ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

পদ্মা সেতু: শরীয়তপুরের মাছচাষিদের ৫০০ কোটি টাকা ব্যবসার স্বপ্ন

ছগির হোসেন | শরীয়তপুর | প্রকাশিত: ১২:২৩ পিএম, ১১ জুন ২০২২

অপেক্ষার প্রহর গুনছেন শরীয়তপুরের মৎস্য খামারিরা। আগে যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে এ অঞ্চলের ব্যবসায়ীদের মাছ ঢাকায় নেওয়া ছিল কষ্টকর ও ব্যয়বহুল। কিন্তু পদ্মা সেতু চালু হলে দেশের অন্যতম মৎস্য উৎপাদনকারী শরীয়তপুর জেলার মৎস্য খাতের সম্ভাবনার দুয়ার খুলে যাবে।

আগামীতে জেলায় এ মৎস্য ব্যবসা প্রায় ৫০০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা খামারি ও মৎস্য বিভাগের। এতে মৎস্য উৎপাদনকারীরা শুধু অর্থনৈতিকভাবেই লাভবান হবেন না তৈরি হবে অনেক নতুন উদ্যোক্তা, সৃষ্টি হবে ব্যাপক কর্মসংস্থানের সুযোগ।

জেলার খামারি ও মৎস্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, জেলার ছয়টি উপজেলা থেকেই মাছ সড়ক পথে নিয়ে যাওয়া হয় ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে। কিন্তু ফেরিঘাটে যানজটে পড়ে যথাসময়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে না পারায় নষ্ট হয় অনেক মাছ, কমে যায় দামও। পদ্মা সেতু উদ্বোধন হলে আমুল পরিবর্তন আসবে মৎস্য ব্যবসায়। বাড়বে মাছের দাম ও সাশ্রয় হবে পরিবহন খরচ। যার সুফল পাবেন পাইকার থেকে শুরু করে প্রান্তিক জেলেরাও।

বর্তমানে ঢাকা, চাঁদপুর, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, কুমিল্লা ও চট্টগ্রামসহ অন্যান্য বাজারে বছরে প্রায় ৩১৫ কোটি টাকার মাছ বিক্রি হচ্ছে। পদ্মা সেতু চালু হলে এরে পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়ে ৫০০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা খামারিদের।

Fish-(3).jpg

শরীয়তপুর সদরের মৎস্য খামারি মো. শাহীন মাদবরসহ অন্যান্য খামারিরা জাগো নিউজকে জানান, রাজধানী ঢাকা থেকে স্থানভেদে শরীয়তপুরের দূরত্ব ৭৩ কিলোমিটার। এরমধ্যে পদ্মা নদী থাকায় ফেরি পার হয়ে ঢাকায় যেতে অনেক সময় লাগে ও দুর্ভোগ পোহাতে হয়। এ কারণে শরীয়তপুরের মৎস্য খামারিরা তাদের উৎপাদিত মাছ কাঙ্ক্ষিত পরিমাণে ঢাকায় বিক্রি করতে পারছিলেন না। তাই তারা চাঁদপুর, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, কুমিল্লা ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন বাজারে মাছ বিক্রি করে আসছিলেন।

বর্তমানে শরীয়তপুর থেকে ওই বাজারগুলোতে প্রতিদিন গড়ে ৭০ মেট্রিক টন মাছ পাঠানো হয়। প্রতি কেজি ২৫০ থেকে ৪০০ টাকা দরে ওই মাছের বাজারমূল্য এক কোটি ৭৫ লাখ টাকা। বছরে বিক্রি দাঁড়ায় ১২৬ লাখ মেট্রিক টন। যার বাজারমূল্য অন্তত ৩১৫ কোটি টাকা। তবে পদ্মা সেতু চালু হলে উৎপাদন বেড়ে বিক্রি ৫০০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে।

শরীয়তপুরের ভোজেশ্বর ইউনিয়নের পাচক গ্রামের মৎস্য খামারি শহিদুল সিকদার জাগো নিউজকে বলেন, ফেরিঘাটের বিড়ম্বনার কারণে আমরা ঢাকায় মাছ পাঠাতে পারছি না। তাই চাঁদপুরে পাঠাই। পদ্মা সেতু চালু হলে আমাদের এ অঞ্চলের মাছচাষিরা ঢাকার বাজার ধরতে পারবেন। এতে করে পরিবহন ব্যয় কমবে ও দাম বেশি পাওয়া যাবে।

auto

নড়িয়া পৌরসভার লোনসিং গ্রামের মাছের খামারি শহিদুল ইসলাম বাবু রাড়ী জাগো নিউজকে বলেন, ঢাকার বাজারে মাছ বিক্রি করতে পারলে আমরা বেশি লাভবান হবো। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর ঢাকায় মাছ পাঠানো সহজ হবে। ফলে এ খাতে বিনিয়োগ অনেকগুণ বাড়বে।

শরীয়তপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা প্রণব কুমার কর্মকার জাগো নিউজকে বলেন, প্রতিবছর জেলায় মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিন্তু ভালো বাজারের অভাবে খামারিরা খুব বেশি লাভের মুখ দেখতে পারছেন না। পদ্মা সেতু চালু হলে খামারিরা খুব সহজেই ঢাকার বাজার দখল করতে পারবেন।

শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক মো. পারভেজ হাসান জাগো নিউজকে বলেন, পদ্মা সেতুকে ঘিরে শরীয়তপুরে বিপুল সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। এই সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে জেলায় ব্যাপক শিল্পায়নের প্রস্তুতি চলছে। পদ্মা সেতু চালু হলে সম্ভাবনাময় খাত মৎস্য, গবাদিপশু, পরিবহন, শিক্ষা-সংস্কৃতির ব্যাপক উন্নয়ন হবে।

এফএ/এমএস