ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

পরকীয়ার জেরে বাবার হাতেই খুন হয় শিশু ইশা

জেলা প্রতিনিধি | নাটোর | প্রকাশিত: ০৬:৪৭ পিএম, ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

নাটোরের লালপুরে প্রতিবেশী এক নারীর সঙ্গে পরকীয়ায় লিপ্ত অবস্থায় বিরক্ত করায় মেয়েকে থাপ্পড় মেরে ফেলে দিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করেন বাবা। রোমহর্ষক এই হত্যাকাণ্ডের ২০ মাস পরে পুলিশের দীর্ঘ তদন্তে ঘটনার রহস্য উদঘাটিত হয়।

শনিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক হীরেন্দ্রনাথ প্রামাণিক এ ঘটনায় নিহত শিশুর বাবা ও তার পরকীয়া প্রেমিকাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেছেন।

অভিযুক্তরা হলেন, নিহত শিশুর বাবা লালপুর উপজেলার সাধুপাড়া গ্রামের ইনছার আলীর ছেলে ইলিয়াস আলী (৩১), তার পরকীয়া প্রেমিকা নূর উদ্দিনের স্ত্রী শোভা খাতুন (৩৫) এবং মো. ইসলাম আলী মোল্লার স্ত্রী শেফালী বেগম (৪৮)।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক হীরেন্দ্রনাথ প্রাামাণিক জানান, ২০২২ সালের ১৫ মার্চ সকালে ইলিয়াস আলী তার মেয়ে ইরিন সুলতানা ঈশাকে নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে প্রতিবেশী শোভা খাতুনের বাড়িতে যান। এসময় মেয়েকে সিঁড়ির ওপর দাঁড় করিয়ে ওই নারীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের চেষ্টাকালে মেয়ে ঈশা বাবাকে ধরে টানাটানি শুরু করে। এতে ইলিয়াস আলী উত্তেজিত হয়ে ঈশাকে থাপ্পড় দেন। ঈশা মাটিতে পড়ে কান্নার শুরু করলে ইলিয়াস মেয়ের গলা চেপে ধরে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন।

পরে ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে ঈশার মরদেহ কোলে নিয়ে প্রতিবেশী মোছা. শেফালী বেগমের (৪৮) বাড়ির সামনে বেলকনির সিঁড়ির ওপর ফেলে যান। কিছু সময় পরে শেফালী বের হয়ে ঈশার মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে আতঙ্কিত হয়ে বাড়ির বাইরে টয়লেটের মধ্যে রেখে দেন।

কিছুক্ষণ পর ঈশার মা মেয়েকে খোঁজাখুঁজি করলে একপর্যায় শেফালী ভয়ে মরদেহ বস্তায় ভরে বাড়ির পাশে ডোবায় ফেলে দেন। এদিকে, ঈশার মা অনেক খোঁজাখুঁজি করেও মেয়েকে না পেয়ে স্বামী ইলিয়াস আলীকে মোবাইলফোনে বিষয়টি জানান।

ইলিয়াস আলী বাড়িতে এসে ঘটনাটি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে স্থানীয় মসজিদের মাইকে প্রচারণা চালান এবং থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। অন্যদিকে, প্রতিবেশীরা রাস্তা দিয়ে যাওয়ার পথে ডোবায় বস্তাবন্দি মরদেহ দেখতে পেয়ে থানায় খবর দেন। পরে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠায়।

লালপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহা. মোনোয়ারুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, এ ঘটনায় পুলিশ দীর্ঘ তদন্তের একপর্যায়ে পরকীয়া সম্পর্কের সন্দেহে শোভা খাতুনকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার সত্যতা বেরিয়ে আসে।

ওসি বলেন, বর্তমানে শোভা জামিনে আছেন। অপর দুই আসামি ঈশার বাবা ইলিয়াস আলী ও শেফালী পলাতক আছেন। তাদের গ্রেফতারে চেষ্টা চলছে।

রেজাউল করিম রেজা/এমআরআর/এমএস