ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং
নৌকা ভেঙে মানবেতর জীবন কাটছে শতাধিক জেলের
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের আঘাতে চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে জেলেদের অন্তত ২৩টি মাছ ধরার ইঞ্জিনচালিত নৌকা ও মেশিন ভেঙে গেছে। জীবিকা নির্বাহের একমাত্র অবলম্বন হারিয়ে মানবেতর জীবন কাটছে ওই এলাকার শতাধিক জেলের। এতে প্রায় অর্ধকোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি তাদের।
ক্ষতিগ্রস্ত জেলে ও স্থানীয়রা জানান, ২৪ অক্টোবর রাতে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে বামনসুন্দর সুইস গেট (বসুন্ধরা ৩ নম্বর গেইট) ও সাহেরখালী ঘাট এলাকার নিমাই জলদাশ, রায়মোহন জলদাশ, সুমন জলদাশ, ভীম জলদাশ, আলতাফ হোসেন, শওকত হোসেন, সুরেশ চন্দ্র দাস, নিমাই চন্দ্র দাস, ইসমাইল হোসেন, ছোটন চন্দ্র দাস, দয়াল হরি, সুসিন্দ জলদাশ, মানিক জলদাস, নেপাল জলদাশ, সুরেশ জলদাশ, মোশারফ হোসেন, মান্নান, শুমঙ্গল জলদাশ ও জদু দাশ, মানিক জলদাশ, শচীন্দ্র জলদাশ, জগন্নাথ জলদাশের নৌকা ভেঙে যায়। এসব বোটে প্রায় শতাধিক জেলে জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন।
সুরেশ চন্দ্র দাশ নামের ইঞ্জিনচালিত নৌকা মালিক বলেন, দুই লাখ টাকা ঋণ নিয়ে একটি নৌকা কিনেছিলাম। ২৪ তারিখ রাতে ঘাটে বাঁধা ছিল নৌকাগুলো। সিত্রাংয়ের প্রভাবে আমার নৌকাটি ভেঙে তছনছ হয়ে গেছে। এখন কী করবো কিছু বুঝতেছি না।
তিনি আরও জানান, যতক্ষণ নৌকা আছে ততক্ষণ আমাদের প্রাণ আছে। নৌকা দিয়ে সাগর থেকে মাছ ধরে সেটি বিক্রি করে সংসার চালাই। নৌকা ভেঙে যাওয়ায় আমার ছেলে-মেয়েগুলো অনেক কান্না করছে। এগুলো মেরামতের জন্য অনুদান চাই।
মানিক জলদাশ বলেন, ঋণ নিয়ে আমরা এ ব্যবসা করতেছি। সরকারের কাছে আমাদের একটা চাওয়া তিনি যেন আমাদের একটু সহযোগিতা করেন তাহলে আমরা একটু সচল ভাবে চলতে পারতাম। কারণ আমরা যেটা নিয়ে খাবো সেটা তো ভেঙে গেছে। তাই আমরা সাহায্য চাই সরকারের কাছে।
উপজেলার মঘাদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর হোসাইন মাস্টার বলেন, ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত সব জেলে আমার ইউনিয়নের বাসিন্দা। তাদের জীবিকা নির্বাহের একমাত্র অবলম্বন হারিয়ে জেলে পরিবারগুলো এখন নিঃস্ব।
এ বিষয়ে উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা নাসিম আল মাহমুদন বলেন, উপকূলীয় বামনসুন্দর ঘাট ও সাহেরখালী ঘাটে জেলেদের মাছ ধরার ২৩ ইঞ্জিনচালিত নৌকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তারা ক্ষতিপূরণ চেয়ে আমার কাছে লিখিতভাবে আবেদন করেছেন। তাদের আবেদনের প্রেক্ষিতে আমি ৩০ অক্টোবর জেলা মৎস্য অফিসে একটি চিঠি দিয়েছি। ক্ষতিপূরণের ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি।
আরএইচ/এমএস