শেরপুরে বাড়ছে নদ-নদীর পানি
চারদিনের টানা বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে মহারশী নদীর পানি বেড়ে শেরপুরের দুই উপজেলার ৪০ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ভেসে গেছে দেড় শতাধিক মাছের ঘের। দ্রুত সময়ের মধ্যে সহায়তা দেওয়ার বিষয়ে আশ্বস্ত করেছে জেলা প্রশাসন।
গতকাল বৃহস্পতিবার শেরপুরের ঝিনাইগাতী ও নালিতাবাড়ি উপজেলার অন্তত ৪০ গ্রাম প্লাবিত হয়। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়ে অন্তত ১০ হাজার মানুষ। পাহাড়ি ঢলের কারণে শেরপুরে পুরাতন ব্রহ্মপুত্রসহ সব নদ-নদীর পানি বেড়েছে। মহারশী নদীর পানির তোড়ে শহর রক্ষা বাঁধ ভেঙে দেড় শতাধিক মাছের ঘের ভেসে গেছে। গবাদি পশু, পরিবারের শিশু ও বৃদ্ধদের নিয়ে খাদ্য সংকটে রয়েছে নদী তীরবর্তী এলাকার মানুষ।
স্থানীয়রা বলছেন, প্রতি বছরই ঝিনাইগাতীতে শহর রক্ষা বাঁধ ভেঙে পুরো উপজেলা প্লাবিত হয়। ক্ষতিগ্রস্ত হয় আবাদি ফসল, মাছের ঘের, বাড়িঘর ও মানবসম্পদ। দ্রুত সময়ের মধ্যে এ সমস্যা সমাধানের দাবি জানান স্থানীয়রা।
ঝিনাইগাতী বাজারের ব্যবসায়ী মো. আবু বকর জাগো নিউজকে বলেন, আমি এ বাজারে অনেকদিন থেকে ব্যবসা করছি। প্রতি বছর পাহাড়ি ঢল এলেই মহারশি নদীর পাড় ভেঙে বাজারে পানি ঢুকে। এতে আমাদের মালামাল ক্ষতি হয়। আশেপাশের বাড়িঘরে পানি ঢুকে। আমরা মহারশি নদীতে একটি শক্ত বাঁধ নির্মাণের দাবি করে এলেও এটি এখনো বাস্তবায়িত হয়নি। যতোদিন বাঁধ না হবে, ততোদিন আমাদের এরকম ক্ষতি হতেই থাকবে।
সদর ইউনিয়নের বাসিন্দা মো. আব্দুল করিম বলেন, সকালে ওঠেই দেখি বাড়ির ভেতর পানি ঢুকছে। আহমেদনগর এলাকার গৃহবধূ আছিয়া বেগম বলেন, বাড়ির মধ্যে পানি ঢুকে উঠানে গর্ত হয়ে গেছে। এখন বাড়ির ভেতরে যাবার সাহসও পাইতাছি না। কিছু মালামাল রাতে সরানো হইছে। কিছু এখনো ঘরের ভেতর রয়ে গেছে। চুলায় পানি ওঠার কারণে রান্নাবান্নাও বন্ধ। চিড়া-মুড়ি খাইয়া দিন কাটাচ্ছি।
এ বিষয়ে সদর ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্য জাহিদুল হক মনির বলেন, মহারশি নদীর পানি বেড়ে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ঝিনাইগাতী বাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় পানি ওঠতে শুরু করেছে। এতে ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। আমরা বারবার মহারশী নদীর বেড়িবাঁধ নির্মাণের দাবি করে এলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিষয়টি আমলে নিচ্ছেন না।
এদিকে প্লাবিত এলাকা পরিদর্শন করে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের দ্রুত সহায়তা দেওয়ার আশ্বাসের পাশাপাশি বাঁধ পুনর্নির্মাণে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন জেলা প্রশাসক সাহেলা আক্তার। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, এ বছরই স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
ইমরান হাসান রাব্বী/এমকেআর