দিনাজপুরে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে পুলিশ
দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে অর্ধশত বাড়িতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়িয়েছে পুলিশ।
শনিবার (২৮ জানুয়ারি) দুপুরে ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামে গিয়ে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে তিন শতাধিত কম্বল বিতরণ করা হয়েছে।
এসময় হাকিমপুর সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার শরিফুল ইসলাম এবং ঘোড়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু হাসান কবির উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া এলাকায় শান্তি বজায় রাখতে এবং সম্প্রীতি ধরে রাখতে ৪ নম্বর ইউপি চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান ভুট্টুকে প্রধান করে ২৫ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করেছে পুলিশ।
এর আগে গত বুধবার সকালে উপজেলার ৪ নম্বর ঘোড়াঘাট উপজেলার খোদাদপুর গ্রামে জমিজমা নিয়ে বিরোধের জেরে মিম ও রাকিব নামে দুই যুবককে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করা হয়। ঘটনার একদিন পর নিজ গ্রামে নিহতদের দাফন শেষে প্রায় অর্ধশতাধিক বাড়িতে আগুন দেওয়া হয়। চালানো হয় ভাঙচুর ও লুটপাট।
ওই গ্রামের বাসিন্দা ফিজু মিয়া বলেন, আমাদের গ্রামের মারা যাওয়া দুই যুবকের জানাজায় আশপাশের বিভিন্ন গ্রামের লোকজন অংশগ্রহণ করেছিল। নামাজ শেষে তারাই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটিয়েছে। এই ঘটনায় আমাদের গ্রামের কেউ জড়িত ছিল না।
তারেকুজ্জামান নামে আরেকজন বলেন, আমরা তো সন্তান হারানোর শোকে শোকাহত। শোক নিয়ে আমরা কেন মানুষের বাড়িতে আগুন লাগাতে যাব? আমার মনে হয় কোনো একটি চক্র হত্যা ঘটনার মোড় ঘোড়াতে এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটিয়েছে।
আগুনে পুড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হাবিবুর রহমান বলেন, আমরা উভয়পক্ষ দীর্ঘদিন থেকে শান্তিতে বসবাস করে আসছিলাম। তবে দুঃখজনক একটি ইস্যুকে কেন্দ্র করে কারা আমাদের বাড়িঘরে আগুন দিলো, তাদের শনাক্ত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান ভুট্টু বলেন, সম্প্রীতি কমিটিতে আমাকে প্রধান করা হয়েছে। আমরা উভয়পক্ষকে নিয়ে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে শান্তি বজায় রাখতে চেষ্টা করছি। আশা করছি, সবকিছু আবার আগের মতো স্বাভাবিক হবে।
ঘোড়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু হাসান কবির বলেন, এলাকায় শান্তি বজায় আছে। আমরা পুলিশ সুপারের নির্দেশে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে কম্বল বিতরণ করেছি।
তিনি আরও বলেন, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। আমরা ভিডিও ফুটেজ পর্যালোচনা করে এবং আমাদের সাদা পোশাকের পুলিশ সদস্যদের মাধ্যমে প্রকৃত অপরাধীদের শনাক্তের চেষ্টা করছি।
এদিকে, এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে একটি হত্যা মামলা করেন নিহত মিমের বাবা। ঘটনার দিনই পুলিশ ওমর আলী, তার স্ত্রী মোমেনা বেগম এবং ছেলে শামিরুল ইসলামকে গ্রেফতার করে। পরে আজাহার আলী নামে আরও এক আসামিকে গ্রেফতার করে র্যাব। আরেক আসামিকে গ্রেফতারে চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ।
মো. মাহাবুর রহমান/এমআরআর/জেআইএম