ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে নিত্যসঙ্গী ৮ কিমিতে যানজট

রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) | প্রকাশিত: ০৩:৪০ পিএম, ০৫ আগস্ট ২০২২

ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের রূপগঞ্জ অংশে আট কিলোমিটার এলাকায় প্রতিদিন যানজট লেগে থাকে। যানজটে শাখা সড়কগুলোতেও ধীরগতি দেখা দেয়। ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকে বিভিন্ন যানবাহনের সঙ্গে অ্যাম্বুলেন্সও।

পথচারী, যাত্রীসাধারণ ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ভুলতা-গোলাকান্দাইল এলাকায় ফ্লাইওভার হওয়ায় সেখানে এখন আর যানজট সৃষ্টি হচ্ছে না। তবে বরপা, রূপসী ও বরাব বাসস্ট্যান্ড থেকে প্রায় প্রতিদিন থেমে থেমে যান চলাচল করছে। মাঝেমধ্যে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে।

বরপা স্ট্যান্ড থেকেই যানজটের সূত্রপাত বেশি হচ্ছে। বরপাতে যান চলাচলে একটু এদিক সেদিক হলেই সৃষ্টি হচ্ছে জটের আর মুহূর্তেই তীব্র আকার ধারণ করে তা কাঁচপুর থেকে ভুলতা গাউছিয়া পর্যন্ত প্রসারিত হচ্ছে।

এদিকে রূপসী ও বরাব বাসস্ট্যান্ডেও রিকশা, লেগুনা ইজিবাইকের অবাধ বিচরণ, মহাসড়কের বাসস্ট্যান্ড ও শাখা রোডে গাড়ি ওঠা-নামাসহ নানা কারণে যান বাহনের ধীর গতি কিংবা যানজট লেগেই থাকে। বরপা বাসস্ট্যান্ডের জট কয়েক মিনিট স্থায়িত্ব পেলেই রূপসী ও বরাব যুক্ত হয়ে এদিকে কাঁচপুর অন্যদিকে ভুলতা গাউছিয়া পর্যন্ত আট কিলোমিটারে কখনো ধীরগতি আবার কখনো থেমে থেমে যান চলাচল করছে।

jagonews24

মহাসড়কের রূপগঞ্জ অংশে যানজটের নেপথ্যে রয়েছে বরপা বাসস্ট্যান্ড। বরপা বাসস্ট্যান্ডে বরপা-মহজমপুর সড়কের মুখে ১০০ গজের ভেতর ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের প্রবেশমুখ বন্ধ করে গড়ে উঠেছে চারটি স্ট্যান্ড। এখানে মহাসড়কের লিংক রোডের পূর্বপাশে একাংশ দখল করে বরপা থেকে যাত্রাবাড়ী যাতায়াতকারী গ্রিনবাংলা পরিবহনের স্ট্যান্ড, মহাসড়কের লিংক রোডের পশ্চিম পাশে লেগুনাস্ট্যান্ড, বরপা-মহজম সড়কের মুখে দুপাশ দখল করে গড়ে উঠেছে ইজিবাইক স্ট্যান্ড। এছাড়া বিভিন্ন পরিবহনের স্টপেজের কারণ তো রয়েছেই।

অন্যদিকে বরপাতে মূল স্টেশনের এক পাশে রয়েছে একটি হাই স্কুল। স্কুলে ছাত্র-ছাত্রী প্রবেশ এবং বাহিরের সময় মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ করে পারাপার করা হয়। স্ট্যান্ডের ২০০ গজ পূর্ব দিকে রয়েছে অন্তিম নিটিং ডাইং নামে একটি শিল্পপ্রতিষ্ঠান। তাদের শ্রমিক পারাপারেও মহাসড়ক বন্ধ করে দেওয়া হয়। ব্যস্ততম মহাসড়কের একটি স্ট্যান্ডের ৩০০ গজের ভেতরে পাঁচটি স্ট্যান্ডের যানবাহনের চাপ, লিংক রোডে যানবাহন ওঠা-নামা, শিল্প কারখানার শ্রমিক ও স্কুলের ছাত্র-ছাত্রী পারাপারসহ সড়কে অতিরিক্ত চাপে একটু এদিক সেদিক হলেই যানজটের সৃষ্টি হয়ে হরমাশোই কাঁচপুর থেকে ভুলতা গাউছিয়া পর্যন্ত প্রায় ৮-৯ কিলোমিটারে বিস্তৃত হয়ে যানজট তৈরি হচ্ছে। মাঝে মধ্যে দিনে জট লেগে রাত গড়াচ্ছে। রাস্তার দুই দিকেই যানবাহনের সারি দীর্ঘ হয়ে মাইলের পর মাইল বিস্তৃত হচ্ছে।

এছাড়া যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং, অবৈধ বেবি, অটো ও লেগুনা স্টেশন, অবৈধভাবে গড়ে ওঠা ফুটপাত ও স্থাপনা, ফিটনেসবিহীন গাড়ি বিকল হওয়া, নিয়ম ভেঙে গাড়ি চালানো, সড়ক প্রশস্ত কম, ট্রাফিক আইন না মানা, নিয়ম ভেঙে ওভারটেকিংসহ নানা কারণে প্রতিনিয়ত যানজট হচ্ছে।

যাত্রাবাড়ী এলাকার মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের শিক্ষার্থী সাদিয়া বলেন, বরপা থেকে সকাল ৮টায় রওয়ানা দিয়েও অনেক সময় কলেজ টাইমে পৌঁছাতে পারি না। অন্যদিকে আসার সময় যানজটে পড়ে কোনো কোনো দিন সন্ধ্যা হয়ে যায়। যানজট সমস্যা থেকে মুক্তি চাই।

নাসির উদ্দিন নামে এক বাস যাত্রী বলেন, ভুলতা গাউছিয়া মার্কেটে একটি দোকান রয়েছে। ব্যবসায়ীক কাজে সপ্তাহে পাঁচদিন রাজধানী ঢাকায় যাতায়াত করতে হয়। বরপা থেকেই যানজটের শুরু হয় প্রায়ই সেটা ভুলতা গাউছিয়া থেকে কাঁচপুর পর্যন্ত জট লেগে থাকে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা আমাদের ভোগান্তি পোহাতে হয়।

jagonews24

উপজেলার ভুলতা এলাকার এক পরিবহন ব্যবসায়ী মনির হোসেন বলেন, গাউছিয়া থেকে গুলিস্তান কাউন্টার সার্ভিসে আমার দুটি মিনিবাস চলাচল করে। প্রতিদিন একটা গাড়িতে ৮ থেকে ১০টা ট্রিপ হওয়ার কথা থাকলেও যানজটের কারণে পাঁচ থেকে ছয় ট্রিপ হয়। এতে আমি ব্যবসায়ীকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত।

তিনি আরও বলেন, বরপা ও রূপসী স্ট্যান্ডের ইজিবাইক, লেগুনা, রিকশাসহ লোকাল স্ট্যান্ড অন্য জায়গায় সরিয়ে মহাসড়কে যথাযথ ট্রাফিক আইন প্রয়োগ করলে রূপগঞ্জ অংশে যানজট অনেক কমে যাবে।

কিশোরগঞ্জগামী যাতায়াত পরিবহনের চালক রবিউল মিয়া জাগো নিউজকে বলেন, বরপা, রূপসী, ও বরাব বাসস্ট্যান্ড থেকে প্রতিদিনই যানজটের সৃষ্টি হয়। সায়েদাবাদ থেকে কিশোরগঞ্জ ৩ ঘণ্টায় যেতে পারি। অথচ ভুলতা গাউছিয়া আসতে সময় লেগে যায় দেড় থেকে দুই ঘণ্টা। মহাসড়কের রূপগঞ্জের কাঁচপুর থেকে ভুলতা পর্যন্ত অংশে প্রতিদিনই লেগে থাকে যানজট। তবে বরপা থেকেই বেশি যানজটের সৃষ্টি হয়।

এ বিষয়ে ট্রাফিক পুলিশের ইন্সপেক্টর (টিআই) ফারুক জাগো নিউজকে বলেন, বরপা ও রূপসী স্ট্যান্ডে চতুরমুখী চাপে মাঝে-মধ্যে যানজট সৃষ্টি হয়। তবে আমাদের কর্মকর্তারা যানজট নিরসনে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। ইজিবাইক, টমটমসহ যে সব যানবাহন আইন অমান্য করছে সে সব যানবাহনকে সাজা দিয়ে যানজট সমস্যা সমাধানে কাজ করছে। যানজট তৈরি হওয়া স্পটগুলো নিয়ন্ত্রণে আমরা কাজ করছি।

এসজে/আরএইচ/এএসএম