ঠাকুরগাঁওয়ে গম চাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন কৃষক
ঠাকুরগাঁওয়ে গম চাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন কৃষক। ফলে গত কয়েক বছরে ধীরে ধীরে এ অঞ্চলে কমেছে গম চাষ।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, ২০১৬-১৭ চাষ মৌসুমে জেলায় ৬৭ হাজার ৮২০ হেক্টর জমিতে গম চাষ হয়। ২০১৭-১৮ চাষ মৌসুমে ৬১ হাজার হেক্টর, ২০১৮-১৯ চাষ মৌসুমে ৫০ হাজার ২২০ হেক্টর, ২০১৯-২০ চাষ মৌসুমে ৫০ হাজার ৬৫০ হেক্টর, ২০২০-২১ চাষ মৌসুমে ৪৭ হাজার ৪৫০ হেক্টর, ২০২১-২২ চাষ মৌসুমে ৪৫ হাজার ১৯২ হেক্টর জমিতে গম চাষ হয়।
আরও পড়ুন: কমেছে গম চাষ, ভুট্টায় ঝুঁকছেন কৃষক
চলতি চাষ মৌসুমে জেলায় ৪৪ হাজার ৬৯৯ হেক্টর জমিতে গম চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়। এ বছর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৮ হাজার ৪২ হেক্টর জমিতে গমের চাষ কমেছে। চলতি মৌসুমে জেলা জুড়ে গম চাষ হয়েছে ৩৬ হাজার ৬৯৯ হেক্টর জমিতে।
এর মধ্যে সদর উপজেলায় ৯ হাজার ৬৪৭ হেক্টর, বালিয়াডাঙ্গীতে ১০ হাজার ১৪০ হেক্টর, পীরগঞ্জে আট হাজার ২০০ হেক্টর, রাণীশংকৈলে চার হাজার ৭৫০ হেক্টর ও হরিপুরে তিন হাজার ৯২০ হেক্টর জমিতে গম চাষ হয়েছে।
কৃষকরা জানান, জেলায় গমের চেয়ে ভুট্টা ও আলু বেশি উৎপাদন হয়। তাই আলু-ভুট্টা ও সরিষা চাষ করছেন কৃষকরা। এছাড়াও বীজ সংকট, বীজ পেতে ভোগান্তি, বীজ ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের কারণে চড়া দাম, গম ব্যবসায়ীদের অসাধু সিন্ডিকেট সরকারের নির্ধারিত দামে কৃষকদের অখুশিসহ নানা সমস্যা উঠে আসে কৃষকদের মুখে।
আরও পড়ুন: ঠাকুরগাঁওয়ে স্কুল মাঠে গম চাষ
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার আকচা মুন্সিপাড়া গ্রামের কৃষক আবুল হোসেন বলেন, এক বিঘা জমিতে গম উৎপাদন খরচ হয় প্রায় ১০ হাজার টাকা। বিঘাপ্রতি ৩০ মনের বেশি গম পাওয়া যায় না। এতে লাভ কম হয়। তাই আলু উত্তোলনের পর আগাম ভুট্টা চাষ করেছি।
রাণীশংকৈলের গোগড় এলাকার কৃষক ইয়াসিন আলী বলেন, যেসব জমি আগে গমে ভরে থাকতো সেসব জমিতে এখন ভুট্টাসহ অন্যান্য ফসল দেখা যায়। আমি এ বছর পাঁচ বিঘা জমিতে গম আবাদ করছি। বীজ কিনতে যে ভোগান্তিতে পড়েছি আগামী বছর চাষে ইচ্ছে হবে না।
বাংলাদেশ গম-ভুট্টা গবেষণা ইন্সটিটিউটের সহকারী বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম জানান, একজন কৃষক আলু উত্তোলন করেই জমিতে গম চাষ করতে পারেন। গম কাটাইয়ের পর ভুট্টা চাষ করতে পারেন। একই জমিতে বোরো ধানও চাষ করতে পারেন। এ ক্ষেত্রে কৃষক বেশি লাভবান হতে পারেন।
আরও পড়ুন: যমুনার চরাঞ্চলে গমের বাম্পার ফলন
বিএডিসির বীজ বিক্রয় ও বিতরণ কর্মকর্তা এনামুল হক জানান, জেলায় বিএডিসির ১৬১ জন বীজ পরিবেশক রয়েছেন। যাদের এ বছর ৫৫৭ টন বীজ বরাদ্দসহ বিএডিসির বুথ থেকে ৪০ টন বীজ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. আব্দুল আজিজ বলেন, গম চাষ কমলেও এসব জমিতে সরিষা ও ভুট্টার চাষ হচ্ছে। জমি ফাঁকা নেই। সরিষার পরে কৃষকরা বোরো আবাদ করবে।
আরএইচ/জেআইএম