ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

ধস নেমেছে ঠাকুরগাঁওয়ের পোলট্রি শিল্পে

প্রকাশিত: ১১:৫৪ এএম, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

খাদ্য, ওষধ, বাচ্চা ও পোলট্রি উপকরণসহ আনুষঙ্গিক অন্যান্য সবকিছুর দাম বেড়ে যাওয়ায় ঠাকুরগাঁওয়ে পোলট্রি শিল্পে ধস নেমেছে। ফলে বন্ধ হয়ে গেছে জেলার বেশির ভাগ পোলট্রি খামার। বেকার হয়ে পড়েছেন এ শিল্পের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত শতশত শ্রমিক-কর্মচারী।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, বর্তমান সরকারের যথাযথ নজরদারি না থাকায় সম্ভাবনাময় এ শিল্পটি ধ্বংসের পথে।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার খালেকুজ্জামান সুমন, মনির হোসেন, স্বপনসহ অনেকে জানান, বিপুল সম্ভাবনাময় এ শিল্প অলাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। আর রোগবালাই, বাচ্চা, খাদ্য ও উপকরণের মূল্যবৃদ্ধি হয়েছে দ্বিগুণ। সেখানে চার বছর আগেও একটি লেয়ারের বাচ্চার দাম ছিল ১৫/১৬ টাকা। বর্তমানে সেই বাচ্চার দাম ৮০/৮৫ টাকা হয়েছে। একই ভাবে ১৮/২০ টাকার বয়লার বাচ্চা ৭০/৭৫ টাকা ও সোনালি জাতের বাচ্চা ১৫ টাকা থেকে বেড়ে বর্তমানে ৪৫ টাকা হয়েছে বলেও জানান তারা।

Poltre

তাছাড়া ১৫ টাকা কেজির বেডিফিট ৩৮/৪০ টাকা, পোলট্রি খাদ্য তৈরির উপকরণ ভুট্টা ১৩ টাকা থেকে বেড়ে ২৭ টাকা, সয়াবিন প্রতি কেজি ২৬ টাকা থেকে বেড়ে ৫৫ টাকা ও মিটবোন মিল ৩২ টাকা থেকে ৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

মুরগির খাবারের দাম প্রসঙ্গে তারা আরো জানান, গত বছর প্রতি বস্তা প্রোটিন মাল্টি সি`র দাম ছিল ১৩ শত থেকে ১৪ শত টাকা। আর এ বছর দুই হাজার ৪০০ টাকা। মিথুইনাইনের দাম ছিল প্রতি বস্তা ২৫০০ টাকা এ বছর তা হয়েছে ১২ হাজার টাকা। লাইসিনের দাম ছিল প্রতি বস্তা তিন হাজার টাকা তা বর্তমানে সাত হাজার টাকা। ঝিনুক প্রতি বস্তা ৩০০ টাকার পরিবর্তে ৪০০ টাকা। যার ফলে উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি পাওয়ায় অতীতের সব রেকট ভেঙে প্রতি হালি ডিম এখন ৩৬/৪০ টাকা এবং প্রতি কেজি মুরগি ১৮০/২০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

ক্ষুদ্র ও মাঝারি পুঁজির পোলট্রি খামারি আব্দুল হান্নান হানু, মমিনুর রহমানসহ অনেকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সরকারি কোনো নীতিমালা না থাকায় ভারতীয় ডিম, বাচ্চা ও ওষুধে বাজার সয়লাব হয়ে গেছে। ফলে প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে লোকসানের ভার কাধে নিয়ে ক্ষুদ্র ও মাঝারি পোলট্রি শিল্পগুলো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। তাই ভুক্তভোগীরা এ শিল্প রক্ষায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আর্কষণ করেছেন।

Poltre

ঠাকুরগাঁও জেলা পোলট্রি খামার মালিক সমিতির নেতা মহেবুল্লাহ চৌধুরী আবু নূর জানান, জেলার প্রায় ৮০ ভাগ খামার বন্ধ হয়ে গেছে। আর বাকি ২০ ভাগ মরার পথে। বেকার যুবকরা ঋণ নিয়ে খামার করেছিল আর হঠাৎ করে খাদ্যদ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় তা বন্ধ হয়ে গেছে।

তিনি আরো জানান, রোগবালাই নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে চিকিৎসা নেয়ার মতো এখানে কোনো ভ্যাটিনারি সার্জন নেই।

এ ব্যাপারে ঠাকুরগাঁও জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম জানান, খাদ্য ও ওষুধের মূল্যবৃদ্ধিতে ক্ষুদ্র খামারিরা লোকসানের মুখে পড়ছেন। ফলে বর্তমানে এ জেলার অনেকেই খামার বন্ধ করে দিতে চাইলেও প্রাণিসম্পদ বিভাগের কর্মচারীরা মাঠ পর্যায় যথারীতি তদারকি করে ও পরামর্শ দিয়ে খামারিদের লাভবান করার চেষ্টা করেছেন।

রবিউল এহ্সান রিপন/এআরএ/এমএস