেগে ওঠা চরে কোমর বেঁধে চাষাবাদ শুরু করেছেন তিস্তাপারের কৃষকরা। চরের বুকে ফলানো হচ্ছে মিষ্টিকুমড়া, বাদাম, গম, ভুট্টা, ধান, মরিচ, পেঁয়াজ, আলু, মসুর ও তিলসহ বিভিন্ন ধরনের শাকসবজি। বেলেমাটিতে এ যেন সবুজের বিপ্লব।

তিস্তার দৈর্ঘ্য ৩১৫ কিলোমিটার হলেও বাংলাদেশ অংশে পড়েছে ১৬৫ কিলোমিটার। ভারতের গজলডোবায় বাঁধ নির্মাণ করে সেই দেশের সরকার একতরফা তিস্তার পানি নিয়ন্ত্রণ করায় এ তিস্তা নদী প্রতিবছর মরুভূমিতে পরিণত হয়। বর্ষা মৌসুমে নদীতে খরস্রোত থাকলেও হেমন্তে তিস্তার বুকে জেগে ওঠে অসংখ্য বালুচর। সেই বালুচরে ফসল ফলিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে চান তিস্তাপারের হাজারো কৃষক।

ধু ধু বালুচরে কুমড়া বিপ্লব

বর্ষায় নদীর দুই কূল উপচিয়ে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি করে। একইসঙ্গে ভাঙনের মুখে পড়ে বিলীন হয় ফসলি জমি, বসতভিটাসহ স্থাপনা। প্রতি বছর নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসে বর্ষার বিদায় বেলায় ধু ধু বালুচরে পরিণত হয় তিস্তা নদী।

বন্যা আর ভাঙনের চরাঞ্চলের মানুষ জীবন-জীবিকার তাগিদে জেগে ওঠা বালুচরেই ফসল চাষাবাদ করেন। চরাঞ্চলের জমিতে খিরা, তরমুজ, বাদাম চাষ হলেও মিষ্টিকুমড়ার কদর বেশি। চরাঞ্চলের বালুতে মিষ্টিকুমড়ার চাষাবাদে খরচ কম এবং ফলন বেশি হওয়ায় এ ফসলে বেশি আগ্রহ চাষিদের। এখানকার মিষ্টিকুমড়ার দেশ-বিদেশে প্রচুর চাহিদা রয়েছে।

ধু ধু বালুচরে কুমড়া বিপ্লব

লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার শোলমারী চর এলাকার কৃপা রানী বলেন, দুই বিঘা জমিতে কুমড়া ক্ষেতে ফলন আসতে শুরু করেছে। তিস্তার পানি না থাকায় শ্যালো মেশিনের মাধ্যমে সেচ দিচ্ছি। আশা করছি গতবছরের তুলনায় এবছর দ্বিগুণ মিষ্টিকুমড়া বিক্রি হবে।

হাতীবান্ধা উপজেলার গড্ডিমারী ইউনিয়নের দোয়ানি গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য আয়নাল হক বলেন, তিস্তার পানি কমে যাওয়ার পর জেগে ওঠা চরে বিভিন্ন ফসল চাষাবাদ করা যায়। আমি এবার মিষ্টিকুমড়া, ভুট্টা, আলু, পেঁয়াজ, রসুন আবাদ করেছি। প্রতিটি গাছে ৯-১০টি করে কুমড়া এসেছে। আশা করছি তিন মাসের কুমড়া চাষে ২০ হাজার টাকা আয় হবে।

ধু ধু বালুচরে কুমড়া বিপ্লব

তিস্তাচরের কৃষক জামাল হোসেন বলেন, জেগে ওঠা চরে প্রায় পাঁচ বিঘা জমিতে ভুট্টা, আলু, পেঁয়াজ চাষাবাদ করেছি। প্রতি বিঘা জমিতে ৪০ মণ ভুট্টা আসবে। গতবারের মতো ভুট্টার দাম পেলে দ্বিগুণ লাভবান হবে।

ধু ধু বালুচরে কুমড়া বিপ্লব

লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ হামিদুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, এবার তিস্তার চরে প্রায় আট হাজার হেক্টর জমিতে চাষাবাদ করা হয়েছে। চরের কৃষকরা বেলেমাটিতে ফসল ফলিয়ে অভাব দূর করছেন।

রবিউল হাসান/এসআর/জেআইএম