ভাসানীর মতো মানুষ আর আসবে না: কাদের সিদ্দিকী
মওলানা ভাসানীর মতো মানুষ এই অঞ্চলে আর জন্মাবে কিনা জানি না। সারাজীবন তিনি মানুষের জন্য কাজ করেছেন। একজন অসহায় এতিমের মতো তিনি টাঙ্গাইলে এসেছিলেন। ছোটবেলায় তিনি বাবা মাকে হারিয়েছিলেন। নাসির উদ্দিন বাগদারির কাছে কিছু সময় থেকে বড় হয়েছেন। এসব কথা বলেছেন, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি বঙ্গবীর আবদুল কাদের সিদ্দিকী।
বৃহস্পতিবার (১৭ নভেম্বর) সকাল পৌনে ১০টায় মাওলানা ভাসানীর ৪৬তম শাহাদাত বার্ষিকীতে টাঙ্গাইল শহরের সন্তোষের মাজারে ফুল দেওয়ার পর তিনি এসব কথা বলেন।
বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলেন, ১৯৫৭ সালের মহাসম্মেলনে আমি টাঙ্গাইল থেকে দৌড়ে সন্তোষে এসেছি, আবার গিয়েছি। হুজুর ভাসানীসহ যারাই দেশের মানুষের জন্য কাজ করেছেন, তাদের কাউকেই যথাযথ মর্যাদা দেওয়া হয়নি। ভাসানীর কবরের পাশে যে মসজিদ আছে, সেটি দেশের মধ্যে অবহেলিত, অনাদৃত মসজিদ। সব কিছু কেমন যেন খাপছাড়া খাপছাড়া ভাব।
তিনি বলেন, আমরা যে চিন্তা আর ভালবাসা নিয়ে স্বাধীনতা অর্জন করেছিলাম, আজকে তার কিছুই নেই। মানুষের স্বাধীনতা এটাকে বলে না। শুধু কথা বলতে পারাই স্বাধীনতা নয়। মানুষের স্বাধীনতা হচ্ছে মানুষের মর্যাদাবোধ, মানবিকবোধ, ভালবাসা।
দুঃখ প্রকাশ করে কাদের সিদ্দিকী বলেন, কাগমারি থেকে ভাসানীর মাজার পর্যন্ত আসলাম রাস্তায় তেমন কেউ নেই। মনে হচ্ছিলো দেশটা কেমন ঘুরে গেলো। মানুষের অন্তরে যদি শ্রদ্ধা ভালবাসা থাকতো তাহলে ভাসানীর মৃত্যু স্বার্থক হতো। মানুষকে সম্মান করতে হবে, প্রবীণদের সম্মান করা শিখতে হবে। ভাসানীর মতো মানুষকে যদি আমরা যথাযথ সম্মান দিতে না পারি তাহলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সম্মান দিতে পারবো না। খুব কষ্ট হয়, যখন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকে তখন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু, বিএনপি ক্ষমতায় এলে জাতির পিতা হবে জিয়াউর রহমান, আবার কখনও জাতীয় পার্টি ক্ষমতায় এলে জাতির পিতা হুসাইন মুহাম্মদ এরশাদও হতে পারে।
এই যে আমাদের দ্বৈন্দতা এখান থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। মানুষের অভাব বুঝতে হবে, মানুষের কষ্টকে হৃদয় দিয়ে লালন করতে হবে, তাহলেই মওলানা ভাসানীর জন্মদিন, মৃত্যুদিন পালনের স্বার্থক হবে।
মওলানা ভাসানীর ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় করার খুব শখ ছিল। শেষ পর্যন্ত সেটা মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় হয়েছে। এখান থেকে যদি মানুষ তৈরি হয়, মানুষের সেবক তৈরি হয়, তাহলে মনে হবে হুজুরের চাওয়া স্বার্থক হয়েছে। আমাদের শ্রদ্ধা স্বার্থক হয়েছে।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন কৃষক শ্রমিক জনতালীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান খোকা বীরপ্রতীকসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা।
আরিফ উর রহমান টগর/জেএস/এমএস