পদ্মা সেতুর পিলার ঘেঁষে ছবি-সেলফি তোলার হিড়িক
রাত পেরোলেই উদ্বোধন হবে দেশের বহুল প্রত্যাশিত পদ্মা সেতু। সেতুর এ উদ্বোধন উপলক্ষে সারাদেশে উৎসবের আমেজ। বিশেষ করে পদ্মাপাড়ের বাসিন্দাদের যেন আনন্দের সীমা নেই।
শুক্রবার (২৪ জুন) বিকেলে মুন্সিগঞ্জের মাওয়া চৌড়াস্তা এলাকায় সরেজমিন দেখা যায়, পদ্মা সেতুর নিচে মানুষজনের ভিড় জমেছে। সেতুর পিলার ঘেঁষে ছবি, সেলফি তোলার হিড়িক পড়েছে। ছবি তুলে তারা কালের সাক্ষী হচ্ছেন।
ঢাকা কলেজের ছাত্র জাকারিয়া জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমার বাড়ি পটুয়াখালী এলাকায়। পটুয়াখালী থেকে ঢাকা আসতে আমার পুরো দিন পার হয়ে যায়। পদ্মা সেতু হওয়ার কারণে এখন আমাদের অনেক সময় বেঁচে যাবে। সেইসঙ্গে ঝুঁকিটাও অনেক কমে যাবে।’
তিনি বলেন, ‘এই পদ্মা সেতুর জন্য সব কৃতিত্ব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। বাঙালি জাতি তার ঋণ কোনোদিন শোধ করতে পারবে না।’
আসমা আক্তার নামের এক দর্শনার্থী বলেন, ‘আমাদের অনেকদিনের স্বপ্ন ছিল এই পদ্মা সেতু। আমাদের সেই স্বপ্ন পূরণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী। তাই এ রাস্তা দিয়ে যাওয়ার পথে পদ্মা সেতুর পিলারের সঙ্গে ছবি তুলে কালের সাক্ষী হলাম।’
শনিবার (২৫ জুন) উদ্বোধন করা হবে বহুল প্রত্যাশিত পদ্মা সেতুর সড়ক পথ। পরেরদিন ভোর ৬টা থেকে যানচলাচল শুরু হবে।
২০০১ সালের ৪ জুলাই স্বপ্নের পদ্মা সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২০১৪ সালের নভেম্বরে নির্মাণকাজ শুরু হয়। দুই স্তরবিশিষ্ট স্টিল ও কংক্রিট নির্মিত ট্রাসের এ সেতুর ওপরের স্তরে চার লেনের সড়ক পথ এবং নিচের স্তরে একটি একক রেলপথ রয়েছে।
পদ্মা-ব্রহ্মপুত্র-মেঘনা নদীর অববাহিকায় ৪২টি পিলার ও ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের ৪১টি স্প্যানের মাধ্যমে মূল অবকাঠামো তৈরি করা হয়। সেতুটির দৈর্ঘ্য ৬.১৫০ কিলোমিটার এবং প্রস্থ ১৮.১০ মিটার।
পদ্মা সেতু নির্মাণে খরচ হয়েছে ৩০ হাজার কোটি টাকা। এসব খরচের মধ্যে রয়েছে সেতুর অবকাঠামো তৈরি, নদী শাসন, সংযোগ সড়ক, ভূমি অধিগ্রহণ, পুনর্বাসন ও পরিবেশ, বেতন-ভাতা ইত্যাদি।
বাংলাদেশের অর্থ বিভাগের সঙ্গে সেতু বিভাগের চুক্তি অনুযায়ী, সেতু নির্মাণে ২৯ হাজার ৮৯৩ কোটি টাকা ঋণ দেয় সরকার। ১ শতাংশ সুদ হারে ৩৫ বছরের মধ্যে সেটি পরিশোধ করবে সেতু কর্তৃপক্ষ।
৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার স্বপ্নের কাঠামো নির্মাণের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড।
মোবাশ্বির শ্রাবণ/এসআর/এএসএম