ডান্ডাবেড়ি-হাতকড়া নিয়েই মায়ের জানাজা পড়ালেন বিএনপি নেতা
গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলায় তিন ঘণ্টার জন্য প্যারোলে মুক্তি পেয়ে মায়ের জানাজায় অংশ নিয়েছেন আলী আজম নামের এক বিএনপি নেতা।
ডান্ডাবেড়ি ও হাতকড়া নিয়েই মঙ্গলবার (২০ ডিসেম্বর) সকালে মায়ের জানাজা নিজেই পড়িয়েছেন তিনি। আলী আজম উপজেলার বোয়ালী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি।
স্বজনরা জানান, আলী আজমের মা সাহেরা বেগম (৬৭) বার্ধক্যজনিত কারণে রোববার বিকেলে মারা যান। শেষবারের মতো মাকে দেখতে ও মায়ের জানাজা নিজে পড়াতে আইনজীবীর মাধ্যমে সোমবার বিকেলে জেলা প্রশাসকের কাছে প্যারোলে মুক্তির আবেদন করা হয়। কিন্তু ওই দিন দাপ্তরিক কাজ শেষ না হওয়ায় মঙ্গলবার তিন ঘণ্টার জন্য প্যারোলে মুক্তি পান তিনি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, প্যারোলে মুক্তি পেয়ে সকাল ১০টার দিকে নিজ বাড়ির পাশে মায়ের জানাজাস্থলে উপস্থিত হন আলী আজম। বেলা ১১টায় হয় জানাজা। মায়ের দাফন শেষে আবার কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। পুরোটা সময় হাতকড়া ও ডান্ডাবেড়ি পরা অবস্থায় ছিলেন আলী আজম।
এদিকে মায়ের জানাজার সময়ও আলী আজমের ডান্ডাবেড়ি ও হাতকড়া খুলে না দেওয়ায় উপস্থিত মুসল্লি ও স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এর একাধিক ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে সমালোচনার সৃষ্টি।
আলী আজমের ভাই আতাউর রহমান বলেন, ‘জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করলে ভাইকে প্যারোলে মুক্তি দেওয়া হয়। জানাজা পড়ানোর সময় তার হাতকড়া ও ডান্ডাবেড়ি খুলে দিতে বলা হয়েছিল। কিন্তু পুলিশ খুলে দেয়নি।’
উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক পারভেজ আহমেদ বলেন, ‘মায়ের মৃত্যুর খবরে আলী আজমকে প্যারোলে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু দুঃখের বিষয় জানাজার সময়ও তার হাতকড়া ও ডান্ডাবেড়ি খুলে দেওয়া হয়নি। একটি মিথ্যা মামলায় অভিযুক্ত হয়ে একজন রাজনৈতিক নেতাকে এভাবে উপস্থাপন সঠিক হয়নি।’
এ বিষয়ে গাজীপুর জেলা কারাগারের সুপার মোহাম্মদ বজলুর রশিদ জাগো নিউজকে বলেন, আলী আজমকে নয়জন পুলিশ সদস্যসহ তার বাড়িতে পাঠানো হয়েছিল। সরকারের উচ্চ পর্যায়ের নির্দেশনা অনুযায়ী এবং জেল আইন অনুযায়ী তাকে পাঠানো হয়েছিল। নিরাপত্তার জন্যই হয় তো তাকে ডান্ডাবেড়ি ও হাতকড়া পরানো হয়েছিল।
কালিয়াকৈর উপজেলার চন্দ্রা ত্রিমোড় এলাকায় গত ২৯ নভেম্বর আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে হামালার অভিযোগে বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে করা মামলা হয়। ওই মামলায় ২ ডিসেম্বর গ্রেফতার হন আলী আজম।
মো. আমিনুল ইসলাম/এসজে/এমএস