মিরসরাইয়ে ট্রেন দুর্ঘটনা
নিহতদের সবাই কোচিং সেন্টারের শিক্ষক-ছাত্র
মাইক্রোবাসে করে চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে ঘুরতে গিয়ে ট্রেন দুর্ঘটনার শিকার সবাই হাটহাজারী উপজেলার আরএনজে নামের একটি কোচিং সেন্টারের শিক্ষক-ছাত্র। তারা হাটহাজারী উপজেলা থেকে শুক্রবার (২৯ জুলাই) ভোরে রওনা দেন।
রওনা দেওয়ার আগে যুগিরহাটে কোচিং সেন্টারের সামনে একটি গ্রুপ ছবি তোলেন। এদের মধ্যে ১১ জন ঘটনাস্থলে মারা গেছেন। আহতরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
ঘুরতে আসা গ্রুপে ছিলো এসএসসি পরীক্ষার্থী হিশাম, আয়াত, শওকত, মারুফ, তাসমির, হাসান এবং প্রথমবর্ষের ছাত্র ইমন, রিদয় ও মাহিন। কোচিং সেন্টারের শিক্ষকদের মধ্যে ছিলেন জিসান, রেদোয়ান, সজীব ও রাকিব। তারা সবাই পূর্ব খৈয়াছড়া গ্রামের ঝরনা এলাকা ঘুরতে আসেন।
হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহীদুল আলম এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে কোচিং সেন্টারের ৯ জন ছাত্র ও চারজন শিক্ষক রয়েছেন। আহতদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
মাইক্রোবাসটি রেললাইনের লেভেল ক্রসিংয়ে উঠে পড়লে ট্রেনের ধাক্কায় দুমড়ে-মুচড়ে যায়। এতে মাইক্রোবাসে থাকা ১১ জন যাত্রী ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান।
শুক্রবার (২৯ জুলাই) দুপুর দেড়টার দিকে উপজেলার খৈয়াছড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। হতাহতদের সবার বাড়ি চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার আমান বাজারে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, মাইক্রোবাসে ১৪ জন যাত্রী ছিলেন। তারা খৈয়াছড়া ঝরনা দেখে ফিরছিলেন। এ সময় ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা চট্টগ্রামগামী মহানগর প্রভাতীর ধাক্কায় মাইক্রোবাসের ১১ যাত্রী ঘটনাস্থলেই নিহত হন।
পূর্ব রেলের বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা আনসার আলী জানান, ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী মহানগর প্রভাতী ওই লেভেল ক্রসিং পার হওয়ার মুখে খৈয়াছড়াগামী পর্যটকবাহী মাইক্রোবাসটি লাইনে উঠে পড়ে। সংঘর্ষের পর মাইক্রোবাসটি ট্রেনের ইঞ্জিনের সঙ্গে আটকে যায়। ওই অবস্থায় মাইক্রোবাসটিকে বেশ খানিকটা পথ ছেঁচড়ে নিয়ে থামে ট্রেন।
আলমগীর নামের একজন প্রত্যক্ষদর্শী জাগো নিউজকে জানান, লেভেল ক্রসিংয়ে উঠে পড়া মাইক্রোবাসটিকে ধাক্কা দিয়ে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে বড়তাকিয়া স্টেশনের কাছে নিয়ে যায় ট্রেন।
রেল কর্মকর্তা আনসার আলী বলেন, ট্রেন আসায় গেটম্যান সাদ্দাম বাঁশ ফেলেছিলেন। কিন্তু মাইক্রোবাসটি বাঁশ ঠেলে ক্রসিংয়ে উঠে পড়ে।
তবে দুর্ঘটনার সময় গেটম্যান ছিলেন না বলে জানান মফিজুল হক নামের একজন প্রত্যক্ষদর্শী। তিনি বলেন, ঘটনার সময় জুমার নামাজ পড়তে মসজিদে গিয়েছিলেন গেটম্যান।
মিরসরাইয়ের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মিনহাজুর রহমান জানান, হাটহাজারী থেকে আসা ওই মাইক্রোবাসে মোট ১৪ জন ছিলেন। তাদের মধ্যে ১১ জন ঘটনাস্থলেই মারা যান। বাকিদের চট্টগ্রাম মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে।
এসআর/এএসএম