ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

রোহিঙ্গা শুমারির কাজ শুরু ১২ ফেব্রুয়ারি

প্রকাশিত: ০৩:৫১ এএম, ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে কক্সবাজারে শুরু হচ্ছে অনিবন্ধিত রোহিঙ্গা তালিকাভুক্তিকরণ। মার্চের শেষ সপ্তাহেই চলবে শুমারির চূড়ান্ত কাজ। সরকার ঘোষিত এই শুমারি সফল করতে উখিয়ার কুতুপালং এলাকায় বসবাসরত অনিবন্ধিত আরাকানী রোহিঙ্গাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন পরিসংখ্যান ব্যুরোর কক্সবাজার স্টাটিস্টিক অফিসের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ ওয়াহিদুর রহমান।

আরাকানী রোহিঙ্গা শরনার্থী কল্যাণ পরিষদের সভাপতি অ্যাডভোকেট নুরুল আমিনের সভাপতিত্বে সভায় পরিসংখ্যান কর্মকর্তা বলেন, সরকার দেশের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা অনিবন্ধিত রোহিঙ্গাদের নির্দিষ্ট নীতিমালার মধ্যে নিয়ে আসার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। ইতোমধ্যে সরকার দেশব্যাপি অনিবন্ধিত রোহিঙ্গা শুমারি করার ঘোষণা দিয়েছে। যারা শুমারির অন্তর্ভুক্ত হবে তারা সরকারিভাবে বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা ভোগ করবে।

আরাকানী রোহিঙ্গা শরনার্থী কল্যাণ পরিষদের আয়োজনে সভায় তিনি বলেন, আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে জেলায় শুমারির প্রাথমিক কাজ শুরু হবে। শুমারি শেষে আইওএমএ’র পক্ষ থেকে সকলকে দেয়া হবে নির্দিষ্ট পরিচয়পত্র। যেটিতে প্রত্যেকের রোহিঙ্গা পরিচয় লিপিবদ্ধ থাকবে। এই পরিচয়পত্র বহনকারী ব্যক্তি শিক্ষা, চিকিৎসাসেবা, চলাফেরার নিরাপত্তাসহ সব ধরনের মানবিক অধিকার ভোগ করবে। তাছাড়া যে কোন জায়গায় অনর্থক হয়রানি থেকে বাঁচাতেও পরিচয়পত্রটি সহায়ক ভূমিকা পালন করবে বলেও জানান তিনি।

রোহিঙ্গাদের প্রশ্নের জবাবে পরিসংখ্যান কর্মকর্তা ওয়াহিদুর রহমান বলেন, শুমারি কার্যক্রম জাতিসংঘের সার্বিক তত্ত্বাবধানে হচ্ছে। তাতে সন্দেহের কোন অবকাশ নেই। সকলকে শুমারিতে অন্তর্ভুক্ত হতে হবে। এ সময় তিনি যে যার অবস্থান থেকে সরকারের এ উদ্যোগকে সফল করার আহ্বান জানান।

Rohinga

সভায় বক্তব্য রাখেন আরাকানী রোহিঙ্গা শরনার্থী কল্যাণ পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার শাহ, উখিয়া উপজেলা শুমারি সমন্বয়কারী রাসেল উদ্দিন, ক্যাম্প চেয়ারম্যান আবু ছিদ্দিক প্রমুখ। মতবিনিময় সভায় মসজিদের খতিব মাওলানা মোহাম্মদ হোসাইন, সিরাজুল ইসলাম, নেজাম উদ্দিন, মনিরুজ্জামানসহ স্থানীয় মান্যগণ্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে আরাকানী রোহিঙ্গা শরনার্থী কল্যাণ পরিষদ এর পক্ষ থেকে জানানো হয়, দীর্ঘদিন যাবৎ বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের নিয়ে একটি রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক-সাংস্কৃতিক এমনকি আন্তর্জাতিক জটিলতা অতিক্রম করছে। ‘রোহিঙ্গা’ ইস্যুটি দীর্ঘদিন অমীমাংসিত থাকায় বাংলাদেশ সরকারও বেকায়দায়। এটির সঠিক সুরাহা প্রয়োজন। এজন্য সম্মিলিত উদ্যোগ ও আন্তরিকতা দরকার।

বাংলাদেশে অবস্থানরত আরাকানী রোহিঙ্গাদের সংগঠন ‘আরাকান রোহিঙ্গা শরণার্থী কল্যাণ পরিষদ’ অনিবন্ধিত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সুশৃঙ্খল ও নিরাপদ রাখতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। বাংলাদেশের প্রচলিত নিয়ম কানুন মেনে চলার তাগিদ, বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শনের মনোভাব সৃষ্টি, মৌলবাদ জঙ্গিবাদ অসম্প্রদায়িক উজ্জীবিত একটি নিরাপদ রোহিঙ্গা সমাজ বিনির্মাণের চেষ্টা করছে তারা।

নিবন্ধিত শরণার্থীর বাইরে দুই লক্ষাধিক শরণার্থী অনিবন্ধিত অবস্থায় বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে মানবেতর ও নিয়ন্ত্রণহীন জীবনযাপন করছে। তাদের মধ্যে কেউ কেউ আত্মপরিচয় লুকিয়ে নিজ বাসভূমিতে ফিরে যাওয়ার স্বপ্ন হারিয়ে বাংলাদেশে স্থিত হওয়া অর্থাৎ বাংলাদেশের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হওয়ার চেষ্টা করছে। কেউ সুবিধাবাদী গোষ্ঠীর ইন্ধনে বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজে জড়িয়ে পড়ছে, আবার কেউ কেউ উগ্র মৌলবাদী গোষ্ঠীর দ্বারা প্রভাবিত হয়ে বিভ্রান্তির পথে পা বাড়াচ্ছে।

এ অবস্থায় বাংলাদেশ সরকার সঠিক ও সময়োপযোগী পদক্ষেপ নেয়ায় তারা উৎসাহিত, আনন্দিত। এ শুমারির ফলে তাদের প্রকৃত সংখ্যা এবং অবস্থা নির্মিত হবে, আত্মপরিচয় লুকানোর মতো আত্মবিনাশী ষড়যন্ত্র বন্ধ হবে। যা রোহিঙ্গাদের ভাগ্য নির্ধারণে সমস্ত অস্পষ্টতা দূর করবে বলে তারা মনে করেন।

সায়ীদ আলমগীর/এসএস/এমএস