ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

বাজারে দাম নেই, ক্ষেতেই পচছে ফুলকপি-বাঁধাকপি

মাহাবুর রহমান | প্রকাশিত: ১১:০৪ এএম, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

 

চলতি মৌসুমে ১৮ বিঘা জমিতে বিভিন্ন প্রকার সবজি চাষ করেছেন দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলার কৃষক হামিদুল ইসলাম। এর মধ্যে ১২ বিঘা জমিতে ফুলকপি ও বাঁধাকপি চাষ করেন তিনি। দাম না থাকায় উৎপাদিত ফসল বাজারে বিক্রি করতে পারছেন না তিনি। ফলে পোকার আক্রমণে ক্ষেতেই নষ্ট হচ্ছে এসব ফসল।

রোববার (২৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে উপজেলার মাউনপুর মাঠে গিয়ে দেখা যায়, বিঘার পর বিঘা চাষ হয়েছে ফুলকপি আর বাঁধাকপির। কিন্তু পোকার আক্রমণে ক্ষেতেই পচছে। আশপাশের অনেক গ্রামবাসী এসব ফসল নিয়ে যাচ্ছেন গো-খাদ্য হিসেবে।

jagonews24

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কৃষক হামিদুল ইসলাম ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসে বাংলাদেশ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীনে জাতীয় সবজি মেলা দেশের শ্রেষ্ঠ সবজি চাষির পুরস্কার পান। এ সময় পুরস্কার হিসেবে নগদ ১০ হাজার টাকা এবং একটি ক্রেস্টও পান।

কৃষক হামিদুল বলেন, আমার নিজের তেমন কোনো জমি নেই। অন্যের জমি বর্গা নিয়ে সারা বছর সবজি চাষ করি। আমি পরিবেশবান্ধব জৈব প্রযুক্তি ব্যবহার করে প্রচলিত ও অপ্রচলিত নিরাপদ সবজি চাষ করি। আমার আবাদি ফসলগুলো এলাকার চাহিদা মিটিয়ে ঢাকাতেও রপ্তানি করি। এবার ফুলকপি ও বাঁধাকপির পাশাপাশি ভুট্টাও আবাদ করেছি। আলাদা জমিতে হাইব্রিড শসা, করলা, মিষ্টি কদু, শিম, পেঁয়াজ, বেগুন, রসুন আবাদ করেছি।

jagonews24

কৃষক হামিদুলের দাবি, ‘বাজারে এ ফসলের কোনো দাম নেই। পাইকাররা প্রতি পিচ ফুলকপি আর বাঁধাকপি ১ টাকা বলে। শ্রমিক দিয়ে জমি থেকে ফসল তুলে বাজারে নিতেই চার থেকে পাঁচ টাকা খরচ পড়ে। এখন পোকার আক্রমণে ১২ বিঘা জমির বাঁধাকপি ও ফুলকপি ক্ষেতেই নষ্ট হচ্ছে। এতে আমার লোকসান গুনতে হচ্ছে। এলাকাবাসী গরুকে খাওয়ানোর জন্য তুলে নিয়ে যাচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ঢাকায় পাইকারদের সঙ্গে কথা বলেছি, তারা আমাকে তিন টাকা প্রতিপিস দাম দিতে চায়। অথচ আমার জমি থেকে ঢাকায় পৌঁছাতে খরচ হবে ১০ টাকার বেশি। উপজেলা কৃষি অফিসের সঙ্গে অনেক যোগাযোগ করেছি তারা আমাকে কোনো সহায়তা করেনি।’

স্থানীয় কৃষক আব্দুল হান্নান বলেন, হামিদুল এ এলাকার বড় কৃষক। আরো কিছুদিন আগে যদি ফসল বিক্রি করতো তাহলে কিছুটা রেহায় পেত। এখন পচন ধরেছে। সর্বনাশ হয়ে গেলো। ছেলেটা কীভাবে চলবে।

জমিতে কাজ করা শ্রমিক আবুল হোসেন বলেন, আমরা ১০ থেকে ১২ জন শ্রমিক প্রতিদিন হামিদুলের বিভিন্ন সবজির জমিতে কাজ করি। প্রতিদিন আমাদের সাড়ে ৪ হাজার টাকা দেনে তিনি। আমরা তো বুঝি। অন্যজমির ফসল বিক্রি করে তিনি আমাদের টাকা পরিশোধ করেন। খারাপ লাগলেও আমাদের কিছু করার নেই। আমরা গরিব মানুষ।

jagonews24

তিনি আরও বলেন, আবাদি কপিগুলো একেবারেই নষ্ট হয়ে গেছে। এলাকাবাসী নিয়ে গরুকে খাওয়াচ্ছে।

আরেক ফুলকপি চাষি আশরাফ আলী বলেন, দুই বিঘা জমিতে ফুলকপির চাষ করেছি। প্রতি বছর এ সময় এ ফসলের দাম ভালো পেয়ে থাকি। এবার উল্টো, বাজারে দামই নাই। বাজারে নিয়ে গেলে আরও লস। তাই গ্রামের মানুষও তুলে নিয়ে গরু-ছাগলদের খাওয়াচ্ছে।

বিরামপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ফিরোজ আহম্মেদ জাগো নিউজকে বলেন, আমি নতুন এসেছি। বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া।

এসজে/জিকেএস