ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

জাজিরায় সড়ক দুর্ঘটনা

তছনছ সাংবাদিক মাসুদ রানার সাজানো সংসার

জেলা প্রতিনিধি | বরিশাল | প্রকাশিত: ০২:৩৭ পিএম, ১৭ জানুয়ারি ২০২৩

শরীয়তপুরের জাজিরায় ঢাকা-ভাঙ্গা মহাসড়কে ট্রাকের সঙ্গে অ্যাম্বুলেন্সের সংঘর্ষে তছনছ হয়ে গেছে সাংবাদিক মাসুদ রানার (৩৮) সাজানো সংসার।

মঙ্গলবার (১৭ জানুয়ারি) ভোর ৪টায় জাজিরা উপজেলার নাওডোবা এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় সাংবাদিক মাসুদ রানাসহ পাঁচজন নিহত হয়েছেন।

শরীয়তপুরের জাজিরায় ঢাকা-ভাঙ্গা মহাসড়কে একটি গ্যাস সিলিন্ডারবাহী ট্রাকের সঙ্গে অ্যাম্বুলেন্সের সংঘর্ষে ছয়জন নিহত হয়েছেন। নিহতরা হলেন জাহানারা বেগম (৫৫), তার মেয়ে লুৎফুন নাহার লিমা (৩০), স্বাস্থ্যকর্মী ফজলে রাব্বি (২৮), গাড়িচালক জিলানি (২৮), গাড়ির হেলপার রবিউল ইসলাম (২৬) ও সাংবাদিক মাসুদ রানা (৩০)।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বরিশাল থেকে অ্যাম্বুলেন্সে রোগী ও স্বজনদের নিয়ে ঢাকার দিকে যাচ্ছিল মাসুদ রানা। পথে জাজিরায় পদ্মা সেতু টোলপ্লাজার কাছে গতিনিরোধক পার হতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি ট্রাকের পেছনে ঢুকে দুমড়ে-মুচড়ে যায় অ্যাম্বুলেন্সটি। এতে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান ছয়জন।

আরও পড়ুন: জাজিরায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৬

পরিবার সূত্রে জানা গেছে, মাসুদ রানা ও তার স্ত্রী মালা রাখাইনের দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্কের পর বিয়ে। বিয়ের পর স্ত্রীকে উপহারস্বরূপ ‘কাচ্চিখানা’ নামে একটি রেস্টুরেন্ট করে দেন তিনি। প্রতিদিনের মতো আজ সকালেও রেস্টুরেন্টে যাওয়ার কথা তার স্ত্রী মালা রাখাইনের। অথচ সে জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অপেক্ষা করছেন তার স্বামীর লাশের জন্য।

মাসুদ রানার স্বজন মেহেদী বলেন, তাদের তিন বছরের সাজানো সংসার ছিল। তাদের কোনো সন্তান ছিল না। ভালোই চলছিল দিনকাল। কিন্তু একটি সড়ক দুর্ঘটনা সবকিছু তছনছ করে দিয়েছে, যা কোনো ভাবেই আমরা মানতে পারছি না।

মেহেদী আরও বলেন, আমরা এখন মাসুদ ভাইয়ের স্ত্রীসহ জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আছি। এখান থেকে মরদেহ নিয়ে তার নিজ গ্ৰামের বাড়ির দিকে রওয়ানা হবো। তার গ্ৰামের বাড়ি জেলার আগৈলঝাড়া উপজেলার রাজিহার ইউনিয়নে। এছাড়া মাসুদ রানা ও মালা রাখাইন বরিশাল নগরীর ব্রাউন কম্পাউন্ড রোড এলাকায় একটি বাসায় ভাড়া থাকতো।

আরও পড়ুন: টানা ২৬ ঘণ্টা গাড়ি চালিয়ে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন চালক

সাংবাদিক মাসুদ রানা দৈনিক নবচেতনা পত্রিকার বরিশাল ব্যুরোর দায়িত্বে ছিলেন। পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন।

মাসুদ রানার মৃত্যুতে বরিশাল সাংবাদিক অঙ্গনে বইছে শোকের মাতম। সহকর্মীর মৃত্যুর সংবাদ যেন কোনো ভাবেই কেউ মেনে নিতে পারছেন না।

মাসুদ রানার সহকর্মী সৈয়দ মেহেদী হাসান বলেন, মাসুদ রানার মতো পরোপকারী বন্ধুসুলভ মানুষ খুব কমই ছিল। প্রতিদিন দেখা সাক্ষাৎ হতো, বিভিন্ন স্থানে একসঙ্গে প্রোগ্ৰামে যেতাম। হঠাৎ করেই তার মৃত্যুর সংবাদ শুনে বাকরুদ্ধ হয়ে গেছি। আগামী শুক্রবারও আমাদের একসাথে একটি প্রোগ্ৰাম করার কথা ছিল।

আরেক সহকর্মী এন আমিন রাসেল বলেন, মাসুদ আমার বন্ধু ছিল। প্রতিদিন কাজ শেষে একসঙ্গে আড্ডা দিতাম। ওর মতো ভালো বন্ধু হারিয়ে আমরা সহকর্মীরাসহ পুরো বন্ধুমহল শোকাহত।

আরও পড়ুন: বাগেরহাটে বৃদ্ধকে কুপিয়ে হত্যা, পলাতক ৩ আসামি গ্রেফতার

 

জেএস/জিকেএস