‘ফাতেমা’ নাম পেল সেই নবজাতক, ঠাঁই হচ্ছে শিশু নিবাসে
ময়মনসিংহের ত্রিশালে সড়কে মায়ের পেট ফেটে জন্ম নেওয়া নবজাতককে সরকারি তত্ত্বাবধানে শিশু নিবাসে পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।
শুক্রবার (২৯ জুলাই) সকাল ১০টার দিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে ঢাকা আজিমপুর শিশু নিবাসে পাঠানো হবে শিশুটিকে।
জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. ওয়ালীউল্লাহ জাগো নিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, সুবিধাবঞ্চিত শিশু হিসেবে শিশু কল্যাণ বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ঢাকা আজিমপুর শিশু নিবাসে পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে, আমরা কারোর তত্ত্বাবধানে নয়, সম্পূর্ণ সরকারি তত্ত্বাবধানে শিশুটিকে শিশু নিবাসে পাঠানো হচ্ছে।
শিশুটি শিশু কল্যাণ সভার সদস্য। পরিবারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তার নাম ফাতেমা রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে বলেও জানান সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক বলেন, শিশুটিকে লালন-পালনের জন্য শিশু কল্যাণ সভার সদস্যদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সমাজসেবা অধিদপ্তর পরিচালিত ঢাকার আজিমপুরের শিশু নিবাসে পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ বিষয়ে পরিবারের সদস্যদের মতামত নেওয়া হয়েছে।
নবজাতক শিশুটির দাদা মোস্তাফিজুর রহমান বাবলু বলেন, প্রশাসন যে উদ্যোগ নিয়েছে এতে আমরা খুশি। দুই বছর লালন-পালন শেষে ফাতেমা আবারও আমাদের মাঝে ফিরে আসবে।
তিনি আরও বলেন, পরিবারের সবার ইচ্ছা ছিল শিশুটির নাম ‘ফাতেমা’ রাখা হবে। জেলা প্রশাসক এবং কমিটির সদস্যরা সবাই মিলে ‘ফাতেমা’ নাম রাখায় আমরা খুশি।
শিশুটির দাদা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, প্রশাসন থেকে আমাকে আশ্বস্ত করা হয়েছে, যে আমাদের থাকার জন্য দুই রুমবিশিষ্ট একটি হাফ বিল্ডিং এবং অপর দুই শিশু জান্নাত ও এবাদতের লেখাপড়াসহ সার্বিক সহায়তা করা হবে।
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচারক ওয়ায়েজ উদ্দিন ফরাজি জাগো নিউজকে বলেন, সড়কে জন্ম নেওয়ার পর ওই নবজাতক নগরীর লাবিব হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিল। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে গত সোমবার (১৮ জুলাই) রাতে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনা হলে তার জন্ডিস, ঘাড়ে এবং ডান হাতে ফ্র্যাকচার ধরা পড়ে। এ ঘটনার পরদিন মঙ্গলবার (১৯ জুলাই) পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট মেডিকেল বোর্ড গঠন করে হাসপাতালের এনআইসিইউ বিভাগে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে নবজাতকের জন্ডিস ভালো হলেও বুকের ও ডান হাতের হাড়ের ফ্র্যাকচার পুরোপুরি ভালো হতে আরও কয়েকদিন লাগতে পারে।
গত ১৬ জুলাই দুপুরের পরে উপজেলার রাইমনি গ্রামের জাহাঙ্গীর আলম (৪০) তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী রত্না আক্তারকে (৩০) আল্ট্রাসনোগ্রাফি করাতে ত্রিশালে আসেন। এ সময় তাদের সঙ্গে মেয়ে সানজিদা আক্তারও (৬) ছিল। তারা পৌর শহরের খান ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সামনে রাস্তা পারাপারের সময় ময়মনসিংহগামী একটি ট্রাক তাদের চাপা দেয়। এতে জাহাঙ্গীর আলম, স্ত্রী রত্না এবং মেয়ে তিনজনেরই মৃত্যু হয়। এ সময় ট্রাকচাপায় রত্নার পেট ফেটে কন্যাশিশুটির জন্ম হয়।
মঞ্জুরুল ইসলাম/এসআর